Swastika Mukherjee : `চকোলেট খেয়েছি, ইলেকশন টিকিট কিংবা ঘুষ নয়! তাই বেশ করেছি...`
স্বস্তিকা কার্নিভালের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ছিলেন না ঠিকই, তবে সেখান থেকে ফেরার পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আসতে ভোলেননি। মুখ্যমন্ত্রী সামনে গিয়ে হাত জোড় করে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে দেখা যায় অভিনেত্রীতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও অভিনেত্রীর হাত ধরে কথা বলতে দেখা যায়। তারই কিছু মুহূর্ত নিজের অফিসিয়াল ফেসবুকে পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী। লিখেছেন, `আজ কার্নিভালে আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বহু বছর পর দেখা, উনি একটি চমৎকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এবং কলকাতা পুলিসও খুব ভালো ভূমিকা পালন করেছে। সবসময়ই দিদির অদম্য প্রাণশক্তি এবং জলন্ত ব্যক্তিত্বে সঙ্গে সেখানে থাকাটা মজার ছিল। আসছে বছর আবার হবে।`
CM Mamata Banerjee, Swastika Mukherjee, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো : দুর্গাপুজো কার্নিভালে গিয়ে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য়ই যত আলোচনা। 'উনি তো প্রতিবাদী মুখ, তারপরেও কীভাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়ে হাতজোড় করে নমস্কার করলেন! কেনই বা হাসি মুখে ওঁর হাত থেকে চকোলেট নিলেন?' এমনই নানান প্রশ্নে গত শনিবার থেকে জেরবার স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তার উপর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করার পর সেই ক্ষোভে ঘৃতাহুতি পড়ে। অভিনেত্রীর পোস্ট জুড়ে নানান মন্তব্য করতে থাকেন নেটনাগরিকরা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার জবাবও দেন তিনি। অবশেষে বিস্তারিত ভাবে নিজের মতামত জানিয়ে রবিবার রাতে ফের একটি লম্বা পোস্ট করেন স্বস্তিকা।
নিজের পোস্টে স্বস্তিকা সাফ বক্তব্য, 'চকোলেট নিয়েছি, ঘুষ তো নিইনি।' অভিনেত্রীর কথায়, ''কাল রাত থেকেই চলছে তাই ভাবলাম কথাগুলো বলা দরকার। আমি একটা ক্লাবের সাথে #carnival গেছিলাম, এই প্রথমবার। ৯৫ টার ও বেশি ক্লাব যেখানে participate করেছে, সেই সমস্ত প্যান্ডেলে হাজার হাজার মানুষ ঠাকুর দেখতে গেছেন, সেই সমস্ত ক্লাব আমাদের রাজ্যের। কালকেও উপচে পরা ভীড় ছিল। রাজ্যের কি খারাপ অবস্থা সেটা ভেবে কেউ বাড়িতে বসে পুজো boycott করেনি। CM এর সঙ্গে দেখা হওয়ায তাঁকে নমস্কার করে বিজয়া জানানোটা ভদ্রতা, সৌজন্য। আমায় দুটো চকলেট দেওয়াটা ওনার ইচ্ছে, সেটা খেয়ে নেওয়াটা আমার। চকলেট নিয়েছি ইলেকশন টিকিট নয়, চকলেট খেয়েছি মোটা টাকার ঘুষ নয়। আমরা একটা সভ্য দেশে বাস করি, বর্বর নই। কাল দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলেও একই ভাবে নমস্কার করব কারণ সেটাই ঠিক। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর personality কে আমি শ্রদ্ধা করি। তার মানে রাজনৈতিক মতবিরোধিতার সঙ্গে আপোষ করা নয়। যেটা অন্যায় তা নিয়ে নিশ্চই বলব কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত বিষয় নিয়ে আমায় জিহাদ ঘোষনা করতেই হবে নাহলেই আমার মেরুদণ্ড ধ্বসে পরবে এমন কোনো দাসখত আমি লিখিনি। আর আমার ধ্যান ধারণা বিবেক বিচার আপনাদের কথায় ওঠা নামা করেনা। পরে আবার কোনো অনুষ্ঠানে যদি honourable CM এর সঙ্গে আমার দেখা হয় আমি আবারও ওনাকে নমস্কার জানাব এবং উনি চকলেট দিলে নেব এবং খাব। অসভ্য হওয়ার জন্য যে শিরদাঁড়াহীনতা লাগে সেটাও আমার নেই। তাই বেশ করেছি।''
আরও পড়ুন-'প্রতিবাদী মুখ ভেবেছিলাম, আপনিও চটিচাটা!' স্বস্তিকা বললেন...
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
প্রসঙ্গত, শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ছবি পোস্ট করে নানান খারাপ কথা শুনতে হয়েছে স্বস্তিকাকে। এমনকি কেউ কেউ অভিনেত্রীকে 'চটিচাটা', 'মেরুদণ্ডহীন', 'বিকিয়ে গিয়েছেন' বলে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। কেউ লেখেন, 'আপনিও চটিচাটা হয়ে গেলেন, আমরা আপনাকে প্রতিবাদ মুখ ভাবতাম। তেলটা মারতেই হল'। কেউ লেখেন, 'আমরা ভাবতাম, আপনার সাহস আছে।' এক ব্যক্তি লিখেছেন, 'লজ্জাবোধ নেই। চোরেদের নেত্রীর সঙ্গে বসছেন।' স্বস্তিকা অবশ্য তখনই সেই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে লিখেছিলেন, 'বসিনি দাদা, শুভ বিজয়া বলে নমস্কার করে চলে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রী বলে কথা, কতবছর পর দেখা হল, নমস্কারটুকু তো করব।' কেউ আবার লিখেছিলেন, 'দিদি, টেট এর ধরনা মঞ্চে গিয়ে পুজার আনোনদো থেকে অনেক দূরে থাকা মানুষ গুলোর পাশে থাকলে বেশি ভালো বাসা পেতেন। অবশ্যই এটা আপনার ব্যাক্তিগত চয়েস।' তার উত্তরও দিয়েছিলেন স্বস্তিকা। বলেছেন, 'আমি মানুষের পাশে যেভাবে থাকার ঠিকই থাকি, সবটা তো ফেসবুকে পোস্ট হয়না তাই জানতে পারেন না, আর জানানোরও প্রয়োজন বোধ করি না। তাই বলে এত বড় একটা উদযাপন সেখানে হাজার হাজার মানুষ গেছেন, আমার যাওয়াটা ভুল মানতে পারলাম না। আমাদের রাজ্যের অনেক মানুষ ওখানে গেছে ঠাকুর দেখতে। আমিও গেছি। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি ঢোকানোর দরকার নেই।'
তবে তারপরেও আলোচনা বন্ধ হয়নি। তাই ফের একবার নিজের ভাবনা, ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের কারণ স্পষ্ট করেন অভিনেত্রী।