Madan Mitra : ঐন্দ্রিলাকে দেখতে হাওড়ার হাসপাতালে মদন মিত্র
অসুস্থ ঐন্দ্রিলা শর্মা, হাসপাতালে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন অভিনেত্রী। তাঁর সুস্থতা কামনা করে প্রার্থনা করছেন অনুরাগীরা। শনিবার ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে পৌঁছোন মদন মিত্র। ঐন্দ্রিলার পরিবার ও চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তবে শুধু মদন মিত্রই নন, ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দেখা করতে এই কয়েকদিনে হাসাপাতলে অনেকেই গিয়েছেন বলে খবর।
Madan Mitra, Aindrila Sharma, শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায় : অসুস্থ ঐন্দ্রিলা শর্মা, হাসপাতালে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন অভিনেত্রী। তাঁর সুস্থতা কামনা করে প্রার্থনা করছেন অনুরাগীরা। শনিবার ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে পৌঁছোন মদন মিত্র। ঐন্দ্রিলার পরিবার ও চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তবে শুধু মদন মিত্রই নন, ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দেখা করতে এই কয়েকদিনে হাসাপাতলে অনেকেই গিয়েছেন বলে খবর।
এদিন হাওড়ার হাসপাতালে মদন মিত্রকে কালো ধুতি পাঞ্জাবিতে দেখা যায়, সঙ্গে পরেছিলেন নীল জওহর কোট এবং পায়ে স্নিকার্স। মদকে ঘিরে ছিল কঠোন নিরাপত্তা বেষ্টনী।
আরও পড়ুন-পাশে অরিজিৎ! সব্যসাচী আশার কথা শোনালেও ঐন্দ্রিলা এখনও ভেন্টিলেশনে...
আরও পড়ুন-অগুনতি মানুষের ভালোবাসায় মিরাকল, ফিরে এলেন ফাইটার ঐন্দ্রিলা
শুক্রবার রাতেই ঐন্দ্রিলার প্রেমিক, অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী জানিয়েছিলেন, ঐন্দ্রিলা ভালো আছেন। তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে, ভেন্টিলেশন সাপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন অভিনেত্রী। তবে শনিবার সকালে হাসপাতাল সূত্রে এল অন্যরকম খবর। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, ঐন্দ্রিলা এখনও ১০০% ভেন্টিলেশনেই রয়েছেন। ওষুধ দিয়ে তাঁর রক্তচাপ বজায় রাখার চেষ্টা চলছে। তবে ওষুধের মাধ্যমে তাঁর রক্তচাপ এখনও স্থিতিশীল রয়েছে। তাঁর জিসিএস কোমাস্কোর এখনও ৫, অর্থাৎ গভীর কোমায় রয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই কলকাতা নিউরো সাইন্স এবং SSKM-এর স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন ঐন্দ্রিলাকে।
যদিও শুক্রবার রাতে ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্য নিয়ে সুখবরই দিয়েছিলেন সব্যসাচী চৌধুরী। জানিয়েছিলেন, ভেন্টিলেশন সাপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। সে মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা একপ্রকার সাপোর্ট ছাড়াই রয়েছেন বলে লিখেছেন তিনি। লিখেছিলেন, 'কয়েক হাজার মানুষের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জন্য এতখানি লেখা প্রয়োজন ছিল। একটু কষ্ট করে পড়ে নিও। পরশুদিন সকালে ঐন্দ্রিলার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, চোখের সামনে দেখলাম ওর হার্টরেট ড্রপ করে চল্লিশের নিচে নেমে তলিয়ে গেলো, মনিটরে ব্ল্যাঙ্ক লাইন, কান্নার আওয়াজ, তার মাঝে ডাক্তাররা দৌড়াদৌড়ি করছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে হৃদস্পন্দন ফের ফিরে এলো বিভিন্ন সাপোর্টে, হার্টবিট ১২০। তারপরই কে যেন একটা অদৃশ্য বালিঘড়ি উল্টো করে ঝুলিয়ে দিলো, ঝুরো বালির মতন সময় ঝরে পড়ছে, সাথে স্থিরভাবে একটা একটা করে হার্টবিট কমছে, কমছে রক্তচাপ, কমছে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস। ডাক্তাররা জবাব দিয়েছেন, হসপিটালের নিচে পুলিশ পোস্টিং, বিভিন্ন বিশিষ্ট মানুষ এসে সমবেদনা জানাচ্ছেন, কিছু উত্তেজিত ইউটিউবার এবং মিডিয়ার লোকজন নিচে ঘোরাঘুরি করছেন। শেষ চেষ্টার জন্য অন্য হাসপাতালের এক নামকরা নিউরোসার্জনকে ডেকে আনা হলো, তিনি খানিক নাড়াচাড়া করে জানালেন যে “ও চলে গেছে অনেক আগেই, শুধুশুধু এইভাবে আটকে রাখছেন কেন? এমনিতেও কালকের মধ্যে সব থেমেই যাবে। লেট্ হার গো পিসফুলি”। রাত বাড়লো, দাঁতে দাঁত চিপে একটা ছোট্ট অসাড় হাত ধরে বসে আছি, চোখদুটো অনেক আগেই ডাইলেটেড হয়ে গেছে, একটা করে বিট কমছে আর অসহায়তা বাড়ছে, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আগেই দেখা করে গেছে। লোকজন মাঝেমধ্যেই ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে যে ‘আজ রাতেই হবে? নাকি সকালে আসবো?’
সব্যসাচী আরও লেখেন, 'ইতিমধ্যে ফেসবুকের কল্যাণে কারা যেন মাঝরাতে ছড়িয়ে দিয়েছে যে ঐন্দ্রিলা আর নেই। বানের জলের মতন হুহু করে ফোন ঢুকতে শুরু করলো, সৌরভ শুটিংয়ে বাইরে গেছে, দিব্য একা সামলাতে পারছে না। অগত্যা ঠেকা দেওয়ার জন্য আমি পোস্ট করতে বাধ্য হলাম, মিনিট কুড়ির মধ্যে আবার সব শান্ত। সকাল থেকে রক্তচাপ কমতে শুরু করলো, ওর বাবা-মা কে ডাকলাম, বাকিদের খবর দিলাম। গতকাল আর বাধা দিইনি কাউকে, সারাদিন ধরে কাছের মানুষরা এসেছে, ওকে ছুঁয়েছে, ডুকরে কেঁদেছে। কত স্মৃতিচারণ, কত গল্প। বিকেলের পর দেখলাম হাত, পা, মুখ ফুলছে ঐন্দ্রিলার, শরীর ঠান্ডা। হার্ট রেট কমতে কমতে ৪৬, বিপি ৬০/৩০। আগের দিনের ডাক্তারের কথাটা কেবলই আমার মাথায় ঘুরছিলো, ওর শরীরটাকে এভাবে আটকে রাখার জন্য নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে, থাকতে না পেরে ওর মাকে বললামও যে এত কষ্ট আর দেখতে পারছি না, কি দরকার ছিল এত কিছু করার, শান্তিতে যেত। মুখে বলছি বটে, কিন্তু ছাড়তে কি আর পারি, মায়ার টান বড় কঠিন। ঠিক রাত আটটায় যখন আমি বিমর্ষমুখে নিচে দাঁড়িয়ে, হঠাৎ হাত নড়ে ওঠে ঐন্দ্রিলার। খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়ে দেখি হার্টরেট এক লাফে ৯১, রক্তচাপ বেড়ে ১৩০/৮০, শরীর ক্রমশ গরম হচ্ছে। কে বলে মিরাকেল হয় না? কে বলে ও চলে গেছে? এক প্রকার অনন্ত শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ছিটকে ফিরে এলো মেয়েটা। গেছে বললেই ও যাবে না কি, যেতে দিলে তো যাবে। এই মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা একপ্রকার সাপোর্ট ছাড়াই আছে, এমন কি ভেন্টিলেশন থেকেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আগে ক্লিনিক্যালি সুস্থ হোক, নিউরোর কথা পরে ভাববো।'