নিজস্ব প্রতিবেদন: ছুলি হল এক ধরণের চর্মরোগ। ছুলিকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘আর্টিকারিয়া’। ‘আর্টিকারিয়া’ শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘আর্টিকা’ থেকে এসেছে যার অর্থ পুড়ে যাওয়া। ছুলি হলে ত্বকের উপর ফ্যাকাসে লাল বা বাদামী রংয়ের ছোট ছোট ফুঁসকুড়ির মতো ছাপ বা দাগ তৈরি হয়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ছুলি হলে কখনও কখনও ত্বকে জ্বালা বা চুলকানির মতো অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে। মুখে, হাতে, কাঁধে বা পিঠের ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ছুলি সৃষ্টি হয়। চিকিৎসায় ছুলি নিরাময় সম্ভব। তবে এর চিকিত্সা বেশ ব্যায়বহুল। তবে বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়েও ছুলির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই প্রাকৃতিক উপায়গুলি অত্যন্ত কার্যকরী! আসুন ছুলি নিরাময়ের অব্যর্থ ঘরোয়া উপায়গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক...


১) লেবু-চিনির স্ক্রাব: এই পদ্ধতিতে ছুলির দাগ দ্রুত ফিকে হয়ে যায়। একটি লেবু মাঝখান থেকে কেটে নিয়ে অর্ধেক অংশের উপর আধা চামচ চিনি মাখিয়ে নিয়ে ত্বকের ছুলি আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে আলতো করে মিনিট দশেক মালিশ করুন। তার পর জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে সপ্তাহ দুয়েক নিয়মিত ব্যবহার করলে ছুলির সমস্যায় উপকৃত হবেন।


২) লেবুর রস দিয়ে মালিশ: ছুলি সারাতে লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী! লেবুর রসে থাকা বিশেষ উপাদান ত্বকের গাঢ় দাগ দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রস নিংড়ে ছুলি আক্রান্ত অংশে লাগিয়ে ভাল করে মালিশ করুন। ১৫-২০ মিনিট পর সামান্য উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন অন্তত দু’বার এ ভাবে মালিশ করলে দ্রুত ফল পাবেন।


৩) টমেটোর রস: প্রথমে একটি বড় ও পাকা টমেটো নিয়ে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। তার পর টমেটোটিকে ভাল করে চটকে নিয়ে ত্বকের ছুলি আক্রান্ত অংশে মাখিয়ে দিন। এর পর ১৫-২০ মিনিট আলতো ভাবে মালিশ করুন। তারপর জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহারের পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা সাবান ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহ দুয়েক দিনে অন্তত ২ বার এই পদ্ধতি কাজে লাগালে ছুলির দাগ অনেকটাই ফিকে হয়ে আসবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।


৪) পেঁয়াজ: পেঁয়াজে থাকা এক্সফলিয়েটিভ উপাদান ছুলি নিরাময়ের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। একটি বড় মাপের পেঁয়াজ মাঝখান থেকে কেটে নিয়ে অর্ধেক অংশটি নিয়ে শরীরের ছুলি আক্রান্ত অংশে দিনে অন্তত ২ বার মালিশ করুন। যত দিন পর্যন্ত না ছুলির রং ফ্যাকাশে হচ্ছে, তত দিন এটি ব্যবহার করুন।


৫) টক দই: টক দইয়ের সাহায্যেও ছুলির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। টক দইয়ের ল্যাক্টিক অ্যাসিড ছুলি দূর করতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। টাইরোসিনেজ নামের এনজাইম শরীরের মেলানিন ও অন্যান্য রঞ্জকের উপস্থিতির জন্য দায়ি। ল্যাক্টিক অ্যাসিড টাইরোসিনেজ এনজাইমের অতিরিক্ত উৎপাদনকে বাধা প্রদান করে। ফলে ত্বকের হাইপারপিগমেন্টেশন বাধাপ্রাপ্ত হয়। ৩ চামচ টক দই নিয়ে একটি কটন বলের সাহায্যে শরীরের ছুলি আক্রান্ত অংশে লাগান এবং অন্তত  মিনিট পনেরো রাখুন। তার পর সামান্য উষ্ণ জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। দিনে ৩-৪ বার এটি ব্যবহার করতে পারলে ছুলির সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে কমবে ব্রণ-ফুসকুড়ির সমস্যাও।


আরও পড়ুন: ডাস্ট অ্যালার্জিতে কড়া কড়া ওষুধ না খেয়ে কাজে লাগান এই অব্যর্থ টোটকাগুলি


৬) ভেজিটেবল মাস্ক: ২ টুকরো শশা ও ২ টুকরো স্ট্রবেরি নিয়ে একসঙ্গে ভাল করে চটকে নিন। এ বার এর সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ছুলির উপরে লাগিয়ে স্বাভাবিক ভাবে শুকিয়ে নিন। মিশ্রণটি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। ছুলির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং ত্বকের জেল্লা বাড়াতে সপ্তাহে অন্তত চারবার এই মাস্ক ব্যবহার করুন।


এ ছাড়া পেঁপে, বেগুন, আমন্ড তেল, কলা আর পুদিনার মাস্কও ছুলি দূর করার কাজে খুবই কার্যকরী।