রণিতা গোস্বামী: ফের বন্ধ হয়ে গেল প্রিয়া, জয়া, প্রাচী, মেনকা সহ কলকাতার একাধিক সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল। গত অক্টোবরে সরকারি তরফে সিনেমাহল খোলার অনুমতি মিলেছিল। সেই মতোই খুলেছিল হলগুলি। তবে শুক্রবার থেকে শহরের একাধিক হলে ফের তালা ঝুলছে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তবে কেন এমন সিদ্ধান্ত? এবিষয়ে Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের তরফে প্রিয়া সিনেমার মালিক অরিজিৎ দত্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছিল। এবিষয়ে অরিজিৎ দত্ত বলেন, ''আরে এখন তো কোনও ছবি নেই, কী চালাব? লোকজন হচ্ছে না। হল খুলে রাখার খরচ তো আরও বেশি। এটা তো শুধু আমি নয়, অনেক হল কর্তৃপক্ষই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে যে খুশি, তা তো নয়, কিন্তু কিছু করার নেই। সারা দিনে ১০ টা লোক ঢুকলে কী করা যাবে! যতক্ষণ না ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে নতুন গতি আসে, ততদিন হল বন্ধ রাখা হবে।'' 



হল বন্ধ থাকাকালীন কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? এবিষয়ে অরিজিৎ দত্ত বলেন, ''ওটা সমস্যা হবে না। সিঙ্গল স্ক্রিনের ক্ষেত্রে তো আর অনেক কর্মী নেই। নিজেদের মধ্যে অ্যাডজাস্ট করা হবে। অভ্যন্তরীণ যাঁরা কর্মী, তাঁরা বেতন পাবেন। তবে আউট সোর্স-এর ক্ষেত্রে যেমন সিকিউরিটি, হাউস কিপিং স্টাফদের দেওয়া সম্ভব নয়।''



এবিষয়ে পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, ''সিনেমা হল বেশকিছু আবারও বন্ধ হয়ে গেল কারণ, দর্শক আসছে না। কারণ, এখনও হয়ত বন্ধ পরিবেশের মধ্যে মানুষ ঠিক স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন না। এবার প্রশ্ন, তাহলে বিমানে কীভাবে পাশাপাশি বসে যাচ্ছে? রেস্তোরাঁতে ভিড় হচ্ছে। মলেও লোকজন যাচ্ছে না। শুধু অডিটোরিয়ামে লোক যাচ্ছে না। বিমানের ক্ষেত্রে যেটা দেখছি, যে এয়ার সার্কুলেট করা হচ্ছে, তা ভাইরাস মুক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে। আবার, আত্ম সমালোচনার জায়গা থেকে যদি বলি, তাহলে বলব হলের মত কনটেন্টের ছবি এখনও পর্যন্ত মুক্তি পায়নি। যেগুলো বড় ছবি বা যেসমস্ত ছবি মানুষ হলে দেখতে চান, তেমন ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। যেমন দিওয়ালিতে বেশকিছু ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, তা পিছিয়ে গেল। জাতীয়স্তরেও সূর্যবংশী সহ আরও কিছু ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, সেগুলি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, নতুন বছর আমাদের নতুন আশা দেখাবে। কোভিড ভ্যাকসিন এলে পরিস্থিতি বদলাবে।''


আরিন্দম শীল আরও বলেন, ''মানুষ যেমন এই পরিস্থিতির শিকার, তেমন এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজনীতির জায়গাও আছে। আমাদের সবাইকেই একসঙ্গে হয়ে ইন্ডাস্ট্রির জন্য লড়তে হবে।''


OTT-তে এত বেশি সিনেমা মুক্তি কি সিনেমা হলের ক্ষতি করছে বলে মনে হয়?


পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, ''না, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নতুন কনটেন্টের একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। সেটা বরং আরেকটা রাস্তা বলা যায়। এটা কখনওই সিনেমাহলের বিকল্প নয়, কখনও হবেও না। গুলাবো সিতাবো, শকুন্তলা দেবী-র মত যেসব সিনেমা OTT-তে মুক্তি পেয়েছে, সেগুলির কনটেন্ট খানিকটা ডিজিটাল কনটেন্টের কাছাকাছি বলে হয়ত সেটা করা গিয়েছে। যেমন আমি মায়াকুমারী বড় পর্দার কথা ভেবেই করেছি। আবার শবরের শ্যুটিংও হলের কথা ভেবেই করছি। আবার নেটফ্লিক্সের জন্য একটি অরিজিনাল ফিল্ম করছি, সেটা আবার OTT-র জন্যই করা।''


তবে এই পরিস্থিতিতে সিঙ্গল স্ক্রিন, মাল্টিপ্লেক্স সব হলেরই অনেক ক্ষতি হয়েছে সেটা মেনে নিলেন অরিন্দম শীল। 



এই একই বিষয়ে পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি অবশ্য বেশি কথা বলতে চাননি। তিনি বলেন, ''পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়, এটা বুঝতে হবে। সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হওয়ার কারণ হিসাবে সিনেমাগুলো খারাপ বলতে পারেন না। আবার কর্তৃপক্ষ সিঙ্গল স্ক্রিনগুলো চালাতে পারছে না, সেটাও বলতে পারেন না। এটা তো মহামারীর সময়। কাউকে দোষারোপ করা যায় না। এটা deep rooted problem, এটা অন্যভাবে দেখতে হবে।''