নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনার প্রকোপে আজ গোটা বিশ্বে ত্রাহি ত্রাহি রব। কীভাবে এই মহামারী থেকে গোটা বিশ্ব রক্ষা পাবে, তা এখনও পর্যন্ত প্রায় কারোরই জানা নেই। তবে মহামারীর সঙ্গে এমন লড়াই মানুষের প্রথম নয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরপরই ভয়াবহ 'স্প্যানিশ ফ্লু'-র মতো মহামারী প্রাণ কেড়েছিল বহু মানুষের। এদেশে সেই মহামারী 'বম্বে ফ্লু' বা 'যুদ্ধজ্বর' নামে পরিচিত। ১৯১৪ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত সেই ভয়াবহ মহামারীর সময় মানুষের সেবায় ব্রতী হয়েছিল খোদ রবীন্দ্রনাথ। সম্প্রতি সেই বিষয়টি নিয়েই বাচিক শিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের অভিনব উদ্যোগ ''যুদ্ধজ্বর ও রবীন্দ্রনাথ''।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এসপিসিক্রাফটের সঙ্গে যৌথ ভাবে হাফ পেন্সিল ও ঘোষ কোম্পানির প্রযোজনায় ১২ জুন, শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ভিডিওটি। যেখানে উঠে এসেছে রবি ঠাকুরের রচনা, গান, সমকালীন পরিস্থিতির কথা। ভিডিওটির সমগ্র বিষয় নিয়ে গবেষণা করেছেন শ্রীমতী চৈতালি দাশগুপ্ত। এবিষয়ে Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কমকে চৈতালী দাশগুপ্ত জানান, ''এটার বিষয় ভাবনা সুজয়ের (সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়)। এটা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমি বিভিন্ন বইপত্র ঘেঁটেছি। সেই বইগুলি থেকেই বিভিন্ন তথ্য আমি পাই। সেসময় রবীন্দ্রনাথ ঠিক কী করেছেন, ভারতবর্ষের অবস্থাই বা কী হয়েছিল সেবিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।''


আরও পড়ুন-পরিচালক নন, সুন্দরবনের দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসায় ডাক্তার কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়



আরও পড়ুন-বাংলাদেশের পরিচালক ফারুকীর 'নো ল্যান্ড'স ম্যান'-এ আর রহমান, থাকছেন নওয়াজউদ্দিন


চৈতালী দাশগুপ্ত বলেন, '' ১৯১৮-র ওই সময় রবীন্দ্রনাথ মোট ১৫টি গান লিখেছিলেন, তার মধ্যে তিনটে গান ব্যবহার করেছি। এটা লিখতে গিয়ে অন্য এক রবীন্দ্রনাথকে আমি আবিস্কার করেছি, যিনি হলেন সেবক রবীন্দ্রনাথ। যে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষেধক বানিয়েছে মানুষ সুস্থ করতে। বোলপুরের গ্রামের মানুষ ও ছাত্র-ছাত্রী, যাঁদের এই রোগ হয়েছিল তাঁদের তিনি প্রতিষেধক বানিয়ে খাওয়ান। মহামারী ঠাকুরবাড়িতে অন্দরেও ঢুকে পড়েছিল। সেসময় শান্তিনিকেতনে এক ড্যানিশ মহিলা পড়াতে এসেছিলেন, তাঁর সূত্রেই জ্বরটা সেখানে আসে। তিনি শান্তিনিকেতনের উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। আর ওই উৎসবে যাঁরা ছিল, তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেরই যুদ্ধজ্বর হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের পুত্রবধূ প্রতিমাদেবীও আক্রান্ত হয়েছিলেন। সকলে সুস্থ হয়ে উঠলেও ওনার বড়দার ছোট পুত্রবধূ মারা যান। সেটা নিয়ে অনেক তোলপাড় হয়। রবীন্দ্রনাথের ভীষণই কাছের অজিতকুমার চক্রবর্তী মারা যান। রবীন্দ্রনাথের ছোটমেয়ে মীরা দেবী বাইরে ছিলেন, উনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই বিষয়গুলিই এই তথ্যচিত্র উঠে এসেছে।''


তিনি আরও বলেন, ''তবে সেই রোগটা সেসময়ও এসেছিল বিদেশ থেকে। এবারও তাই। মাঝে ১০২ বছরের তফাৎ। আমরা মন্বন্তরে মরিনি। তাই এই মহামারী থেকেও আমরা বের হয়ে আসতে পারবো। এখনও যেমন সেই অর্থে কোনও ঔষুধ বের হয়নি, বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিষেধক ব্যবহার হচ্ছে। সেই সময়ও রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং এমনই বিভিন্ন প্রতিষেধকের ব্যবহার করেছিলেন।''


প্রসঙ্গত, 'যুদ্ধজ্বর ও রবীন্দ্রনাথ'-এর ভাষ্যপাঠে রয়েছেন চৈতালি দাশগুপ্ত ও সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্য়ায়। সৃজনে রাজা দাশগুপ্ত, চৈতালি দাশগুপ্ত, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ও সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। সমগ্র ভিডিওটি সম্পাদনা করেছেন উত্তরণ দে। গোটা পরিকল্পনায় রয়েছেন স্বয়ং সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্য়ায়।