Shah Rukh Khan Birthday, সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: স্বপ্ন দেখতে কে না ভালোবাসে! সেই হাজারও স্বপ্ন নিয়েই মুম্বই পাড়ি দেন অনেক যুবক যুবতী। কেউ এখানে এসে ব্যর্থ হন, কেউ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন, কেউ কেউ আবার নিজেই হয়ে ওঠেন আস্ত একটা প্রতিষ্ঠান। তবে এই শহরে যেমন আছে গ্ল্যামারের ঝলকানি, সেরকমই এখানকার অলিতে গলিতে লুকিয়ে আছে ব্যর্থতার, হারিয়ে যাওয়ার, স্ট্রাগলের এমন কাহিনী যা ডার্ক থ্রিলারের থেকে রহস্যময়। তবে যাঁর নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে তিনি এসবের তোয়াক্কা করেন না। যেমন মায়ের মৃত্যুর পর মাত্র ১৫০০ টাকা হাতে নিয়ে দিল্লি থেকে মুম্বইয়ে পা রেখেছিলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে শাহরুখ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

একটা সামান্য নামকে নেমপ্লেট করে তোলার কঠিন যুদ্ধে বেশি কিছু না ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। অভিনয়ের প্রতি প্রেম, চরম আত্মবিশ্বাস আর মানসিক জোর নিয়ে এমন এক শহরে পা রাখলেন যেখানে তাঁর কোনও পরিজন নেই। প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও এই স্বপ্ন দেখার সাহস পান না অনেকেই। কিন্তু তিনি তো সেই ফিলগুড স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, যাঁর নাম 'শাহরুখ খান'। আশ্চর্য তাঁর খোয়াবনামা। অধিবাস্তব তাঁর জীবন কাহিনি। ধীরে ধীরে বিশ্বায়নের দুনিয়ায় সারা পৃথিবীতে ভারতীয় সিনেমার, সংস্কৃতির বাহক হয়ে উঠলেন তিনি। বিশ্বের দরবারে সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের অন্য নাম হয়ে উঠলেন শাহরুখ খান। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে তাঁর অতি সাধারণ নামকে স্বর্ণাক্ষরে লিখেছেন দিল্লির মধ্যবিত্ত পরিবারের এই ছেলে, যা এখন অস্বীকার করার ক্ষমতা ইতিহাসেরও নেই। 


আরও পড়ুন-Shah Rukh Khan Birthday: ফ্যানেদের জন্য সারপ্রাইজ! এবছর জন্মদিনেই বড়পর্দায় ফিরছেন শাহরুখ খান


নব্বইয়ের নয়া সময়ে দর্শক ভারতীয় পৌরুষের ধারণাকে নতুন ছাঁচে দেখতে চাইছিল। সে প্রেমে ব্যর্থ রোমান্টিক দিলীপ কুমার নয়, আবার অ্যাংরি ইয়ং ম্যান অমিতাভও নয়। তাহলে? ক্রমে নির্মিত হল এক ধারণা, যার নাম শাহরুখ। যার প্রচ্ছদ বিশ্বায়ন নির্ধারিত, সত্তা ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতির। আরিয়ন হয়ে যে চ্যালেঞ্জ জানায় গুরুকুলকে, যে দিওয়ানা বাজিগর আবার একই সঙ্গে গড়ে তোলে তাঁর স্বদেশ। সুখস্বপ্ন হয়ে ধরা দিলেন তিনি পর্দায়। বাস্তব হয়েও তিনি স্বপ্নের অধিক।


তিনি যে অভিনেতা হতে পারেন পরিবারের কারোরই সেই ভরসা ছিল না। কিন্তু তিনি তো জেদি তাই স্কুল জীবন থেকেই অভিনয়ে হাতেখড়ি করে নিয়েছিলেন নিজেই। শুধুমাত্র তাঁর মা ভরসা রেখেছিলেন তাঁর উপর। গর্ব করে সকলকে বলতেন, 'ছেলে আমার দিলীপ কুমার হবে।' দিল্লি থেকে মুম্বই এসে আজিজ মির্জার অফিসে টেবিলের নিচে রাতে ঘুমাতো যে ছেলেটা আজ তাঁর ঘুম ভাঙে মুম্বইয়ে সমুদ্রের পাড়ে ২০০ কোটি টাকার বাংলোয়। এটা স্বপ্নের আখ্যান নাকি বাস্তব, গুলিয়ে যায় সবটাই। তাঁর চেহারা হিরোসুলভ নয় বলে তাঁকে ফিরিয়েছেন অনেক প্রযোজক। ছোটপর্দা দিয়েই কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। কিন্তু যিনি রাজা হতে এসেছেন তাঁকে দমিয়ে রাখা কি এতো সহজ! তাই কালের নিয়মেই শুরু হল তাঁর উথ্থান। সেকেন্ড হিরো হিসাবে সিনেমার দুনিয়ায় পা রাখলেও একের পর এক হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়ে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনিই বক্সঅফিসের 'কিং'। তাই তো তিনি হাসির ছলে বলতে পারেন যে, ‘আপনি খুব ভালো হতে পারেন, আপনি সেরা হতে পারেন কিন্তু আমি তার থেকে আরেকটু ভালো’। এমনকী বলিউডে ৩০ বছর কাটিয়েও তিনি বলেন ‘এখন আর নিজেকে সেরা আমি বলি না কারণ সারা পৃথিবী সেটা মানে’। তবে শুধুই কি সাফল্য, ব্যর্থতাও এসেছে। কিন্তু সেই ব্যর্থতাকেই পাথেয় করে এগিয়ে চলেছেন শাহরুখ, পর্দার অপ্রতিরোধ্য 'বাদশা'।


আরও পড়ুন-Sonali Chakraborty-Shankar Chakraborty: যদি তনুবাবুর কথায় রাজি হত, রুনুর জীবনটাই বদলে যেত | Exclusive


আজও তাঁকে ঘিরে উন্মাদনায় এতটুকু ঘাটতি পড়েনি। শুধুমাত্র তাঁদের স্বপ্নের নায়ককে এক ঝলক দেখার জন্য গতবছর জন্মদিনেও অনুরাগীদের ঢল নামে মন্নতের সামনে। গত বছর ফ্যানেদের সঙ্গে দেখা করতে মন্নতের বাইরে আসেননি তিনি। মন ভেঙেছেন অনুরাগীদের। কিন্তু তিনি তো শাহরুখ যিনি বলেন আমার দর্শকই আমার খুদা। সেই খুদাকে অসন্তুষ্ট করেন কী করে। তাই যাঁরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন বাইরে তাঁদের জন্য পাঠিয়েছিলেন খাবার ও জল। নাই বা দেখা হল, তাঁর এই ব্যবহারে মুগ্ধ ছিল ফ্যানেরা। তাই বুধবারও তাঁর ৫৭তম জন্মদিনে মন্নতের সামনে ভিড় জমাবেন ফ্যানেরা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন শুধু অপেক্ষা বড়পর্দায় তাঁর ফেরার। দীর্ঘ ৪ বছর পর ২০২৩ সালে একসঙ্গে তিনটি ছবি নিয়ে শাহরুখ ফিরছেন বড়পর্দায়। অপেক্ষায় দিন গুনছে অগুনতি দর্শক।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)