ওয়েব ডেস্ক: অবশেষে মুক্তি পেল বহু প্রতীক্ষিত ও আলোচিত অক্ষয় কুমার ও ভূমি পেডনেকারের টয়লেট: এক প্রেম কথা। গ্রামীণ ভারতের একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়। খোলা জায়গায় শৌচকর্মের বিরুদ্ধে সচেতনতা প্রসারে অর্থাৎ কেন্দ্রের স্বচ্ছ ভারত অভি‌যানের প্রচারে এই ফিল্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে আশা প্রকাশ করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে আদপে কেমন হল টয়লেট: এক প্রেম কথা? চলুন দেখে নি...


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ফিল্মের বিষয় 


কেশবকে (অক্ষয় কুমার) ভালোবেসে বিয়ে করে উত্তর প্রদেশের মন্দগাঁওয়ে আসে জয়া (ভূমি পেডনেকার)। নতুন শ্বশুর বাড়িতে এসে ফুলশ‌য্যার পরদিন সকালেই জয়ার ঘুম ভাঙে লোটা পার্টির ডাকে। আর এরপরই ক্ষোভে ফেটে পরে নতুন বৌ জয়া। ‌যুক্তিবাদী জয়া লোটা পার্টিতে নাম লেখাতে নারাজ। 


অথচ আমার দেশের বহু প্রত্যন্ত গ্রামেই এই লোটা পার্টিই চরম তিক্ত সত্যি। ভোরের আলো ফোটার আগে লোটা নিয়ে বেড়িয়ে পরতে হয় বাড়ি মেয়ে বৌদের, মাঠে ঘাটে গিয়ে শৌচকর্ম সারার জন্য। এরপর আর সারাদিন শৌচকর্ম সারার অনুমতি থাকে না মেয়েদের। ‌যদিও পুরুষদের ক্ষেত্রে বিষয়টা কিন্তু আলাদা।  গ্রামে বাড়িতে শৌচালয় বানানোর অনুমতি নেই। কারণ, সেই প্রাচীন কুসংস্কার আচ্ছন্ন ‌যুক্তি, ‌যেখানে রান্নাঘর, ঠাকুর ঘরের সঙ্গে বাড়িতে শৌচালয় থাকতে পারে না। 


এই একই ‌যুক্তি ছিল , মন্দগাঁওয়ের বাসিন্দা কেশবের ছোট ভাই নারু (দিব্যেন্দু শর্মা) এবং বাবার, ‌যিনি একজন কট্টর পণ্ডিত ( সুধীর পান্ডে)। আর তাই স্বভাবতই তাঁদের বাড়িতেও শৌচালয় ছিল না। আর এরই প্রতিবাদে নতুন শ্বশুর বাড়িতে এসে ফেটে পরে নতুন বৌ জয়া (ভূমি পেডনেকার)।  আর এই নিয়েই দ্বন্দ্বের শুরু। বাড়িতে শৌচালয় না তৈরি হলে সে আর ফিরবে না এই বলে শ্বশুরবাড়ি ছাড়ে জয়। আর এরপরই বাড়িতে শৌচালয় বানানোর গুরুত্ব সকলকে বোঝাতে উঠে পরে লাগে কেশব। পুরনো মতাদর্শে বিশ্বাসীদের শৌচালয়ের গুরুত্ব বোঝানো টা মোটেও সহজ ছিল না। বাড়িতে তুলসীমঞ্চের পাশাপাশি মহিলাদের সম্মান রক্ষার্থে টয়লেটের গুরুত্ব কতটা তা বোঝাতে উঠে পড়ে লাগেন কেশব। আর এই নিয়েই তৈরি পরিচালক নারায়ণ সিংহে ফিল্ম টয়লেট: এক প্রেম কথা। 


বিশ্লেষণ
টয়লেট: এক প্রেম কথা প্রথম হাফটা ‌যথা‌যথ লাগলেও দ্বিতীয় হাফটা একটু অকারণেই বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হয়েছে। বিরতির পর সিনেমার বেশকিছু গান বড্ড অতিনাটকীয়। প্রথমার্ধে কেশব ও জয়ার সম্পর্কটা মন কাড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা বিরক্তিকর। তবে সিনেমার গল্প ‌যে সামাজিক বার্তা দিচ্ছে তা অস্বীকার করা ‌যায় না। 


মনোজকুমারের জুতোয় পা গলিয়ে আধুনিক 'দেশভক্ত' হয়ে উঠেছেন অক্ষয় কুমার। এয়ারলিফট্, রুস্তম, জলি এল এল বি ২- র মত বিষয়ধর্মীসিনেমা করেছেন। পরের ছবি প্যাডম্যানও একই ঘরানার। সস্তায় স্যানিটারি ন্যাপকিন ছবির বিষয়বস্তু। এই ছবিতেও অক্ষয় কুমারের অভিনয় মন কেড়েছে। তিনি বয়স লুকোনোর চেষ্টা করেননি। কমিক টাইমিংয়ে বলিউডে অন্যতম সেরা অভিনেতা খিলাড়ি। টয়লেট এক প্রেম কথা-য় সেই ছোঁয়া মিলেছে। অন্যদিকে দম লাগাকে হ্যাঁইসার পর ওজন কমিয়ে ফিরেছেন ভূমি পেডনেকর। 


এই ছবিতেও তাঁর অভিনয় মন্দ নয়। তবে কয়েকটি জায়গায় ভূমি ঝুলিয়েছেন। বাকি অভিনেতারাও চেষ্টা করেছেন। তবে ছবির ডায়লগ বেশ শহুরে ঘরানার। সান্ডাস, শৌচালয়ের মতো শুদ্ধ শব্দের ব্যবহার হয়েছে। উত্তর প্রদেশে একটি গ্রামে এমন শুদ্ধ হিন্দির ব্যবহার হয় না। সে বিষয়টিতে পরিচালক একটু নজর দিতে পারতেন। শোনু নিগমের 'হাস মত পাগলি' গানটি বেশ ভাল। নব্বইয়ের দশকের কথা মনে করিয়ে দেয়। এবার প্রশ্ন ছবিটি দেখবেন? নাচ গান রোম্যান্সের বাইরে একটা অন্য ধরণের বিষয় নির্বাচনের জন্য কুর্নিশ প্রাপ্য পরিচালক ও অভিনেতা অক্ষয় কুমারের‍। সেজন্যই ছবিটি দেখা ‌যেতে পারে। সবমিলিয়ে টয়লেট এক প্রেম কথা পেল ৩/৫।     


আরও পড়ুন, সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল পহলাজ নিহালনিকে