রণিতা গোস্বামী :  আগামী সপ্তাহেই পুজো শুরু। তাই করোনা আবহ হলেও সকলেই টুকটাক পুজোর কেনাকাটা, প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। হাজার হোক দুর্গাপুজোয় বাঙালিরা অল্প হলেও আনন্দ করবেন তো বটেই। এবার পুজোর কেনাকাটা, পুজো কাটানোর পরিকল্পনা নিয়ে নানান কথা শেয়ার করলেন টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী, বর্তমানে বড়পর্দার অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ঐন্দ্রিলা: এই যে একটা শ্যুট ছিল, ওটা শেষ করেই বারাসতে মাসি-মেসোকে আনতে যাচ্ছি (কথা বলার শুরুতেই)। অন্যবার সকলে পুজোর সময় আসে, এবার যা পরিস্থিতি, সেকারণেই ওনাদের নিয়ে চলে আসছি। পুজোটা এবার পরিবারের সকলে মিলেই কাটাব। আমার বোনও আছে আমার সঙ্গে, দিদা আছেন, আমার আরেক মাসিও কাছেই থাকেন। পুজোতে ঘোরা তো এবার হবে না। আত্মীয়দের সঙ্গে মিলে মজা করে কাটাব। একদিন হয়ত পরিবারের সবাই মিলে 'গেট-টুগেদার' হবে। প্যান্ডেল হপিং এবার একেবারেই নয়। কোনও ঝুঁকি নিতে চাই না।


পুজোয় কেনাকাটা কিছু কি করেছ?


ঐন্দ্রিলা: প্রচুর মাস্ক কিনেছি, (হাসতে হাসতে হ্যাঁ, সত্যি) জামার সঙ্গে ম্যাচিং করে। ধরো একটা অ্যানিম্যাল প্রিন্টেড জামা, তো ওটার সঙ্গে ওইরকমই মাস্ক। আবার ফ্লোরাল মাস্ক, একটু চিকচিকে টাইপের মাস্ক, কিছু এক রঙের মাস্ক। আমার ভাই আমায় একটা মাস্ক দিয়েছে, সেটা আবার অন্ধকারে জ্বলে (হাসতে হাসতে)।  


তবে প্রত্যেকবার যেমন অষ্টমীতে শাড়ি পরব, নবমীতে ভালোকিছু পরব, এইভাবে শপিং এবার হয়নি। এবার পুজোর পরিকল্পনার কথা যদি জিজ্ঞেস করো, বলব জিরো। পুজোয় তো সাজগোজ দেখাতেই পারব না। কী হবে কিনে! পুজোয় সেজেগুজে বের হব, লোকে দেখবে, এটাই তো মেয়েদের মজা, এবার তো বের হতেই পারব না। আমি নিজের জন্য কিছুই কিনিনি। মাও বলল কিছু নেবে না। এমনকি আমার ছোট বোনও বলল, দিদি কিছু কিনিস না, পুজোতে বন্ধুদের নতুন জামা তো দেখাতেই পারব না, তাই এবার কিছু নেব না। কিছু আত্মীয় যাঁদের দিতেই হবে, তাঁদের জন্য মা কেনাকাটা করেছে। আর কিছু আত্মীয় আগেই বলেই দিয়েছে, এবার আমাদের জন্য কিছু কিনবি না। তবে হ্যাঁ, আমার এক আত্মীয় আমায় সুন্দর ইন্দো-ওয়েস্টার্ন একটা জাম্পস্যুট দিয়েছে, ওটা খুবই সুন্দর। মাকে উনি একটা শাড়িও দিয়েছেন, কেনাকাটা বলতে এই যা...।


আরও পড়ুন-পাজামা-পাঞ্জাবির থেকে জিন্স, টি-শার্টেই স্বচ্ছন্দ, অনলাইনে কেনা পছন্দ নয় : অঙ্কুশ



অঙ্কুশের জন্য কী কিনলে?


ঐন্দ্রিলা: ওর জন্য কী যে কিনব! ওর মতো নীরস লোক আমি আর দুটো দেখিনি (হাসতে হাসতে বললেন)। ওকে দিয়েও লাভ হয় না, পরেই না। আমার মা ওকে হীরের আংটি, সোনার হার, জন্মদিনে কতকিছু দেয়। কিন্তু সেটা ও পরেই না। আংটিটার কথা, কিছুদিন আগে অস্বীকার করে গেল, বলল কই দিয়েছে! আমি বললাম, এত মিথ্যে বোলো না, পাপ হবে। আর, হারটা মনে হয় ও বিক্রিই করে দিয়েছে, বা কাউকে দিয়ে দিয়েছে (হাসতে হাসতে), কে জানে! আসলে মা নিজে সোনা ভালোবাসেন বলে ওকেও দেয়। ও তো জিন্সও পরতে চায় না আজকাল, শার্ট-প্যান্ট কিনতে হয়। ওকে একমাত্র যদি পিএস৪ গেমের কিছু দেওয়া হয়, তাহলে ও খুব খুশি হয়। চোখে জ্বল এসে যায় ওর (হাসতে হাসতে)। 


অনলাইনে কেনাকাটা করো?


ঐন্দ্রিলা: না, অভিজ্ঞতা খুব খারাপ। একটা গাউন পছন্দ করে কিনেছিলাম, এল পর্দার কাপড়। তবে কিছু ব্র্যান্ডের জিনিসপত্র, যেগুলো মাপ জানি, মলে গিয়ে কেনা আর অনলাইনে কেনা এক, সেগুলো কিনি।


পুজোয় ইন্ডিয়ান নাকি ওয়েস্টার্ন কী পরতে পছন্দ? 


ঐন্দ্রিলা: পুজোতে আমি সব পরতে ভালোবাসি। আমি কখনওই বলব না শুধু ইন্ডিয়ান। এতবছর টেলিভিশন করেছি, তাই সারা বছর শাড়ি পরে কাটাতে হয়েছে। তাই পুজোয় ওয়েস্টার্নও পরি। এখন অবশ্য ফিল্ম করছি। তবে আমি লেহেঙ্গা, শাড়ি, স্কার্ট যা ভালো লাগে, যখন যেটা ইচ্ছা করে সেটা পরে নি। এমন নয় যে অঞ্জলি দেব বলে শাড়ি পরতেই হবে। তবে যদি ভালো শাড়ি পেলাম, তখন হয়ত সেটা অঞ্জলি দেওয়ার জন্য রেখে দিলাম। আবার হয়ত পরিবারের সঙ্গে বাইরে খেতে যাচ্ছি, তখন হয়ত একটু শাড়ি পরলাম, তার সঙ্গে মায়ের কাছ থেকে গয়না ধার করে পরলাম। মায়ের শাড়ির দিকেও নজর থাকে অবশ্য।


আরও পড়ুন-সিঙ্গাপুরে পুজো কাটবে, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমীর দিনে ট্রাডিশনাল সাজই পছন্দ : ঋতুপর্ণা



মেকআপ?


ঐন্দ্রিলা: সাজগোজ সাধারণত করি না। ছিমছাম ফ্রেস লুকটাই আমার ভালো লাগে। তবে যদি পুজোয় উদ্বোধন থাকে, বা অনুষ্ঠান থাকে তাহলে পুরোদমে সেজে বের হই। আর এবার তো মাস্ক থাকছে। তাও একটু তো সাজবই। কারণ, গাড়িতে তো আর মাস্ক পরব না। কাঁচের ফাঁক দিয়ে যদি কেউ দেখে। ওটাই আনন্দ। 


পুজোয় ঠাকুর দেখতে এবার তো বের হবে না, অন্যবার বের হও?


ঐন্দ্রিলা: আমরা ওইভাবে তো বের হতে পারি না। তবে অন্যবার কী হয়, পুজো পরিক্রমায় প্রায় সব বড় ঠাকুরই দেখা হয়ে যায়। ওটা খুব ভালো লাগে। আমার মাও যায় অনেকসময়। একবার কাকিমা (অঙ্কুশের মা) কেও নিয়ে গিয়েছিলাম, খুব খুশি হয়েছিল। বলল, তুই যা ঠাকুর দেখালি, এভাবে তো কখনও ঠাকুর দেখতে পারিনি, অঙ্কুশের তো সময়ই হয়না, এবার মনটা ভরে গেল। তবে এবার সেটা হচ্ছে না। যত প্রস্তাব এসেছিল উদ্বোধনে যাওয়ার, না করে দিয়েছি। এবার অঙ্কুশরা হয়ত একদিন আমাদের বাড়িতে এল, আমরাও হয়ত একদিন গেলাম, এভাবেই আনন্দ করব। আমার এক দাদা আছে, বর্ধমানে থাকে, অঙ্কুশের ছোটবেলার বন্ধুও, ও আসছে এবার আমার বাড়িতে। সবাই মিলে বাড়িতেই মজা করব (হাসি)।