Happy Birthday Dev: `চ্যালেঞ্জ` নিয়ে বাংলা সিনেমার `চাঁদের পাহাড়` ছোঁয়া `চ্যাম্প`, জন্মদিনে দেব
মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে বার্থডে সেলিব্রেশন
সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে, স্ট্রাগলিং অ্যাক্টর, অভিনেতা, সুপারস্টার, প্রযোজক, সাংসদ...না এটা কোনও স্বপ্ন নয়, ছবির চিত্রনাট্যও নয়, এটা বাস্তবে কারোর জীবনকাহিনি। আকাশছোঁয়া তাঁর সাফল্য কিন্তু তাঁর ইমেজ এখনও পাশের বাড়ির ছেলের মতোই। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে তাঁর জন্মদিন, একেবারে দিনের মহিমা সঙ্গে নিয়েই চলেন তিনি। সাধারণ মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ। পর্দার নায়ক বাস্তবের মাটিতে অনেকেরই জীবনের 'Clause' হীন সান্তা হয়ে উঠেছেন, এসব নিয়ে অবশ্য় বিশেষ অহংকার নেই তাঁর, কারণ তাঁর অহংকার তাঁর সিনেমা, তাঁর ফ্যানেরা। তিনি বাংলা সিনেমার 'চ্যাম্প', বক্সঅফিসের 'গোলন্দাজ', দর্শকের মন ভালো করা 'টনিক', তিনি দেব (Dev)।
স্বপ্নের শুরু ছিল আরবসাগরের তীর থেকে। বাবার ক্যাটারিং সার্ভিস, মুম্বইয়ের ফিল্ম স্টুডিওতে খাবার সরবরাহ করতেন তিনি। সেই সূত্রেই নানা পাটেকরের 'প্রহার' ছবির সেটে গিয়েছিলেন তিনি। সেই প্রথমবার ফিল্মের সেটে পা রাখা বর্তমানের সুপারস্টারের। সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর রূপোলি পর্দার স্বপ্ন দেখার শুরু। প্রথমে বলিউডেই নিজের পায়ের জমি খুঁজতে শুরু করেছিলেন দীপক অধিকারী। অবশেষে তিনি প্রথম ব্রেক পান বাংলা ছবিতে রচনা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের বিপরীতে। 'অগ্নিশপথ' সে অর্থে ব্যবসা করতে পারেনি বক্সঅফিসে। এরপরই রবি কিনাগীর 'আই লাভ ইউ' ছবিতে নজরে আসেন দেব।
ছবি ভালো ব্যবসা করা সত্ত্বেও আগামী ১৪ মাস কোনও ছবির অফার পাননি। কিন্তু সিনেমা যাঁর প্যাশন, বক্সঅফিসে রাজ করা যাঁর ভবিষ্যত তাঁকে আটকায় কে। ফিরে এলেন তিনি, এবার এলেন দেখলেন জয় করলেন, কান্ডারী রাজ চক্রবর্তী। 'চ্যালেঞ্জ' ছুঁড়ে দিলেন টলিউডের বর্তমান নায়কদের। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দেবকে। একের পর এক সাফল্য আসে দেবের ঝুলিতে। বাংলা সিনেমার একছত্র 'অধিকারী' হয়ে ওঠেন তিনি। তবে শুধু কমাশিয়াল সিনেমা নয়, অন্যধারার ছবিতেও তিনি নজর কেড়েছেন। কেরিয়ারে টপে থেকেই ছক ভেঙে বেরোতে চেষ্টা করেন দেব। আউট অ্যান্ড আউট কমারশিয়াল ছবি থেকে বেরিয়ে অন্যধারার ছবি 'লে ছক্কা'তে নজর কাড়েন তিনি।
সিনেমার প্রতি তাঁর ডেডিকেশন মুগ্ধ করে সিনেপ্রেমীদের। নিজের পছন্দ মতো ছবি তৈরি করার জন্য নিজের প্রযোজনা সংস্থা তৈরি করেন দেব। 'ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন দেব', সে সময় ইন্ডাস্টির অনেকেই মনে করেছিলেন সে কথা। একের পর এক নানা ধরনের বিষয়ে ছবি তৈরি করে দেব প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁর অভিধানে 'হার' শব্দটাই নেই। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে দাঁড়ান অভিনেতা। প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হন দীপক অধিকারী। সম্প্রতি জি ২৪ ঘণ্টার আপনার রায় অনুষ্ঠানে দেব নিজেই বলেন যে, 'সে সময় ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই আমাকে রাজনীতিতে যেতে বারণ করেছিল। বলেছিল, সিনেমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আজ যখন ভাবছি ২০২৪ সালের ভোটে দাঁড়াব না আর, তখন তাঁরাই বলছে, রাজনীতি ছাড়িস না।' এমনই তাঁর করিশমা। দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনি। প্রকৃত অর্থে তিনি নেতা। আজ তাঁর মতোই রাজনৈতিক নেতা চায় ভারত।
আরও পড়ুন: Exclusive Dev: সাফল্যের দৌলতে 'ক্লাসডিফারেন্স'! বাবা-মার 'ইনসিকিউরিটি' কীভাবে সামালান দেব?
শনিবার দেবের জন্মদিনে সামিল তাঁর কাছের মানুষ ও ফ্যানেরা। মধ্যরাত থেকেই শুরু হয়েছে সেলিব্রেশন। তিন স্তরীয় সাদা রঙের কেক তাঁর উপরে সোনালি রঙে লেখা দেব। বান্ধবী রুক্মিনী, বাবা-মা ও তাঁর কাছের মানুষদের নিয়ে মধ্যরাতে কেক কাটলেন দেব। চলল পার্টি। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন টলিউডের তারকা থেকে শুরু করে তাঁর অনুরাগীরা।