জেল ফেরত Porimoni-কে তাড়িয়ে দিল বাড়িওয়ালা, কলকাতার তিক্ত স্মৃতি হাতড়ালেন Taslima
গোটা ঘটনায় `ষড়যন্ত্র`র ছায়া দেখছেন তসলিমা। পরীমণির প্রসঙ্গ ধরেই টেনে এনেছেন তাঁর নিজের কথা।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ২৬দিন জেলে কাটানোর পর বুধবার জামিনে ছাড়া পেয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী পরীমণি (Pori Moni)। তবে জেল থেকে বের হয়েও রেহাই নেই। প্রতিবেশীদের অভিযোগে অভিনেত্রীকে বাড়ি থেকেই উৎখাত করেছেন তাঁর বাড়িওয়ালা। অসহায় পরীমণির প্রশ্ন 'এখন আমি কোথায় যাব?' কঠিন পরিস্থিতিতে ফের একবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। গোটা ঘটনায় 'ষড়যন্ত্র'র ছায়া দেখছেন তসলিমা। পরীমণির প্রসঙ্গ ধরেই টেনে এনেছেন তাঁর নিজের কথা।
একসময় বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তসলিমা(Taslima Nasrin) কিন্তু এই বাংলাও ছাড়তে হয় তাঁকে, ছিল খোদ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ। সেসময় ঠিক একইভাবে পরীমণির মতোই অসহায় বোধ করেছিলেন লেখিকা। তাঁর কথায়,
''মনে পড়ছে, কলকাতার সেই দিনগুলোর কথা। ৭ নম্বর রওডন স্ট্রিটে ডাক্তার দেবল সেনের বাড়িতে আমি তখন ভাড়া থাকি। ২০০৭ সাল। পুলিশ কমিশনার এসে জানিয়ে যাচ্ছেন আমাকে দেশ ছাড়তে বলছেন মুখ্যমন্ত্রী, দেশ যদি আপাতত না-ও ছাড়ি, রাজ্য আমাকে আজ বা কালের মধ্যেই ছাড়তে হবে। দেশের দরজা বহুকাল বন্ধ। ইউরোপ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে প্রাণের টানে আর ভাষার টানে আশ্রয় নিলাম, আর আমাকে কিনা এই আশ্রয়টিও ছাড়তে হবে, কোথাও তো আর ঘর বাড়ি নেই আমার, যাবো কোথায়!''
আরও পড়ুন-দিনের পর দিন, রিমান্ডে রেখে পরীমণিকে ধর্ষণ করা হচ্ছে না তো? প্রশ্ন তুললেন Taslima
তসলিমা (Taslima Nasrin) তাঁর লেখায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন প্রয়াত লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sunil Gangopadhyay) বিরুদ্ধেও। তিনি লিখেছেন, ''সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যখন ফোন করে বললেন আমাকে রাজ্য ছাড়তেই হবে, বুঝলাম যাদের উচিত ছিল পাশে দাঁড়াবার, তারাই পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। কলকাতা তো দেখিয়ে দিয়েছে লেখকেরা কী করে আরেক লেখকের বই নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়, লেখকেরা কী করে আরেক লেখকের সর্বনাশ করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।'' তসলিমার আরও অভিযোগ, ''চারদিক থেকে যখন অন্ধকার নেমে আসছে, তখন আমার বাড়িওয়ালা আমাকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছিলেন! সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রীই বাড়িওয়ালাকে বলেছিলেন ওই নোটিশটি দিতে। ষড়যন্ত্র কতটা ভয়ংকর হতে পারে, তা সেদিন হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম।'' তসলিমার (Taslima Nasrin) কথায়, ''পরীমণির অসহায়তা আমি অন্তর দিয়ে অনুভব করছি।'' তবে তাঁর বিশ্বাস, ''পরীমণির শত্রু যেমন কম নয়, অনুরাগী শুভানুধ্যায়ীও তেমন কম নয়, তারা এই দুঃসময়ে তার পাশে দাঁড়াবে, আমার বিশ্বাস।''
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেই নারী স্বাধীনতা ও পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে গিয়ে বহুবার সওয়াল করেছেন তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasrin)। এমনকি নুসরত জাহানের অন্তঃসত্ত্বা হওয়া নিয়ে যখন জোর চর্চা শুরু হয়, সেই প্রথম থেকেই সাংসদ, অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে একাধিকবার সুর চড়িয়েছেন তসলিমা, এমনকি বাংলাদেশের পরীমণি বিতর্কেও প্রথম থেকে সরব হয়েছেন তিনি।