রণিতা গোস্বামী : শারদ উৎসবের গন্ধটা এখনও না পাওয়া গেলেও পুজো যে এসেই গেল সেটা মানতেই হচ্ছে। করোনা মহামারীর পরিস্থিতিতে অনেকেই পুজোর আনন্দটা এখনও ঠিক উপভোগ করতে পারছেন না। তবে অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়ের কাছে পুজোর আনন্দটা একটু হলেও অন্যরকম। কারণ, তাঁর বাড়িতেই প্রত্যেক বছর চতুর্থীর দিন ঘটা করে দুর্গাপুজো হয়। সেই পুজোর আনন্দ, পুজোর শপিং নিয়ে নানান কথা Zee ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে শেয়ার করলেন কৌশানি। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তোমার বাড়িতে চতুর্থীর পুজোর বিষয়টা ঠিক কেমন?


কৌশানি : আমার বেলাঘাটার বাড়িতে আমার দিদা দুর্গা প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন থেকেই এই পুজোটা চলে আসছে। ওই প্রতিমা আমার কখনও বিসর্জন দিই না। তবে আমার বাড়ির পুজো শুধু চতুর্থীর দিনই হয়। দুর্গাপুজোর তো অনেক রীতি, টানা ৫দিন ধরে পুজো করা সম্ভব হয় না। একদিনই পুজো হয়, যেদিন প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। অন্যদিন গুলিতে আমরা বাইরে যাই আনন্দ করি, এই সব। তবে চতুর্থীর দিনের পুজোতে হোম, ভোগ সবই হয়। অনের আত্মীয়-স্বজন আসে। ঢাকের বাদ্যি বাজে। আমরা ঢাকের তালে নাচি। খুব মজা করি। কালীপুজোতেও আমার বাড়িতে বড় করে পুজো হয়। 


আরও পড়ুন-মাস্ক পরলেও লিপস্টিক পরবই, ওটা খুবই আমার খুবই প্রিয়, পুজোর সাজ নিয়ে বললেন শ্রাবন্তী



পুজোর শপিং কি কিছু করেছ?


কৌশানি : আসলে আমি সারাবছর এত কেনাকাটা করি। তাই হয়ত এবছর কেন, আগামী বছর পর্যন্ত কোনও কেনাকাটা না করলেও আমার চলে যাবে। কেনাকাটার মধ্যে আমি অদ্ভুত আনন্দ পাই। আমি টুক টুক করে কিনতেই থাকি (হাসি)। আর এখন যদি কিছু পছন্দ হলে আমি আমার স্টাইলিশকে বলে দিচ্ছি, ওটা স্টোরে পাওয়া গেলে, ও ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। আর অনলাইনেও কিনছি। লকডাউনেক ঠিক আগে আগেই একটা এক্সিবিশন থেকে অনেককিছু কিনেছিলাম। ওটা যে রয়েই যাবে, তখন বুঝতে পারিনি। তারপর কিছুদিন আগে মলে একটা কাজে গিয়েও কেনাকাটা করেছি। প্রচুর কেনাকাটা করি, কত বলব...


বাড়ির লোকজনের জন্য কিছু কিনেছ?


কৌশানি : এই কয়েকমাসের মধ্যে বেরনো হয়নি। তবে লকডাউনের আগে 'বিয়ে ডট কম'-এর শ্যুটিং করছিলাম, তখন সামনে একটা বুটিক পেয়ে আমার জন্য ৫টা আর মায়ের জন্য ৫টা শাড়ি কিনেছি। তাই আমার আর মায়ের পুজোর কেনাকাটা হয়েই আছে। আর বাবাকে নিয়ে বের হওয়া হয়নি। বাবার বয়সের জন্য এই পরিস্থিতিতে নিয়ে বের হচ্ছি না। তবে মার্চে বাবার জন্মদিনে অনেককিছু কিনে দিয়েছিলাম। সেগুলো তো রয়েই গেছে। আর একদিন এর মধ্যে বাবাকে নিয়ে বের হব। বনির জন্যও আমি প্রত্যেকবার কিনি, ও আমার জন্য কেনে। সেটাও বের হওয়া হয়নি, এবার একদিন দুজনে বের হয়ে কেনাকাটা করব। (হাসতে হাসতে)


আসলে প্রত্যেক বছর পুজোর কেনাকাটা অন্যরকম হয়। অনলাইনে কিনতে আমার ভালো লাগে। তবে দেখে, ঘুরে কেনাটা অন্যরকম। অন্যবার আমি, বাবা-মা, মাসি, মেসো, বোন সবাই বের হই, সারাদিন ধরে কিনে। রাতে বাইরে খাওয়াদাওয়া করে বাড়ি ফিরি। এবার তো সেসব কিছুই হচ্ছে না।


আরও পড়ুন-'ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক' নয়, মাস্ক ঢাকা মুখে চোখের মেকআপেই নজর কাড়তে চান তুহিনা



পুজোয় কী পরবে ইন্ডিয়ান নাকি ওয়েস্টার্ন?


কৌশানি : পুজোয় অবশ্যই ইন্ডিয়ান। কোনও কথা হবে না। তবে সাবেকি পোশাক বলব না, ওটা অষ্টমী, দশমিতেই ঠিক আছে। আর নমবীতে লেহেঙ্গা, বাকি দিনগুলিতে শাড়ি, কিংবা সালোয়ার পরি। আমাদের পুজোর সময় বিভিন্ন ওপেনিং থাকে, চ্যানেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে। তাই ইন্ডিয়ানটা পরতেই হয়। আর আমি পুজোতে ইন্ডিয়ান পরতেই পছন্দ করি। ওয়েস্টার্ন ছোটবেলায় পরতাম। তবে একটা বিষয় আমার ছোট থেকেই আছে, সেটা হল সকাল বিকেল নতুন জামা পরা। এটা আমার কাছে অদ্ভুত আনন্দ। 


আর জুয়েলারি সাজগোজ কী করবে? 


কৌশানি : জুয়েলারি... (একটু ভেবে) কিছুদিন আগে অনলাইনে অথরাইজড সাইট থেকে অনেকগুলো সিলভার জুয়েলারি কিনেছি। রুপোর গয়না আমার খুব পছন্দ। আর চতুর্থীরদিন বাড়িতে আমি, মা, সবাই সোনার ভারী গয়না পরি। ওটা সেই দিদার সময় থেকে চলে আসছে। এছাড়া কোনও বের হলে আমি সাধারণত কানে ভারী দুল পরি। কানে হালকা পরলে গলায় ভারী কিছু পরি। তবে কানে ভারী দুল পরাটা আমার পছন্দের।


আর সাজগোজ বলতে আমি মেকআপ করতে বিশেষ পছন্দ করি না। লিপস্টিক খুব লাগাই, তবে এখন মাস্কের জন্য আমার লিপস্টিকগুলো কান্নাকাটি করছে (হাসতে হাসতে)। চোখের মেকআপ খুব একটা করি না, তবে এবার করব, কারণ ঠোঁট ঢাকা থাকবে।



আরও পড়ুন-বিয়ের পর প্রথম পুজো, মিথিলাকে কী উপহার দিলেন সৃজিত?


পুজোয় বেরোবে?


কৌশানি : হ্যাঁ, সেটা তো একটু হবেই। আমরা বাঙালিরা পুজোয় একদমই বের হব না, সেটা হয়ত হবে না। তবে ওই গাড়ি নিয়ে এদিক ওদিক। হয়ত বেশি লোকজন থাকলে সেখানে যাব না। গাড়িতে ঘুরে কোনও রেস্তোরাঁতে (যাঁরা সুরক্ষা মেনে চলছে) খাওয়াদাওয়া করে ফিরব। বাড়িতে খাওয়া দাওয়া তো লেগেই থাকে। পুজোর দিনে কোনও ডায়েট করি না। আর বনির সঙ্গেও বের হব। ওর সঙ্গে পুজোতে সারাদিন ঘোরা, খেতে যাওয়াটা একটা ভালোলাগার জায়গা। সেটা তো হবেই ...। 


আর প্ল্যান বলতে লকডাউনে আমি অনেক নতুন নতুন রান্না করেছি। সেগুলো সবাই পছন্দও করেছে। তো পুজোর একদিন আমি বাড়িতে নতুন কিছু রান্না করতেও পারি। তবে সেটা মুডের উপর নির্ভর করছে। কারণ, পুজোর সময় খাটনিটা ঠিক পোষায় না আবার..।