অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়:  চার বছরের জার্নি শেষ হলো। করুণাময়ী রানী রাসমণিতে দিতিপ্রিয়ার পথ চলার শেষ দিন ছিল শনিবার। শেষ শট দেওয়ার পর Zee ২৪ ঘণ্টার মুখোমুখি হলেন দিতিপ্রিয়া রায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রতিনিধি -শেষ শট দেওয়ার পর কি মনে হল, অনুভূতি কেমন ছিল?


দিতিপ্রিয়া- শট টা দিলাম অদ্ভুত একটা অনুভুতি। পুরো শট শেষে একটা সময় আমাকে চোখ বন্ধ করতে হত, চোখ বন্ধ করেওছিলাম।  যখন চোখ খুললাম দেখলাম, ইউনিটের সকলে হাউমাউ করে কাঁদছে। সেই সময় নিজেকে কি ধরে রাখা যায়? আমারও চোখ জলে ভরে গেল। একটা দুটো নয় চারটে বছরের জার্নি, আমার জীবনের দুটো বড় বোর্ডের পরীক্ষা এই মেকআপ রুমে বসে পড়াশোনা করে দিয়েছি। ইন্দ্রপুরী স্টুডিওর আনাচে-কানাচে স্মৃতি রয়েছে আমার। একটি পোষ্যও রয়েছে, সব কিছুর কথা ভাবলেই  খুব মন খারাপ হচ্ছে। (চোখ ছলছল, গলা ধরে আসে দিতিপ্রিয়ার)


প্রতিনিধি-তোমার নামের সঙ্গে রানিমা একাত্ম হয়ে গিয়েছিল,  দিতিপ্রিয়া এবং রানিমা যেন একই মানুষ, এইটার থেকে বেরিয়ে আসা কতটা কঠিন বলে মনে হচ্ছে?


দিতিপ্রিয়া- খুবই কঠিন। কারণ আমাকেই এতদিন দর্শকরানিমা বলে ভেবেছেন। রানিমা যেভাবে কথা বলতেন সেই ভাষা শুনতে চান আমার কাছে, নতুন চরিত্র যখনই আমি অভিনয় করবো তখন সেটা আমার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠে আসবে। তাই নতুন সেই চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলাটা আমার কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। তাই আমায় অনেক বেশি খাটতে হবে।


প্রতিনিধি- রানিমাকে ছাড়া  এই ধারাবাহিক পরবর্তীকালেও চলবে,  দর্শকরা যাঁরা এতদিন তোমাকে দেখার জন্য ঠিক সময়ে পর্দার সামনে বসে যেতেন তাদের উদ্দেশ্যে কী বার্তা থাকবে তোমার?


দিতিপ্রিয়া- ২০১৭ সালের জুন মাসে আমার এই জার্নি শুরু হয়।  সেই থেকে আমি ছাড়াও বাকি চরিত্রদের ও পছন্দ করেছেন দর্শক। আমার অনুরাগীদের বলবো আমি না থাকলেও তাঁরা যেন আমার চরিত্রটি বাঁচিয়ে রাখেন। ধারাবাহিকে আরও চমক আসছে।



প্রতিনিধি-  তোমার মা প্রতিদিন শুটিংয়ে তোমার সঙ্গে হাজির থাকতেন, তাঁরও আজ চোখে জল, মেকআপ রুমে ঢুকে কস্টিউমের ব্যাগটা রাখতেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। মা বলেছেন মেয়ে স্কুলের জন্য চট জলদি রেডি হয়ে যেত,  সিরিয়ালের কল টাইম শুনে বলতো অন্য কারো দৃশ্য আছে কি! 


দিতিপ্রিয়া-  হ্যাঁ, কারণ আমি এই সেটের সবচেয়ে প্যাম্পরড চাইল্ড ছিলাম। এইরকম ইউনিট আমি আর কোনদিন হয়তো পাবো না।  আমার আবদার বায়না সবটাই মেনে নিতেন, এত্ত ছোট থেকেই আমি  কাজ করতাম। সবচেয়ে বেশি মিস করব সেটাই।  আমার কাছে পরিবারের চেয়ে এই ইউনিট কম কিছু তো নয়।


প্রতিনিধি-  রবিবার থেকে নতুন জীবন নতুন একটা  শুরু,  কলটাইম নেই,  প্রতিদিনের ব্যস্ততাও নেই। এরপর পাইপলাইনে  কি কি রয়েছে?


দিতিপ্রিয়া-  হ্যাঁ, নতুন শুরু তো বটেই।  আমার  কয়েকটি ছবির মুক্তি বাকি,  বাংলার 'অভিযাত্রিক',  হিন্দিতে 'বব বিশ্বাস',  'অচেনা উত্তম' এর শুটিং আবার শুরু হবে, পাভেলের নতুন ছবিতেও অভিনয় করছি।  একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করার কথা রয়েছে।  এছাড়াও বিভিন্ন ওটিটি প্লাটফর্মে  কয়েকটি চরিত্রের অফার পেয়েছি,  সেটা ফাইনাল হলে বলতে পারব।  আর ভালো চরিত্র নিয়ে ফের ছোটপর্দায় ফেরার ইচ্ছা তো রইলই।


প্রতিনিধি- ভালো থেকো। আগামী দিনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা। এভাবেই সাফল্য আসুক তোমার প্রতিটা কাজে


দিতিপ্রিয়া- থ্যাঙ্ক ইউ। চেষ্টা করব আমার সব কাজের মাধ্যমে আনন্দ দেওয়ার। আশা করি, একইরকম ভালবাসা পাবো, আর আমার মধ্যে তো রানিমা নিশ্চয়ই বেঁচে থাকবেনই, আজীবন।