‘দলবদল শব্দটাই বলতে চাই না, সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি’
শর্মিষ্ঠা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায়
শর্মিষ্ঠা গোস্বামী চট্টোপাধ্যায়
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে হলদিয়ার মঞ্চে দেখা যাবে না সাংসদ-অভিনেতা দেবকে। টুইটে সৌমিত্র খাঁয়ের আমন্ত্রণকে বিনীত প্রত্যাখ্যান করলেন ঘাটালের সাংসদ। তিনি লিখেছেন,
‘একসময়ে আমরা একই দল করতাম। তুমি অন্য দলে গেছো, তোমাকে অভিনন্দন।কিন্তু বিশেষ কারণবশত আমি ঐ অনুষ্ঠানে হাজির থাকতে পারছি না।’
রাজ্য রাজনীতিতে দলবদলের হিড়িকে গা ভাসাচ্ছেন রাজনীতিবিদ থেকে অভিনেতা। সেই ব্যান্ড ওয়াগনে কি দেখা যাবে দেবকে? জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন অভিনেতা-সাংসদ।
প্রশ্ন- আপনি হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে থাকছেন?
দেব- একটু অপেক্ষা করুন, জানতে পারবেন।
প্রশ্ন– কতক্ষণ?
দেব– আপনাদের বড় তাড়হুড়ো। খানিক পরেই ফোন করে বললেন, টুইটটা পাঠিয়েছি দেখে নিন।
প্রশ্ন- চলতি বিধানসভায় তৃণমূলের হয়েই প্রচারে নামবেন?
দেব– এমন প্রশ্ন করছেন কেন? দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)তো জানিয়েছি যে, মার্চ মাস থেকে আমি সময় দেব।
প্রশ্ন- আসলে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে আপনাকে দেখা যায়নি, তাই হয়ত অনেকের মনেই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে। তাছাড়া জোর জল্পনা যে, বিজেপির কাছ থেকেও আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। আর কেকের উপর চেরি হিসাবে আজ সৌমিত্র খাঁয়ের টুইট
দেব– দেখুন, প্রথম কথা আমি রাজনীতিতে আসতে চাই নি। দিদির অনুরোধে এসে পড়েছিলাম। পরপর দুবার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছি। এতে দলের কর্মীদের অবদান সবথেকে বেশি। আই অ্যাম নট কাট আউট ফর পলিটিক্স। হ্যাঁ, সমাজের জন্য কাজ করতে চাই। লকডাউনের সময়ে আপনারা সবাই দেখেছেন যে,প্রায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রশাসনের সহায়তায় আমার সাধ্যমত আমি করেছি। আমার এই সেল্ফটাকেই আমি চিনি।তার উপরেই বিশ্বাস রাখি।
প্রশ্ন- তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে গেলেন, সেই শুভেন্দু-রাজীব সহ অন্যান্যরা বারবার কাজ করতে না পারার এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলেছেন। শুভেন্দু অধিকারী তো আপনার নাম করেও সমালোচনা করেছেন.......
দেব- দেখুন, দলবদল শব্দটাই আমি বলতে চাই না, আমার সকলের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক রয়েছে।কেউ যদি দল থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও যান, তাহলে সেটা তাঁর ব্যাপার। তাই বলে মানুষটার সঙ্গে তো আর সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় না। আমি বরাবরই সৌজন্য, ভদ্রতার আঙ্গিকেই রাজনীতিকে দেখেছি।মানুষের পাশে থাকার রাজনীতিতে বিশ্বাস রেখেছি। সাধারণ মানুষের পাশে যে কোনও ক্যাপাসিটিতে থাকতে পারলেই আমি খুশি। এই যে নির্বাচনী জনসভায় আমাকে দেখার জন্য ভিড় হয়, সেটা তো বড়পর্দার নায়ক দেবকে দেখার জন্যই হয়। তাই আমার তো মনে হয়, আমার সেই দর্শকদের বিনোদনের দায়িত্বও আমার। বাংলা ছবিকে এমন স্কেলে নিয়ে যেতে হবে, যাতে হলে দর্শক ফেরেন। তবেই আমার মত মানুষের রাজনীতিতে আসার একটা অর্থ থাকে।
প্রশ্ন- আপনার কাছে কি অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের অফার আছে? একটু স্পষ্ট করে বলবেন প্লিজ
দেব- এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। আমার টুইটটা মন দিয়ে পড়ুন। আমার যা বলার আমি সেখানেই বলে দিয়েছি।
প্রশ্ন- তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে গেলেন না কেন?
দেব- আরে, খেয়ে পরে বাঁচতে হবে তো! গোটা লকডাউন পর্বে বাড়িতে বসে। এখন টিভির একটা রিয়েলিটি শো করছি। সবে ‘গোলন্দাজ’ ছবির শুটিং শেষ করলাম। ‘টনিক’ ছবির ডাবিং হবে। আপনি জানেন, কয়েকটা বিজ্ঞাপনও করলাম। আমি দিদিকে আগেই জানিয়েছিলাম যে সেদিন আমার শুটিং ছিল। তাই যেতে পারি নি।
প্রশ্ন- আচ্ছা বেশ, আপনি যদি দলাদলির রাজনীতিতে বিশ্বাস নাই করেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর হলদিয়ার অনুষ্ঠানে যাবেন না কেন? ঐ অনুষ্ঠানে তো মুখ্যমন্ত্রীও আমন্ত্রিত
দেব- প্রথমত, আমার কাছে এখনও অবধি কোনও আমন্ত্রণ আসে নি। দ্বিতীয়ত, সৌমিত্র খাঁ সাংসদ, যথেষ্ট বন্ধুও। ওঁর কাছে খবর যেতে পারে যে, হয়ত আমি যাচ্ছি। আমি সেই ভুলটা ভাঙানোর জন্যই ওঁর টুইটের উত্তর দিলাম। তাছাড়া আমার কাজ আছে। আগে থেকে অন্য কাজে সময় দিয়ে রেখেছি। একথা সত্যি যে, আমি দলবদলের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। সৌজন্যের রাজনীতিতেই বিশ্বাস করে এসেছি। আমার অসুবিধা হলে, আমি দলের ভিতরে কথা বলি। দিদিকে সরাসরি বলি। সব আলোচনায় সন্তুষ্টি হয় না, আর আমি এও বুঝি যে তা সম্ভবও নয়।
প্রশ্ন- মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে একেবারে প্রথম থেকেই ঝাঁপ দিতে হবে দেব, মিমি, নুসরত, সোহমকে। সেভাবেই তাহলে শিডিউল সাজাচ্ছেন?
দেব- আমি কী করছি, সেটা সময়মত দেখতেই পাবেন। জানাব আপনাকে...........