Kaushik Sen, কৌশিক সেন: ছবি বয়কটের ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, ধর্মের অংশটা বিশেষ বড় নয়। ধর্ম নিয়ে যাঁরা বলছেন তাঁদের সংখ্যাটা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক। সম্প্রতি হৃতিক রোশনের বিজ্ঞাপন নিয়ে যেটা হল তার কোনও মানে নেই। বিজেপি আসার পর ধর্মটা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে কিন্তু সবাই ধর্মের কারণে করছে এমনটা নয়। কিছু মিশ্র ব্যাপার রয়েছে। যেমন এটা একটা ছোঁয়াচে হুজুগ। উদাহরণস্বরূপ হলো কেকে ও রূপঙ্কর বিতর্ক। রূপঙ্কর যেটা বলেছেন সেটার প্রতিবাদ সকলে করেছে কিন্তু সেটার পর যেটা হল সেটা কিন্তু কেকে-র প্রসঙ্গে থাকল না। যাঁরা রূপঙ্করের প্রয়াত মা, স্ত্রী ও কন্যাকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করছে তাঁরা যে কেকে-র প্রতি ব্যথিত তা কিন্তু নয়। ইস্যুটা ছাড়িয়ে কে কতটা রূপঙ্করকে গালাগালি করবে সেই পর্যায়ে চলে গেল। রূপঙ্করের সহশিল্পীরা ভদ্রভাষায় তাতে ইন্ধন জোগালেন। আমরা সবাই আসলে এই হুজুগটার ভেতরে আছি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Boycott Trend: এখন তো সত্যজিৎ ‘গণশত্রু’ বানাতেও বেগ পেতেন! বহিরাগত বয়কটে সরব টলিউড


সিনেমার ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় হয়েছে যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবার ভেতরে ধারণা হয়েছে আমিও তো রিল তৈরি করছি, আমিও সেলিব্রিটি, আমিও পরিচালক, আমিও গান লিখতে পারি, একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে ক্রিটিক হয়ে যাচ্ছি। আমি অন্যকে সেলিব্রেট করতে যাব কেন? আমিই তো সেলেব্রিটি। আরেকটা দিক হল অর্থনীতি, টাকা খরচ করে কেন হলে যাব? দুদিন পরেই তো ওটিটিতে চলে আসবে। এবং শেষ যে বিষয়টি রয়েছে তা হল, চলচ্চিত্রের মানুষেরা আমরা সারাক্ষণ নিজেদের বিনোদনের অংশ বলেই বারবার আওড়ে গেছি। খেয়াল করে দেখবেন, পুরো লকডাউন জুড়ে টলিউডের খুব কম শতাংশ অভিনেতারা কনস্ট্রাকটিভ কাজ করেছে। বেশিরভাগ রিল বানিয়েছে, নাচছে, গাইছে, যোগব্যায়াম করছে। সবাই ভাবছে এরা তো খুব আনন্দে আছে, আসলে অভিনয় যে একটা সাধনা, তার চর্চা কোথায়? এটা থেকে একটা ধারণা জন্মেছে যে কেউ অভিনয় করতে পারে। মিডিয়াও প্রশ্নে ১৫ শতাংশ ছবি নিয়ে জিগ্গেস করে, বাকিটা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন। এটা অন্য কোনও সেক্টরে হয় না।


আরও পড়ুন:Boycott Trend: ‘বহিরাগত’ বয়কট কালচারে কলুষিত টলিউড, ‘বিসমিল্লাহ’-‘ধর্মযুদ্ধ’র পর টার্গেট ‘লক্ষ্মী ছেলে’!


জনমানসে অভিনয় শিল্পের প্রতি শ্রদ্ধা কমছে, বাকিটা হিন্দুত্ববাদীদের এই বয়কট ডাক ছুঁতো। আমার আসলে ভেতরে না যাওয়ারই ইচ্ছে। গোয়েন্দা ছবি, এমনি গল্প নিয়ে ছবি হাইলাইট করতে করতে আমরা ভুলেই গেছি যে সিনেমা আসলে সমাজ ও রাজনীতির প্রতিফলন। ফলে আমার কোনও টান তৈরি হয় না। থিয়েটারে কিন্তু এটা হচ্ছে না। আমাদের হ্যামলেটের ছটা শোই ছিল হাউজফুল। কারণ থিয়েটার দেখার অন্য কোনও রাস্তা নেই আরেকটা হল সাধারণ মানুষের ধারণা যে, থিয়েটারের জন্য অনুশীলন দরকার। এখনও পর্যন্ত থিয়েটার আমাদের সমাজের সমস্যা ও রাজনীতিকে প্রতিফলিত করছে। সেই কারণে থিয়েটারের দর্শক মুখ ফেরায়নি কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ছবির দর্শক মুখ ফিরিয়েছে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)