নারী অথবা পুরুষ কাউকেই অশালীন আক্রমণ করা উচিত নয়, ইকুয়ালিটি দরকার : Payel Sarkar
অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যয়
অনসূয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
কেমন আছো বলো, অনেকদিন পর দেখা
পায়েল সরকার : এই তো ভাল আছি, হ্যাপি নিউ ইয়ার।
প্রতিনিধি- লকডাউনে কতটা বোর হয়েছ? লকডাউন ওঠার পর থেকে কীভাবে সময় কাটছে এখন?
পায়েল সরকার : আনলকের তিন থেকে চার দিন পর থেকে শুটিং শুরু করেছি। নর্মাল লাইফে ফিরছি। লকডাউন খুব টাফ কেটেছে। বোরিং তো বটেই। আমি খুব বাইরে ঘুরতে ভালোবাসি। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, বা বাড়িতে বন্ধুরা আসা সেগুলো খুব পছন্দ করি। সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাই কঠিন সময় ছিল আমার কাছে।
প্রতিনিধি- প্রায় এক বছর পর তোমার পূর্ণদৈর্ঘের ছবি মুক্তি পাচ্ছে ম্যাজিক।ছোট চরিত্র, এই ছবি করতে রাজি হলেন কেন?
পায়েল সরকার : এই ছবিতে আমার চরিত্রটা ছোট কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই চরিত্রটা দেখে দর্শক গল্প অনেকটা বুঝতে পারবেন। আমার বন্ধু রাজা চন্দ এই ছবিটা করছেন। অন্য় জনারের ছবি করছেন, ওকে সাপোর্ট করতে চেয়েছিলাম। পাশাপাশি বিষয়টাও অন্যরকম, এই সাবজেক্টটা প্রথম এক্সপ্লোর করা হচ্ছে। তাই আমি রাজি হলাম।
প্রতিনিধি-বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজে তোমায় দেখা গেছে, এই লকডাউনে সকলের অভ্যাস বদলে গেছে, মুঠোফোনে ছবি দেখছেন সকলে। কী মনে হচ্ছে মানুষ বেশি স্বচ্ছন্দ স্মার্টফোনে সিনেমা দেখতে? এটা হলে তো ইন্ডাস্ট্রির মুশকিল!
পায়েল সরকার : ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্যারালাল প্ল্যাটফর্ম বটে। দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। বড় পর্দার থেকে অনেক বেশি এক্সপেরিমেন্টাল, সেটা হলে শিল্পীদের ক্ষেত্রেও সুবিধা, অনেক ধরনের কনটেন্ট আসে কারণ কোনও বাধা নেই, সেন্সরের ভয় নেই। পরিচালক প্রযোজক সবার কাছেই বেশ ইন্টারেস্টিং।
প্রতিনিধি- বর্তমানে রাজ্য রাজনীতি চর্চায়। একের পর এক নায়িকা রাজনীতিতে আসছেন। তোমার সম্বন্ধেও শোনা যাচ্ছে। তুমি কী জয়েন করছ?
পায়েল সরকার : করলে তো জানতেই পারবে। যদি হয়, সবথেকে আগে আমি তোমায় জানাব। রিউমার তো কত কিছুই চলে, লেটস নট ফোকাস অন দ্যাট, যদি করি ইউ উইল বি দ্য ফার্স্ট পারসন টু নো।
প্রতিনিধি-অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী শুধু অভিনয়েই ফোকাস করতে চান, অনেকে আবার মানুষের জন্য, সমাজের জন্য কাজ করতে চান, তোমার কি সেটার ইচ্ছে আছে?
পায়েল সরকার : শুধু সমাজের জন্য কেন, আমি আমার লাইফের যে কোন রাস্তা খোলা রাখতে চাই। আমি কনট্রিবিউট করতে চাই, সেটা রাজনীতি, সমাজ কোনও দিকেই হোক না কেন. আই অ্যাম ওপেন টু অল।
প্রতিনিধি- সম্প্রতি তোমার বিজেপিতে জয়েন করা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। ট্রোলিং ও শুরু হয়েছে
পায়েল সরকার : শুধু রাজনীতি নিয়ে কেন? আরও অনেক কিছু নিয়ে স্পেকুলেশন চলে। আমার প্রফেশনাল কেরিয়ারেও যদি ইন্টারেস্টিং কিছু করি। যে কোনও নতুন কিছু হবে সেটা জানতে পারবে সবাই। আমি আমার ফ্যানদের সঙ্গে শেয়ার করবই।
প্রতিনিধি-প্রথম সারির নায়িকাদের কাছে তৃণমূল ও বিজেপিতে জয়েন করার অফার আছে, তো তোমার কাছেও কি অফার এসেছে?
পায়েল সরকার : আমি তো বললাম দিস ইজ নট দ্য রাইট টাইম টু টক অ্যাবাউট অল দিস থিংগস। আমি যদি সিদ্ধান্ত নিই, আমি জানাব।
প্রতিনিধি-সায়নী এবং দেবলীনাকে ট্রোল করা হয়েছে, অপমান করা হয়েছে, রেপ থ্রেট দেওয়া হয়েছে, এই নিয়ে মেট্রো চ্যানালে প্রতিবাদ করেন শিল্পীরা
পায়েল সরকার : শুধু শিল্পী নয়, কোনও নারীকেই অশালীন মন্তব্য করার বিরুদ্ধে আমি। একদমই সাপোর্ট করি না। এটার মধ্য়ে রাজনৈতিক কোনও অ্য়াঙ্গেল আছে কিনা তা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। ব্যক্তিগতভাবে বলছি কোনও নারীকে অপমানজনক কথা বলা উচিত্ নয়। কোনও নারী যদি সেলিব্রিটি নাও হন তাঁর সঙ্গেও এটা হওয়া উচিত্ নয়।
প্রতিনিধি-নারী এবং সেলিব্রিটি, এই কম্বিনেশন মুখ খুললেই তাকে ট্রোল করা হয়, তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়, তুমি মানো এটা?
পায়েল সরকার : না একদমই নয়। আমিও আউটস্পোকেন, সব বিষয়ে স্পষ্ট করে কথা বলি। আমাকে তো ট্রোল করা হয় না। শিল্পী এবং নারী কথা বললেই যে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, অসোন্তোষের শিকার হচ্ছে, তা নয়। যাঁরা সেলিব্রিটি নন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এটা হওয়া উচিত্ নয়। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কোনও সেন্সিবল মানুষ হলে মহিলা ও পুরুষের মধ্যে পার্থক্য করবেন না, এটা থাকা উচিত্ নয়। ইকুয়ালিটি টা থাকা উচিত্।
প্রতিনিধি- যে ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে কিছুদিন আগেই মেট্রো চ্যানেলে দাঁড়িয়ে টলিউডের অনেকেই সেখানে হাজির ছিলেন। তুমি কি পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলে, হয়ত কোনও কারণে পারো নি সেদিন ?
পায়েল সরকার : আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে এটার সঙ্গে অ্যাসোশিয়েট করতে চাই না। কোনও বক্তব্য রাখার জন্য প্ল্যাটফর্মেই সামিল হতে হবে, আমি বিশ্বাস করি না। এই ইন্ডাস্ট্রির অংশ হিসাবে কেউ যদি কখনও কোনও সাহায্য চান, আমার তরফ থেকে যতটা সম্ভব করতে চেষ্টা করব। কোথাও গিয়েই তা করতে হবে, সেটা আমি বিশ্বাস করি না।