নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতীয় টেলিভিশনের (Indian Television) ইতিহাসে বিনোদনের অন্য নাম ভারতের প্রথম স্যাটেলাইট চ্যানেল জি টিভি (Zee Tv)। বিনোদনের পৃথিবী ঘোরে তার নিজস্ব নিয়মে। মানুষের কাছে সেই দুনিয়ার গুরুত্ব কম নয়! গতে বাঁধা জীবনের ভিতর একচিলতে অবসর খুঁজে নিতে মানুষ এসে হাজির হয় এই বিনোদুনিয়ার সামনেই। সেই পৃথিবীর আলোছায়া তাই মানুষের রুচি, ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়েই বদলায়, নতুন নতুন রূপ নেয়। আর এই কাজটিই গত তিন দশক করে চলেছে জি টিভি (Zee Tv)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গত ৩০ বছরে জি টিভির হাত ধরে বদলেছে ভারতীয় দর্শকের চিন্তাধারা, তবে জি টিভি (Zee Tv) শুধু দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গিই বদলায়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে নিজেকেও।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

নয়ের দশক এল নানা পরিবর্তনের উত্তরীয় গায়ে জড়িয়ে। অর্থনীতির বদল ক্রমশ পালটে দিল সমাজের অবয়ব। সেই বদলানো সময়ের হৃদস্পন্দন টের পাওয়া চাট্টিখানি কথা ছিল না। মানুষের মন না বুঝলে তার মনের মতো বিনোদন উপহার দেওয়া সম্ভব ছিল না। পালটে যাওয়া সময়ের নাড়ি ছুঁয়ে এই কথাটি বুঝে নিয়েছিল জি টিভি (Zee Tv)। তাই বহুকাল থেকেই মানুষের মনে তার স্থান সবার উপরে। একদিকে সিরিয়ালে উঠে এল সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার সংকট, অন্যদিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অতীতের উপর পড়ল আলো। কথা বলে উঠল কিংবদন্তি। আবার একই সঙ্গে রিয়ালিটি শো (Reality Show) এবং এই জাতীয় নতুন ধারার অনুষ্ঠান দর্শককে দিল অপ্রত্যাশিত আস্বাদ। নতুন সময়ে নবরূপে বিনোদনের বিন্যাস মুহূর্তে বদলে দিয়েছিল জনরুচি। যে পথ ধরে বিনোদনের পৃথিবী পরবর্তীতে এগিয়েছে জি টিভি (Zee Tv) যে সেখানে ভগীরথের ভূমিকায়, তা বলাই বাহুল্য।


গত তিরিশ বছরে জি টিভিতে যে যে ধারাবাহিক সম্প্রচারিত হয়েছে তার হাত ধরে কখনও দর্শক পৌঁছে যায় তাঁর ছোটবেলায় কখনও আবার সেই সব স্মৃতি তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় যৌবনে। গ্রেসি সিং (Gracy Singh), আর মাধবন (R. Madhavan), বিদ্যা বালান (Vidya Balan) থেকে শুরু করে সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput) জি টিভির ধারাবাহিকের মাধ্য়মে বলিউডে পা রেখেছেন তাবড় তাবড় অভিনেতারা। 'আমানত' (Amanat) ধারাবাহিকে গ্রেসি সিং, 'বনেগি আপনা বাত'-এ (Banegi Apna Baat) আর মাধবন, 'হাম পাঁচ'(Hum Panch) ধারাবাহিকে বিদ্যা বালান মনোরঞ্জনে ভরিয়ে তুলেছিলেন দর্শকদের। তবে শুধু 'আমানত', 'বনেগি আপনা বাত' বা 'হাম পাঁচ' নয়, দর্শকদের পছন্দের তালিকা বেশ দীর্ঘ। সেখানে রয়েছে 'হসরতে'(Hasratein), 'দ্য জি হরর শো'(The Zee Horror Show), 'কসম সে'(Kasam Se), 'তারা' (Tara), 'পবিত্র রিস্তা'র (Pabitra Rista) মতো ধারাবাহিক, যা আজও দর্শকদের পছন্দের তালিকায় সপ্রতিভ। পবিত্র রিস্তা ধারাবাহিক থেকেই দর্শকের নজরে আসেন সুশান্ত সিং রাজপুত (Sushant Singh Rajput)।  তবে শুধু ধারাবাহিকই নয়, রিয়্যালিটি শোয়ের (Reality Show)) পথিকৃত জি টিভি। জি টিভির জনপ্রিয় গানের রিয়্যালিটি শো 'সা রে গা মা' (Sa Re Ga Ma) থেকেই বলিউডের যাত্রা শুরু করে সংগীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল (Shreya Ghoshal)। সোনু নিগমের (Sonu Nigam) সঞ্চালনায় সেই শো প্রথম থেকেই দর্শকের পছন্দের তালিকায় ছিল শীর্ষে। সোনু নিগমের পর সেই গুরুদায়িত্ব সামলান শান (Shaan)। আজও সেই শো সমান জনপ্রিয়। 


আরও পড়ুন : #DeshKaZee: 'শেয়ারহোল্ডারের মতো আচরণ করুক, মালিকের মতো নয়', Invesco-কে বার্তা সুভাষ চন্দ্রের


তবে এই জি টিভি-ই আজ সংকটের মুখে। সম্প্রতি Zee Entertainment (ZEEL) এর সঙ্গে Sony (SPNI) এর সংযুক্তিকরণকে স্বাগত জানিয়েছিল ইন্ডাস্ট্রি। খুশি ছিল শেয়ারবাজারও। নতুন চুক্তিতে আস্থা রেখেছিলেন শেয়ারহোল্ডাররাও। কিন্তু জি এন্টারটেইনমেন্টের বোর্ড পরিবর্তনে এবার বেঁকে বসে ইনভেসকো। জি গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. সুভাষ চন্দ্র বুধবার জি এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার  Invescoর বিদ্বেষপূর্ণ অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে এই সংস্থা অবৈধ উপায়ে কোম্পানিকে অধিগ্রহণ করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেছেন, Invescoর  উচিত বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা এবং আমেরিকার এই বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কোনও বিবাদ চান না তিনি। ড. চন্দ্র আরও বলেছেন, যে তার পুত্র পুনিত গোয়েঙ্কা, যিনি ZEEL-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (MD) এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO)তিনিই  একসঙ্গে হওয়া দুই সংস্থার প্রধান হিসাবে অব্যাহত থাকবেন। শুধুমাত্র যদি বোর্ডের সদস্যরা বা শেয়ারহোল্ডাররা চায় তবে তাঁকে সরানো যেতে পারে। ডিএনএ-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ডা. সুভাষ চন্দ্র বলেন, "Invesco, ZEEL এর প্রকৃত মালিক নন। তারা শুধু বিনিয়োগকারীদের একজন। ” ডা. চন্দ্র আরও অভিযোগ করেন যে Invesco আইনি ফাঁক কাজে লাগিয়ে গোপনে কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।


জি এন্টারটেইমেন্টের (ZEEL) সঙ্গে সোনি পিকচার্সের (SPNI)  সংযুক্তিকরণের ঘোষণার পর থেকে নাক গলাচ্ছে ইনভেসকো (Invesco)। শেয়ার ধারকদের কাছেও চুক্তির সমস্ত পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু কেন? তাদের পিছনে কাদের হাত রয়েছে? কেন এই প্রশ্ন তারা এড়িয়ে চলেছে? তাদের কি মদত দিচ্ছে চিন? জিলের (Zeel) বিরুদ্ধে চিন কেন ষড়যন্ত্র করছে? কোনও কর্পোরেট সংস্থার ইশারায় কি এই সব কিছু হচ্ছে? দেশবাসী ও শেয়ারহোল্ডারদের যাবতীয় সংশয় ও কৌতুহল নিরসন করলেন খোদ  জিলের (Zeel) প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর সুভাষ চন্দ্র। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)