১. অমিতাভ বচ্চন: বুড়ো হাড়ের ভেলকি কী একেই বলে? যুগের পর যুগ এভাবে নিজেকে বদলে চলা! মান্ধাতা আমল থেকে আজ পর্যন্ত নিজেকে ক্রমাগত শান দিয়ে চলা.. বিস্ময়বোধক চিহ্ন কম পড়ে যাবে খুব বেশি কিছু দেখতে গেলে। পুলিশ থানায় অপেক্ষারত এক লোলচর্ম বৃদ্ধ। শরীরে বয়স, তবু জর্জরিত নন। মনে একটাই লক্ষ্য, প্রিয় নাতনি অ্যাঞ্জেলার আততায়ীকে খুঁজে বের করা। অ্যাংরি ইয়ং ম্যান থেকে পাওয়ার অফ ওল্ড ম্যান-অভূতপূর্ব এই ট্রান্সফরমেশন। রুপোলি পর্দা যেন তাঁর ঘরবাড়ি। সারা শরীর জুড়ে শীত, তবুও তাঁর অভিনয় হাড়-কাঁপিয়ে দেয়। পিকুর ভাস্কর ব্যানার্জির চেয়ে একটু বেশি বৃদ্ধ। ওয়াজির ছবির চরিত্রের সঙ্গে মিল অনেকটাই। মিল খুঁজে সময় নষ্ট না করে, বুড়োটাকে দেখুন। লঝঝড়ে স্কুটার আরোহী, ঘোলাটে চোখ, ফুঁপিয়ে কান্না, নির্বাক দৃষ্টি.. ভুলেই যাবেন এটা অভিনয় কি না!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২. নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি ও সব্যসাচী চক্রবর্তী- প্রথমজন বহুল প্রকাশিত। দ্বিতীয়জন অপ্রকাশিত, সারপ্রাইজ প্যাকেজ। নওয়াজ এই মুহূর্তে বলিউডের মিডাস টাচ। জলের মতো মিশে যান চরিত্রের পাত্রে। পুলিশের চাকরি থেকে পাদ্রি হয়েছেন তিনি। বাইকে চড়ে হাওড়া ব্রিজে ধরে তীব্রগতিতে বেরিয়ে যাওয়া, হঠাত্ ঘুম ভেঙে উঠেই চমকপ্রদ কোনও তথ্য জানতে পারা, এসবের মধ্যেই তেড়েফুঁড়ে বেরয় সূক্ষ্ম অভিনয়টা। সব্যসাচীর চরিত্র যথার্থ কারণেই অপ্রকাশিত। গোটা ঘটনাটা তিনিই ঘটাচ্ছেন। তাঁর মুখের ভাঁজই কথা বলে, অতিরিক্ত অভিনয় প্রয়োজন পড়েনি। অভিজ্ঞতাই তাঁকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।


৩. ঋভু দাশগুপ্ত ও তুষারকান্তি রায়- যে ছবিতে ভারতের সবচেয়ে নামী তারকা অভিনেতার সমাবেশ, সেখানে এই পরিচালক-ক্যামেরাম্যান এই মেলবন্ধনটা জরুরি ছিল খুব। হরিসাধন দাশগুপ্তর নাতি ঋভু দাশগুপ্তের কাছ থেকে সেই খোলা মনটা পাওয়া গেল। ক্যামেরার উঁকিঝুঁকি, যা থ্রিলার ছবির ক্ষেত্রে ডানহাতের কাজ, সেটা দারুণ করে দেখালেন। প্রথম কাজ বলে অমিতাভের উপর নির্ভরতা বড্ডই বেশি। ক্রিয়েটিভিটি পাওয়া যায় স্ক্রিপ্টে অনেকটা না-বলা কথায়। এই দুজনের কাছ থেকে প্রত্যাশা রইল আরও নতুন কিছুর, বিরাট কিছুর। অচিরেই তাঁরা পারবেন।


৪. বিদ্যা বালান- বিদ্যা এবং বুদ্ধি দুটোর মিশেল। আর রেললাইনের ট্র্যাক ধরে দৌড়নোটা জাস্ট ভোলা যায় না। শক্তিশালী অভিনেতা অতিথি হয়েও যদি এতটাই কনট্রিবিউট করেন, তাহলে নায়িকা হয়ে কতটা করতেন। এ ছবিতে নওয়াজের সঙ্গে বিদ্যার একটা বুদ্ধিদীপ্ত প্রেম সম্পর্ক আছে। বহুকাল যা পর্দায় দেখা যায়নি। বিদ্যা বলেই এমনটা সম্ভব। তুড়ি মেরে গোবেচারাদের তাড়ানো! সব্যসাচীকে জেরার মুখে নাজেহাল করা। ইনি এ ছবির হিরো বললেও চলত।


৫. রাতের কলকাতা- শ্বাস নিন বুক ভরে। এমন আলোকময় কলকাতায় ট্রাম চলছে। ট্রামের ভেতর বচ্চন-বাবু। কখনও মেট্রোয়, কখনও বাজারে ইলিশমাছে। রাতের আলো ঠিকরে পড়ছে চশমার কাঁচে। গলি জুড়ে অল্প আলো। এই শহরের ভূত ও ভবিষ্যত্‍ ক্যামেরায় দেখে নেওয়া। তিন ছবিতে আসলে কোন তিনজন, কে প্রধান, কে অপ্রধান এ সব প্রশ্ন ছেড়ে বরং রাতের কলকাতাকে দেখুন। থ্রিলার ছবির আঁতুড়ঘর এটাই।