রণিতা গোস্বামী : বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের পাতে পড়েছে 'রেনবো জেলি'।  সূর্যের সাতরঙের জাদুতে বদলে গেছে খাবারের স্বাদ।  সাতরঙা স্বাদেই আপাতত মজে আছে বাংলা সিনেমার দর্শকরা। কেমন যেন একটা ম্যাজিক হয়ে গেছে। হল থেকে যাঁরাই বের হচ্ছেন তাঁরা কমবেশি প্রায় সকলেই ঘোরের মধ্যে ৪ টি শব্দ আওড়াচ্ছেন। 'সূর্যের সাতরং, সাতরং, সাতরং'। এই রামধনু জেলি কী যে জাদু যে ছড়াল, সকলেই কেমন ঘোঁতন, পরী পিসি আর গণ্ডারিয়ার দুনিয়ায় গিয়ে পৌঁছে গেল। এ এক অদ্ভত রূপকথা। সকলেই আপাতত টাইম মেশিনে করে সেই দুনিয়াতেই রয়েছে। থুড়ি, সকলেই যে পৌঁছেছেন তেমনটা নয়, সিনেমা হলের এক্সিবিটর (হল কর্তৃপক্ষ)-দের ক্ষেত্রে বোধহয় এই জাদু মন্ত্র বিশেষ কাজ করেনি। তা না হলে, 'রেনবো জেলি'র মত একটা সিনেমা যেটি দর্শকদের মনে এভাবে রং ছড়িয়েছে, তা কীভাবে ২৫ হলে মুক্তি পাওয়ার ১ সপ্তাহের মধ্যে  মাত্র ৪টি হলে বাঁচিয়ে রাখা হয়?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এ প্রশ্নটা অবশ্য আমার নয়, দর্শকদের। যাঁরা সৌকর্য ঘোষাল পরিচালিত 'রেনবো জেলি' দেখেছেন তাঁদের। সকলের মুখে এখনও পর্যন্ত শুধুই প্রশংসাই শুনেছি।  যাঁরা এখনও পর্যন্ত সিনেমাটি দেখে উঠতে পারেননি, তাঁরাও সকলের মুখে প্রশংসা শুনে ছবিটি দেখে নিতে চাইছেন। তবে সমস্যা হল সিনেমা হল। এই মুহূর্তে মাত্র ৪টি হলে সিনেমাটি চলছে। তাই দেখতে চাইলেও সমস্যা তো হচ্ছেই। 



সিনেমাপ্রেমী সকলের এখন একটাই প্রশ্ন, তবে কি সিনেমা চলার জন্য ভালো কনটেন্টই যথেষ্ঠ নয়? সিনেমার হল পাওয়ার জন্য স্টার, বড় ব্যানার এসবই আখেরে প্রধান হয়ে দাঁড়ায়? তাহলে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মের ভবিষ্যৎ কী? রেনবো জেলিতে সে অর্থে কোনও স্টার নেই। এখানে স্টার বলতে মহাব্রত বসু (ঘোঁতন)। আর রয়েছেন অনুমেঘা বন্দ্যোপাধ্যায় (পপিন্স)-এর মত অপরিচিত ছোট্ট তারকারা। তবে যাঁরা সিনেমাটি দেখছেন তাঁরা তো বলেই ফেলছেন যে যেকোনও বড় ব্যানারের সিনেমার সঙ্গে পাঙ্গা নেওয়ার ক্ষমতা 'রেনবো জেলি'র আছে। এই ছবিটির শক্তি এর বিষয়বস্তু, মৌলিকতা। তবে এবিষয়ে পরিচালক সৌকর্য ঘোষালের সঙ্গে কথা বললে তিনি অবশ্য বিষয়টিকে এভাবে দেখতে নারাজ। তিনি বললেন, '' আমি আশাবাদী। এই সপ্তাহে অনেকগুলি ছবি মুক্তি পেয়েছে। শুধু বাংলা কেন, বেশকিছু হিন্দি সিনেমাও মুক্তি পেয়েছে। তাই শো নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তবে এই সপ্তাহ টা টিকে যেতে পারলে পরের সপ্তাহে হলের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশা রাখছি।''


সৌকর্য ঘোষাল আশা রাখছেন, কারণ তাঁর বিশ্বাস, 'রেনবো জেলি' দর্শকদের মন যেভাবে জিতেছে সেভাবে সিনেমা হলও জিতে নিতে পারবে। 


প্রসঙ্গত, শুধু 'রেনবো জেলি' কেন এর আগে বহু সিনেমার ক্ষেত্রেই এধরনের ঘটনা ঘটেছে। কিছুদিন আগে মানস মুকুল পালের 'সহজ পাঠের গপ্পো'ও প্রথমে ঠিকমত হল পায়নি। পরে অবশ্য সিনেমাহলে ফিরে এসে দীর্ঘদিন জায়গা ধরে রেখে রেকর্ড গড়েছিল। 'রেনবো জেলি'রও সেইজয় হবে বলে আশাবাদী দর্শকরা। যদিও ইতিমধ্যেই  তিমির বিশ্বাস, মীরের মত অনেকেই 'রেনবো জেলি'র পাশে দাঁড়িয়েছেন।