রণিতা গোস্বামী : 'দুগ্গা এলো', পুজোর এই গানটি এই কদিনে অনেকেই প্রায় একাধিকবার শুনে ফেলেছেন। সম্প্রতি SVF-এর তরফে 'দুগ্গা এলো' মুক্তি পাওয়ার পরই তা ইউটিউবে ট্রেন্ড করতেও শুরু করে। গানটি গেয়েছেন জনপ্রিয় শিল্পী আকৃতি কক্কর ও দেবাঞ্জলি বি যোশী। পুজোর এই গান নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন সঙ্গীত শিল্পী আকৃতি। Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরও অনেক কথা জানালেন আকৃতি কক্কর।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

'দুগ্গা এলো' গানটা ভীষণই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, এই গানটা নিয়ে তুমি কী বলতে চাইবে?


আকৃতি কক্কর : আমি প্রত্যেক বছরই দুর্গাপুজোর আগে কিছু না কিছু গান করার চেষ্টা করি। আর 'দুগ্গা এলো' ভীষণই সুন্দর একটা গান। গানটি কম্পোজ করেছেন অজয় সিং। গানটি যখন আমায় পাঠানো হয়েছিল, আমার শুনেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হয়, ভিডিয়ো না দেখে কেউ যদি শুধু গানটা শোনেন, তাহলেও ভালোবেসে ফেলবেন। ঢাক সহ দুর্গাপুজোর সঙ্গে সম্পর্কিত বেশকিছু বাদ্যযন্ত্র এই গানে ব্যবহার করা হয়েছে আবার গিটারের মত আধুনিক বাদ্যযন্ত্রও রয়েছে। গানটার জন্য বাবা যাদব যে ভিডিয়োটি বানিয়েছেন সেটিও ভীষণ সুন্দর, মন ছুঁয়ে যায়।



এর আগেও তো তুমি পুজোর গান গেয়েছ...


আকৃতি কক্কর : হ্যাঁ, গত বছর আশা অডিও-র তরফে আমি আর শান 'হয়তো প্রেম' বলে একটা গোটা অ্যালবামই বের করেছিলাম। ভালো সাড়া ফেলেছিল।


দুর্গাপুজোয় গান মুক্তি কিন্তু বহু বছরের পুরনো প্রথা, একটা সময় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সলীল চৌধুরী, মান্না দে-র মত শিল্পীদের গান মুক্তি পেত। এখন তোমাদের মত এযুগের শিল্পীদের গান প্রকাশ পাচ্ছে, কী বলবে?


আকৃতি কক্কর : আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি। পুজোয় নতুন গান বের হওয়া যদি উৎসবের অঙ্গ হয়, আমি এখন তাতে সামিল হতে পেরে খুশি। (হাসি)


দুর্গাপুজো নিয়ে বাঙালির একটা আলাদা উন্মাদনা রয়েছে, তুমি কখনও কলকাতায় থেকে দুর্গাপুজোর আনন্দটা উপভোগ করেছ?


আকৃতি কক্কর : হ্যাঁ, বেশ কয়েকবার। তবে শুধু কলকাতা নয়, গোটা দেশেই দুর্গোৎসব পালিত হয়। ওডিশা, দিল্লি, আগ্রা, মুম্বই, আরও অনেক শহরে। পুজো প্যান্ডেলে ঘুরে দুর্গাপুজো দেখেছি এমনটা নয়। তবে শো থাকে প্রচুর। আর সেগুলি বড় বড় দুর্গোৎসব কমিটির তরফেই আয়োজিত হয়। তাই দুর্গাপুজোর আনন্দটা সেখান থেকেই পেয়ে যাই। মুম্বইয়ে শো থাকলে আমার বন্ধুরাও চলে আসে। সবাই মিলে আনন্দ করি।


দুর্গাপুজোর সব থেকে বড় বিষয় আমার মনে হয় সৃজনশীলতা, বিভিন্ন প্যান্ডেল যেভাবে শৈল্পিকভাবে তৈরি হয়, এটা আর অন্য কোনও উৎসবে আমি দেখিনি। নবরাত্রি, দুর্গাপুজো ছাড়া এতদিন ধরে আর কোনও উৎসব তো চলে না। তাই এটা একটা অন্যরকম বিষয়।


তুমি বাংলা গান গাইছ অনেকদিন হল, হিন্দি, মারাঠি সহ অন্যান্য ভাষাতেও গান গাও, কোনটার কেমন অনুভূতি...


আকৃতি কক্কর : সব ভাষার গানেই আলাদা আলাদা অভিজ্ঞতা। তবে অনুভূতিটা চিরন্তন। এমন নয় যে, আমি যা যা হিন্দি গান গেয়েছি, সব ভালো লেগেছে, মারাঠি বা বাংলা সহ যা কিছু গেয়েছি, সবকটা ভালো লেগেছে। তবে কিছু গান হৃদয়ের খুব কাছের হয়ে যায়। ৭-৮ বছর ধরে বাংলা গান গাইছি, প্রথমটা খুব ভয় হত, যদি উচ্চারণ ভুল হয়, তবে ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন আমি অত্মবিশ্বাসী। বহু বছর আগে যখন প্রথম সারেগামাপা-র বিচারক হয়ে এসেছিলাম, তখন বাংলা ঠিক বুঝতে পারতাম না। এখন বুঝতেও পারি, অল্পস্বল্প বলতেও পার। আমার অনেক বাঙালি বন্ধুও আছে। (হাসি)



তুমি রিয়ালিটি শোয়ের বিচারক, অনেক শিল্পীকেই রিয়ালিটি শো থেকে জিতেও হারিয়ে যেতে হয়েছে, সেভাবে আর তাঁদের গান শোনা যায় না, কী বলবে?


আকৃতি কক্কর : রিয়ালিটি শো একটা প্ল্যাটফর্ম দেয়। যে হয়ত খুব ভালো গান করে, অথচ রিয়ালিটি শোয়ে না এলে তাঁর গলা ঘরে ঘরে পৌঁছত না। রিয়ালিটি শো পরিচিতি দেয়। রিয়ালিটি শোতে গান শুনেই হয়ত কোনও ভালো কম্পোজারের সে চোখে পড়ে গেল। এমন নয় যে প্রতিযোগিতায় জিততেই হবে। যার যোগ্যতা আছে, সে ঠিক জায়গাকে করে নেবে। আর অরিজিৎ সিং তার অন্যতম উদাহরণ। ও প্রতিযোগীতা জেতেনি তবে ও নিজের যোগ্যতায়, নিজের পরিশ্রমে আজ কোথায় পৌঁছে গিয়েছে।


বলিউডের প্লে ব্যাক-এর ক্ষেত্রে বহুবছর ধরে লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলের গানই মানুষ শুনত, পরের দিকে শ্রেয়া ঘোষাল, সুনিধি চৌহানরা অনেকদিন ধরে টানা গান গেয়ে গেছেন, তোমার কি মনে হয় গায়কদের থেকে গায়িকাদের নিয়ে কম এক্সপিরিমেন্ট হয়? 


আকৃতি কক্কর : সেটা কিছুটা ঠিক। আসলে আমাদের দেশে হিরো কেন্দ্রীক ছবিই তো বেশি, মহিলাদের সিনেমায় তুলনামূলক কম ভূমিকা। এখন কিছুটা বদলাচ্ছে। যত বেশি মহিলা কেন্দ্রীক ছবি হবে, তত বেশি মহিলাদের প্লে ব্যাক-এর সুযোগও বাড়বে। 


বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি 'নেপোটিজম' বিতর্ক ধরে চর্চায় উঠে এসেছে, গানের জগতেও রাজনীতি হয় বলে সোনু নিগম, আদনান সামিরা বলেছেন, তুমি কী বলবে?


আকৃতি কক্কর : শুধু বলিউড কেন সবক্ষেত্রেই নতুনদের স্ট্রাগল করতে হয়। নেপোটিজম আছে, রাজনীতি আছে, তবে যোগ্যতা যাঁর আছে, সে অবশ্যই জায়গা করে নেবে। নিজের বিফলতাকে রাজনীতি বললে কিন্তু ভুল হবে। কোনও বড় ব্যক্তির ছেলেমেয়েরা ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে চাইতেই পারেন। তাঁরা হয়ত সহজে সুযোগ পাবেন, তবে যোগ্যতা না থাকলে কেউই লম্বা রেসের ঘোড়া হতে পারে না। এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে।