নিজস্ব প্রতিবেদন: 'এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট।' সারা সপ্তাহের একঘেয়েমির পর সপ্তাহান্তে এটুকুই তো বেশিরভাগ মানুষ চায়। তা সে চাকরিজীবী ঘরের কর্তাই হোন কিংবা গৃহবধূ। যে যার মতো নিজের এন্টারটেইমেন্ট খুঁজে নিতে চান।  তবে আপাতত আপনার এন্টারটেইন্ট খোঁজার জায়গা যদি সিনেমাহল হয় তাহলে আপনি পেয়ে যাবেন 'তুমহারি সুলু'র মতো একজন এন্টারটেইনারকেও। সিল্ক স্মিতার বেশ ছেড়ে এবার সুলুর রূপ ধরেই সকলকে আনন্দ দিতে ফিরেছেন বিদ্যা বালান। শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে বিদ্যা বালান অভিনীত পরিচালক সুরেশ ত্রিবেণীর প্রথম ফিল্ম 'তুমহারি সুলু'।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সিনেমার গল্প


''গুড মর্নি ইইইইইইইইইইং মুম্বই, দিজ ইস ওয়ার্লড স্পেস রেডিও। জানে সে পহেলে ইয়ে হ্যায় মেরা আজ কা খয়াল'' - খানিকটা বন্ধুত্ব সুলভ ভঙ্গিতে সুমধুর কণ্ঠে এভাবেই আর জে রূপে হাজির হয়েছিলেন বিদ্যা বালান। 'লাগে রাহো মুন্না ভাই'-তে সেই আর জে বিদ্যাকে বেশ পছন্দ করেছিলেন দর্শকরা। 


আরোও একবার আর জে-র বেশে ফিরলেন বিদ্যা। তবে একটু অন্যভাবে। এবার আর মিষ্টি গলার সুন্দর উপস্থাপনা নয়। গলার স্বরে যৌনতার মিশেল, হাজির 'তুমহারি সুলু'।  
আদপে সুলু ওরফে সুলোচনা ছাপোষা গৃহবধূ। সারাদিন হেঁশেল ঠেলার পর টিভি কিংবা রেডিওর চলা কনটেস্টে অংশ নেয়, পুরস্কার জেতে। আর এটাতেই তাঁর আনন্দ। বিভিন্ন লাকি ড্র কনটেস্ট থেকে ঘরের বেশকিছু জিনিসপত্র ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছে সুলোচনা । একটি রেডিও চ্যানেলের শো-তে সে প্রেসার কুকার জেতেন তিনি।  যদিও ইচ্ছে ছিল একটা টিভি জেতার। এসবের মধ্যে নিজে কিছু করার স্বপ্নও পেয়ে বসে গৃহবধূ সুলোচনাকে। তবে তিনবার দ্বাদশ ফেল হওয়ার বিষয়টা মাঝে মাঝেই বেশ লজ্জা দেয় তাঁকে। কিন্তু 'সুলোচনা পারবে', এই বিশ্বাস নিয়েই একটি রেডিও চ্যানেলে আর জে হান্টে অংশ নিতে যায় সে। 


প্রথমটা শাড়ি পরা সুলচনাকে দেখে রেডিও চ্যানেলের প্রডিউসার তো হকচকিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু অডিশানে কামাল করেন সুলু। তাঁর কামাতুর গলায় অসাধারণ উপস্থাপনা সকলের মন ছুঁয়ে যায়। ব্যাস, কেল্লা ফতেহ্। রাত ১২টা থেকে শুরু হওয়া 'তুমহারি সুলু' শো-এর জন্য নির্বাচিতও হয়ে যান সুলোচনা। আর প্রথম শোয়েই সাফল্য। গৃহবধূ সুলোচনার জীবন বদলে যায় আর জে সুলুতে। 
তবে শুরুটা সুন্দর হলেও মাঝে তো সুলচনার জীবনে ঝড় ঝাপটা আসারই ছিল।  সুলুর এই রাত বিরাতের কাজে বিরক্ত হয় তাঁর নিজের বাবা ও দিদিরা। তাঁকে কেন রাতে এধরণের 'অশ্লীল শো' করার অনুমতি দেওয়া হল? এনিয়ে সুলুর জন্য হাজারও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল তাঁর স্বামী অশোককে (মানব কউল)। মাঝে তাঁর ছেলেকে বহিষ্কার করা হয় স্কুল থেকে। সব মিলিয়ে কখনও হাসি-কান্না, কমেডি সবকিছুর মধ্যে দিয়েই এগিয়েছে সিনেমার গল্প।



বিশ্লেষণ


সিনেমার গল্প প্রথমার্ধে বেশ চিত্তাকর্ষক ভাবে এগোলেও দ্বিতীয়ার্ধে গতি অনেকটাই স্লথ। কখনো অপ্রয়োজনীয়ভাবেই অতিনাটকীয় হয়ে ওঠে কাহিনী। তবে সব মিলিয়ে পুরো ফিল্ম জমিয়ে দিয়েছে আর জে সুলু এন্টারটেইনমেন্ট।


অভিনয়
অভিনয়ের কথায় যদি আসতে হয় সেক্ষেত্রেও এই সিনেমায় সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন বিদ্যা বালান। সিল্ক স্মিতার পর আরও একবার অন্যরকম ভাবে, নতুন অবতারে দর্শকদের এন্টারটেইনার হয়ে উঠেছেন তিনি। বিদ্যার কথা মতো যৌনতা বা সেক্স আসলে বিশেষ অনুভূতি মাত্র। আর সেকথাকেই সিনেমায় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন বিদ্যা। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন  মানব কউল, নেহা ধূপিয়া ও শিশুশিল্পী অভিষেক শর্মাও।  


এছাড়া সাধারণ  অথচ সুন্দর হাস্যরসে ভরপুর চিত্রনাট্য, উপস্থাপন, কোরিওগ্রাফি, মিউজিক সব দিক থেকেই নিজের প্রথম ফিল্মেই ছক্কা হাঁকালে পরিচালক সুরেশ ত্রিবেণী।
সব মিলিয়ে তুমহারি সুলু কে ৫/ 3.5 দেওয়াই যায়।