`আমি মরে গেছি শুনেই নুর কেঁদে ফেলল` শ্যুটিং-এর অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন পরিচালক মানস মুকুল
'সহজ পাঠের গপ্পো', এতদিন হয়তো সিনেমাটা অনেকেই দেখা ফেলেছেন। সিনেমাটি নিয়ে সোশ্যাল সাইট থেকে টেলিভিশন বিভিন্ন জায়গায় আলাচনাও হয়েছে বিস্তর। নন্দন প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি প্রদর্শনের সুযোগ না মেলায় বিতর্ক কম হয়নি। অথচ সব বিতর্ক ছাপিয়ে গিয়ে পরিচালক মানস মুকুল পালের সিনেমা জায়গা করে নিয়ে সিনেমাপ্রেমী মানুষের মনে। সিনেমার শ্যুটিং-এর বিভিন্ন মুহূর্ত, নন্দন বিতর্ক, সাফল্য, জাতীয় পুরস্কার সহ বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ২৪ ঘণ্টা ডিজিট্যালের সঙ্গে শেয়ার করলেন পরিচালক মানস মুকুল পাল। কথা বললেন রণিতা গোস্বামীর সঙ্গে।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প থেকে সিনেমা। আর নামে রবীন্দ্রনাথের ছায়া, 'সহজ পাঠের গপ্পো'। এই নামটা কেন?
মানস মুকুল- দেখুন, এই নামটা বেছে নেওয়ার বেশ কয়েকটা কারণ রয়েছে। এক,'পাঠ' শিক্ষা অর্থে যদি ধরি, তাহলে দেখা যাচ্ছে এই সিনেমায় ছোটু জীবনের খুব সাধারণ একটা শিক্ষা পেয়েছে, (কার কাছে কতটা আশা করা উচিত বা না উচিত) ওর স্বপ্ন ভেঙে গেছে, কষ্ট পেয়েছে ঠিকই, তবে এটা তো ঠিক এটা ওর কাছে একটা শিক্ষা পাওয়া। এছাড়া আশাকরি দর্শকরাও এখান থেকে বেশকিছু শিক্ষা পেয়েছে।
আর 'সহজ পাঠ' আমাদের বাঙালিদের অনেকেরই ছোটবেলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। সেই ছোটবেলাকে ফিরিয়ে আনার জন্যই 'সহজ পাঠের গপ্পো'।
এখন যেখানে বিদেশে গিয়ে বেশিরভাগ বাংলা সিনেমার শ্যুটিং হচ্ছে। নাচ-গান, চাকচিক্য, সেখানে , 'সহজ পাঠের গপ্পো'-র মতো এমন একটা ছবি বানাতে গেলেন কী ভাবনা থেকে?
মানস মুকুল- (হাসতে হাসতে) নাচ তো এখানেও আছে। ছোটু নাচ করেছে 'রকি ভাই' ( আরে, মজা করে বললাম )
এখন যে ধরনের বাংলা ছবি হচ্ছে, আমি দর্শক হিসাবে একেবারেই তৃপ্ত নই। সেই অতৃপ্তি থেকেই এধরণের সিনেমা বানানো।
(একটু ভেঙে) প্রথমে আমি অভিনয় দিয়ে কাজ শুরু করি। তবে সেটা করতে করতে আমার মনে হয়েছিল আমি যে ধরণের কাজ চাইছি সেটা হয় না। সেই জায়গা থেকেই এই সিনেমা বানানো। আর তাছাড়া 'তালনবমী' আমার ভীষণ ভালোলাগার একটা গল্প। আর দেখুন, আমার ছবিতে নাচ-গান অনিবার্য নয়। সম্পূর্ণ অজনা অচেনা আনকোরা লোকজন নিয়েও ভালো সিনেমা বানানো যায়।
পুজোতে যেখানে তথাকথিত স্টার পরিচালক দের কিংবা স্টার অভিনেতাদের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সেখানে আপনার সিনেমায় 'তথাকথিত চাকচিক্য' নেই। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে পুজোতেই এমন একটা ছবি, আবার যেটা কিনা আপনার প্রথম সিনেমা, সেটা মুক্তির সাহস পেলেন কোথা থেকে?
মানস মুকুল- আমার বিশ্বাস ছিল এই ছবিটা মানুষের ভালো লাগবে। তৃতীয় সপ্তাহে মাত্র ৪টে হলে শো ছিল ১০, ১১টায় শো চলছিল। তখন হল থেকেই ফোন করে বলছে সিনেমাটা যেখানেই প্লেস করছি সেখানেই হাউস ফুল।
সিনেমাটা যে অসাধারণ তা নিয়ে দ্বিধা নেই। অনেকগুলে দেশ বিদেশের ফেস্টিভ্যালে প্রশংসিত, তার উপর সেরা শিশু শিল্পীর ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। তার পরেও নন্দনে সিনেমা চালানো হল না। একমাস আগে অ্যাপ্লাই করা সত্ত্বেও কদিন আগে বলা হল 'সিনেমাটা সেখানে চালানোর যোগ্য নয়', সেটা নিয়ে কী বলবেন?
মানস মুকুল- (ধরিয়ে দিয়ে) কয়েকদিন আগে নয়, জাস্ট ৬ তারিখ (৮ সেপ্টেম্বর সিনেমা মুক্তি পায়) জানানো হয়। দেখুন, সহজ পাঠের নন্দনে চলছিল নাকি চলেনি তা মানুষ মনে রাখবে না। মানুষ সিনেমাটা মনে রাখবে। তবে হ্যাঁ, নন্দন যেটা করল তা নন্দনের ইতিহাসে কলঙ্ক হয়ে থাকবে। আজ আমার সিনেমার সঙ্গে হয়েছে। পরে অন্যজনের সঙ্গে করবে।
যে সব সিনেমার জন্য আপনার সিনেমাটি হল পেল না। কোথাও না কোথাও কানাঘুষো শোনা যায় যে আপনার সিনেমা পলিটিকসের শিকার হয়েছে। তারপরে আবার পরে 'সহজ পাঠের গপ্পো'র স্পেশাল স্ক্রিনিং হল। সৃজিতের মত পরিচালক বলছেন, 'আমি মানস মুকুলের সমসাময়িক বলে গর্বিত' সেটার জন্য কী বলবেন?
মানস মুকুল- আমার একটা জিনিস খুব মনে হয়, এই যে সিচুয়েশন সৃজিতদা (সৃজিত মুখোপাধ্যায়) পাশে দাঁড়ালেন, আসলে এটাই তো হওয়া উচিত। একটা বাংলা সিনেমা যারই হোক, রাম, শ্যাম, যদু, মধু, আল্টিমেটলি সেটা তো আমার মাতৃভাষার ছবি। এটা যখন বাংলার বাইরে যখন যাচ্ছে, তখন তো সেটাকে বাংলা সিনেমা হিসাবেই পরিচিত পায়। সেটা গোটা বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য গর্বের। এক্ষেত্রে সৃজিতদা (সৃজিত মুখোপাধ্যায়) শিবুদারা (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) যেটা করলেন সেটাই হওয়া উচিত। এটা খুব ভালো লেগেছে।
নুর, সামিউল দের কাস্টিং করার জন্য শুনেছি অনেক কাঠখড় পোয়াতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
মানস মুকুল- দেখুন, আলমের বাড়ির ক্ষেত্রে তুলনমূলক কম সমস্যা হয়েছিল। আসলে নুর, সামিউল দুজনেই তো খুব গ্রামের। ওদের বাড়ির লোকজনের কাছে সিনেমার শ্যুটিং বলতে বিশাল কোনও ব্যাপার। কেউ পিছনে ছাতা ধরছে, গাড়ি করে নামছে, সামনে কফি এগিয়ে দেওয়ার লোক থাকছে, এইরকম আরকি। সে জায়গায় যে একজন ডিরেক্টর, মানে আমি নুর, সামিউলকে স্কুটি করে ঘোরাচ্ছি, খাবার খাইয়ে দিচ্ছি, বৃষ্টিতে ভিজে স্কুটি করে গিয়ে ভিজে জামা পরেই নুর, সামিউলকে মাঠে নিয়ে গিয়ে অভিনয় শিখিয়েছি। সেটাই সামিউলের বাড়ি কাছে একটা অবিশ্বাসের জায়গা ছিল। ওদের মনে একটা খটকা ছিল, যে সত্যিই সিনেমা তো, নাকি অন্যকিছু!
আর নুরের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছিল সেটা ওর গ্রামের লোকেরা ওর বাড়ির লোকেদের বলেছিল ওরা সিনেমার নামে নিয়ে গিয়ে কিডনি কেটে নিয়ে বেচে দেবে। তাই প্রথমটা বোঝাতে সমস্যা হয়েছিল।
প্রথমে তো এত কষ্টে বাড়ির লোকেদের রাজি করালেন, বিশ্বাসই করছিল না, তারপর কীভাবে নুর, সামিউলকে আপনার বাড়িতে এনে ওরাঁ ৭-৮মাস রাখতে দিল?
মানস মুকুল- প্রথমে নুর, সামিউলের সঙ্গে ওদের বাড়ির লোকেকেও আমি একটা ফ্ল্যাটে এনে রেখেছিলাম। তবে ওদের বাড়ির লোকেদের কেউ চাষ করেন, কেউ বা দর্জির কাজ করেন, তাই কিছুদিন পর ওরা বলল, দাদা এখানে থাকলে তো আমাদের কাজকম্ম লাটে উঠবে। যদিও প্রথমটা ওনারা ওদের ছেড়ে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন। ছেড়ে যাওয়ার সময়ও ওরা বারবার বলেছেন, দাদা দেখবেন।
তারপর পুরো বিষয়টাই পাল্টে গেল। ৭-৮ মাস পর যখন ওরা বাড়ি যাচ্ছে তখন গাড়িতে উঠে নুর, সামিউল হাউ হাউ করে কেঁদেছে। এমনকি আমার মা যখন ওদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন 'কী রে তোদের বাড়ির কথা মনে পড়ে না?' তখন ওরা বলেছিল, 'না।'
এই সাফল্যের পর নুর, সামিউলের বাড়ির লোকেদের কী প্রতিক্রিয়া?
মানস মুকুল- জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর সামিউল আলমের বাবা ফোন করে বলেছিলেন, 'আমি ফোন করলাম কিন্তু কী বলব বুঝতে পারছি না। আমি এখনও যেন বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমার ছেলে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।'
আর তাছার গ্রামে তো এখন নুর সামিউল তো ব্যাপারই আলাদা। ওরা বলছে ওদের যে যেখানে দেখছে হৈহৈ করছে, কিংবা টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
ছোটু তো শুনেছি, তোতলা ছিল সেটা কাটালে কীভাবে? কী জাদু করলেন, যা ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড এনে দিল।
মানস মুকুল- ও তোতলা বলতে একেবারেই তোতলা ছিল এমনটা নয়, তবে আটকে যেত। ওকে জোরে জোরে স্পষ্ট উচ্চরণ করিয়ে রিডিং পড়াতাম।
আচ্ছা, নুর সামিউলকে খুঁজে পেয়েছিলেনই বা কীভাবে?
মানস মুকুল- আসলে, ছবিতে বাংলা ভাষার যে ডায়ালেক্ট (আঞ্চলিক বাংলা ভাষা) ব্যবহার করা হয়েছে। ওই ভাষাতেই স্ক্রিপ্টটা লেখা। তাই ঠিক করেছিলাম ওই অঞ্চলেরই কাউকে দিয়ে অভিনয় করাবো। দরকার হলে অভিনয় শিখিয়ে অভিনয় করাবো। সেসময় প্রচুর গ্রামে ঘুরে দেগঙ্গার ভিতরে বেলপুর গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে যাই। সেখানকার প্রধান শিক্ষককে বলি একটা সিনেমা করছি, তার জন্য দুটো বাচ্চা লাগবে। তখন সেই স্কুলের প্রধানশিক্ষক স্কুলের আমবাগানে সব বাচ্চাদের বের করে দাঁড় করিয়ে দিলেন। তখন দেখলাম ছোট্ট একটা বাচ্চা, চোখ দুটো খুব সুন্দর উঁকি মেরে দেখছে। আমি তাকাতেই ও পালালো। ওকে ডেকে দিতে বলতেই সবাই গিয়ে নুরকে ডেকে আনল। এভাবেই ওকে পাওয়া।
আর সামিউল আলমকেও একইভাবে বেড়াচাপা দেউলিয়া উচ্চবিদ্যালয় বলে এক স্কুল থেকে পেয়েছিলাম। সামিউলও আমায় দেখে পালিয়েছিল। পরে আমি দৌ়ড়ে গিয়ে ধরে এনেছিলাম।
অনেকে এই সিনেমার সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালির মিল পাচ্ছেন। এমন এক পরিচালকের সিনেমার সঙ্গে তুলনা, সেটা নিয়ে আপনি কী বলবেন?
মানস মুকুল- দেখুন, পথের পাঁচালি ও সহজ পাঠের মূল গল্প একই লেখকের লেখা। বিভূতিভূষণের লেখা, সেখানে বিষয়গত কিছু সাদৃশ্য আছে। দুই সিনেমাতেই গ্রামবাংলা, দারিদ্র রয়েছে। সেখান থেকেই মিল। তবে এমন নয় যে 'সহজ পাঠের গপ্পো' 'পথের পাঁচালি' থেকে অনুপ্রাণিত। যেহেতু দুটো গল্পের 'সোল' এক তাই এমনটা মনে হয়েছে। যদি 'সহজ পাঠের গপ্পো' ১৯৫৫-তে তৈরি হত আর 'পথের পাঁচালি' ২০১৭-তে তৈরি হত, তাহলেও এই একই মিল থাকত।
'সহজ পাঠের গপ্পো'-র শ্যুটিং কোথায় হয়েছে?
মানস মুকুল- বোলপুরের বেশকিছু গ্রামে। যদিও গল্পটা হাসনাবাদ, বসিরহাট, ওইসমস্ত এলাকার ডায়ালেক্টে লেখা। মানে গল্পের পটভূমি ওই অঞ্চলের। অথচ বোলপুরের শ্যুটিং, সেখানকার আর্কিটেকচার একেবারেই আলাদা। কিন্তু দেখে কি কোথাও মনে হয়েছে (প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে) যে এটা বসিরহাট, হাসনাবাদের দিকে শ্যুট করা নয়? আসলে সবই ভেবে চিন্তে তৈরি করা, খুঁজে খুঁজে, খুব সচেতন ভাবে।
এমনকি ছোটু, গোপালের যে বাড়িটা দেখেছেন ওটাও কিন্তু বোলপুরেরই বাড়ি। ওটা আবার ভেঙে নতুন করে তৈরি করিয়েছিলাম। বসিরহাট, হাসনাবাদের ধাঁচে তৈরি করা।
এখানে শ্যুটিং না করে বোলপুরে কেন করলেন?
মানস মুকুল- বোলপুরের সৌন্দর্য। তালসারি।
শ্যুটিং এর কোনও মেমরেবেল ঘটনার কথা যদি শেয়ার করেন...
মানস মুকুল- গোটা ছবি তৈরির মধ্যে একটা খুব টাচি একটা ঘটনা আপনার সঙ্গে শেয়ার করি। সিনেমার প্রথম দিকে একটা জায়গা আছে না, যেখানে ছোটু গোপালকে কাঁদতে কাঁদতে বলছে, 'টুম্পার মা এইল সেদিনকে মা কাঁনদি কাঁনদি বলতিল টুম্পার মারে, বাবা নাকি আর বাঁচবে না।' এই জায়গাটা ডাবিং-এর সময় একদম হচ্ছিল না। ওই ফিলটা একদম হচ্ছিল না। আমি অনেক চেষ্টা করেও নুরকে দিয়ে কিছুতেই বলাতে পারছিলাম না।
তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, যে তুমি কাকে কাকে বেশি ভালোবাসো? ও বলল, তোমাকে।
তখন বললাম তাহলে ভাবো, আমি ওই উঠোনে মরে পড়ে আছি। তাহলে কি তোমার কষ্ট হবে। আপনি বিশ্বাস করবেন না, জাস্ট কিছুক্ষণের মধ্যেই ওর মুখটা কালো হয়ে গেল। ও কাঁদতে শুরু করল। আর এই যে ভালোবাসাটা, এটা আমার কাছে সত্যিই একটা বড় পাওনা।
আচ্ছা, বিভূতিভূষণের গল্প। গ্রাম বাংলা, নিস্পাপ দুই শিশুর শৈশব। তার মাঝে কন্ডোম কে বেলুন নিয়ে খেলা করার মত ওরম একটা দৃশ্য ঢোকালেন, বিতর্কের ভয় লাগেনি?
মানস মুকুল- দেখুন, গল্পে তো অনেক কিছুই নেই। না, এমন কিছু মনে হয়নি। সিনেমার প্রয়োজনেই দেখানোর চেষ্টা করেছি। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে স্ক্রিপ্টকে আমি আমার মতো করে লিখেছি। আমার কাছে একটাই কথা, যেটা দেখানো হয়েছে, সেটা বাস্তব কিনা।
এই ছবি বানানোর পর স্বভাবতই এক্সপেক্টেশন বেড়েছে। সেখানে দাঁড়িয়ে কী ধরণের ছবি বানানোর কথা ভাবছেন?
মানস মুকুল- (একটু হেসে) এরপরেও একটা অন্য ধরণের ছবি বানানোর কথা ভাবছি। সেটা নিয়ে রিসার্চ ওয়ার্ক শুরু করেছি।
কী ধরণের?
মানস মুকুল- সেটা এখনই কিছু বলতে চাই না।, দেখা যাক কতদূর কী করতে পারি।
আপনার পছন্দের কোন অভিনেতা, বা অভিনেত্রীকে নিয়ে পরবর্তীকালে কাজ করতে চান?
মানস মুকুল- পছন্দের অভিনেতা, অভিনেত্রী তো অনেকেই আছেন। তবে যাঁরা আগে কখনও অভিনয় করেননি তাঁদেরকে দিয়ে কাজ করাতে চাই। শিখিয়ে নিতে চাই। যেমন নুর, সামিউউ, স্নেহা।
(পাল্টা প্রশ্ন করে) কোথাও কি মনে হয়েছে ওরা অভিনয় করেনি আগে। আর এমনি অনেক অভিনেতা, অভিনেত্রীই রয়েছে যাদেরকে ঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। (মানে আমার মনে হয়)। আমার ভীষণ পছন্দের অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন হৃত্বিক চক্রবর্তী, কৌশিক গাঙ্গুলি। এছাড়াও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও আছেন।
আর অভিনেত্রীদের মধ্যে জয়া এহসান, সোহিনী সরকার, প্রিয়াঙ্কা সরকার রয়েছেন। আর একটু সিনিয়ারদের মধ্যে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, সুদীপ্তা চক্রবর্তী।
কোন পরিচালকের কাজ অনুপ্রেরণা দেয়?
মানস মুকুল- দেখুন, সবার সব ছবি তো ভালো লাগে না। তবে অনেকের অনেক ছবিই ভালো লেগেছে। সৃজিতদার (সৃজিত মুখোপাধ্যায়) '২২ শ্রাবণ', 'হেমলক সোসাইটি', শিবুদার (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) 'ইচ্ছে', কৌশিক গাঙ্গুলির 'শব্দ' অনিন্দ্যদার (অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়) 'ওপেন টি বায়োস্কোপ'।
আর বলিউডে অনুরাগ কাশ্যপ, ইমতিয়াজ আলি, বিশাল ভরদ্বাজ-এর সিনেমা ভালো লাগে।
আচ্ছা আপনার কোনও ড্রিম প্রজেক্ট ?
মানস মুকুল- হিন্দি ছবি বানানো। আমির শাহরুখকে দিয়ে একসঙ্গে কাজ করা।
সহজ পাঠের গপ্পো বানানোর আগে মানস মুকুল কী করতেন?
মানস মুকুল- অভিনয় করতাম, যখন সেটা ভালো লাগল না, একটা এনজিও-তে পড়াতাম। এই আরকি
এই যে এত অভিনন্দন তাদের উদ্দেশ্যে কী ?
মানস মুকুল- এই যে অসংখ্য মানুষ 'সহজ পাঠের গপ্পো'-কে ভালবেসেছে। বা আমি যে স্বপ্নটা দেখেছিলাম সেটা পূরণ হয়েছে, আর তা মানুষের জন্যই। সেজন্য আমি ভীষণ ভীষণ কৃতজ্ঞ। সবার ভালোবাসা পাচ্ছি, এটাই তো ভালোলাগা।