সৌমিত্র সেন 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চলছে 'রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত' ছবির শুটিং। কুমারসাহেব তাঁবু ফেলেছেন জঙ্গলের কোল ঘেঁষে। চলছে পিয়ারিবাইয়ের নাচ গান। চলছে মানে, ধীরে ধীরে সেই সব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়ে উঠছে। নাচের দৃশ্যের কিছু অংশ শুট হয়ে গিয়েছে। ঠিক এই মুহূর্তে তরুণ মজুমদারের মাথায় প্রায় বিনা মেঘে বজ্রপাত। মিসেস সেনকে মানে, সুচিত্রা সেনকে তাঁকে ডায়লগ মুখস্থ করাতে হবে।


'বজ্রপাত' কথাটার একটু ব্যাখ্যা প্রয়োজন। প্রথমদিন সেটে ঢুকেই সুচিত্রা সেন তরুণের অভিন্নহৃদয়বন্ধু দিলীপ মুখার্জীকে নিয়ে নেহাতই মশকরা করেছেন, তাঁকে 'দিলীপ' শব্দের অর্থ জিজ্ঞাসা যেন একটু মিঠে সুরে অপদস্থ করতে চেয়েছেন এবং কথার ছলে আরও নানা ভাবে। ফলে প্রথমদিন থেকেই তরুণ মজুমদার, শচীন মুখার্জী ও দিলীপ মুখার্জী সুচিত্রার থেকে দূরত্ব রক্ষা করে চলছেন, একটু গুটিয়ে থাকছিলেন। খুব দরকার না পড়লে তাঁর সামনেই যাচ্ছেন না। ভয় এই বুঝি নায়িকা তাঁদের নিয়ে হাসি-মশকরা শুরু করে দেন!


কিন্তু তরুণ মজুমদার সেটা এড়াতে পারলেন না। যথারীতি প্রথমদিন ডায়ালগ পড়ানোর কাজ চলছে। মিনিট দশেক কেটেছে কি কাটেনি। এরই মধ্যে সুন্দরী নায়িকার মুখ থেকে বেরিয়ে এল--- 'আপনি বুঝি সব সময় এ-রকম?'
-- 'কী রকম?' তরুণের বিস্মিত প্রশ্ন।
-- 'মুখটা প্যাঁচার মতো করে থাকেন। গুরুগম্ভীর।'


কথা শুনেই তো তরুণের আক্কেল গুড়ুম। তিনি মনে মনে স্থির করে নিয়েছেন, ওদিক থেকে যতই প্ররোচনা আসুক, ফাঁদে পা দেবেন না। ফলে, যেন কিছুই হয়নি এভাবে আবার ডায়ালগ শিটে মন দেন তরুণ। কিন্তু বোঝা যায়, সুচিত্রা আছেন সুচিত্রাতেই। তিনিও যেন চারপাশে অন্য কিছুই চলছে না এই রকম সুরে বলে চলেছেন, 'বলুন না, বলুন না। চিড়িয়াখানায় বাঁদর দেখলেও আপনার যা এক্সপ্রেশন, পূর্ণিমার চাঁদ দেখলেও তাই?'
তরুণ তবু কোনও উত্তর দেন না। শেষে সুচিত্রা বলে ওঠেন, 'বলবেন না তো? ঠিক আছে, বলবেন না। তাহলে আমিও আপনার কাছে ডায়ালগ পড়ব না।  পাতাগুলো রেখে যান, ও আমি নিজেই পড়ে নেব'। 


শুনে যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে তরুণের। তিনি পাতাগুলি মিসেস সেনের ঘরে রেখে সটান বেরিয়ে এলেন সেদিন।     


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)  


আরও পড়ুন: লাল পতাকা জড়িয়ে 'সংসার সীমান্তে' পাড়ি আমৃত্যু বামপন্থী তরুণের