নিজস্ব প্রতিবেদন: উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন খুব সাধারণ সমস্যা হলেও কখনও কখনও তা প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনিয়মিত ডায়েট, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক চাপ এবং শরীরচর্চার অভাব— এ সবই উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের অন্যতম কারণ। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, প্রতি বছর ভারতে প্রায় ২ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের কারণে। এই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের এক তৃতীয়াংশই উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

চিকিত্‍সকদের মতে, জীবনযাত্রায় এবং খাদ্যতালিকায় সামান্য কয়েকটি পরিবর্তন আনতে পারলে ওষুধ ছাড়াই উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। কিন্তু কী ভাবে? আসুন এ বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক...


১) উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমেই নুন খাওয়া কমাতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত নুন রক্তে মিশে শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে রক্তচাপ অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকে। শুধু তাই নয়, শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যাও। তাই রান্নায় ছাড়া, খাবার পাতে কাঁচা নুন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে, রান্নাতেও কম নুন দিন।


২) কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম যা রক্তচাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দিনের যে কোনও সময়, সারাদিনে অন্তত একটা কলা খাবার চেষ্টা করুন।


৩) প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ মতে, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মধু অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। ১ কাপ উষ্ণ জলে ১ চামচ মধুর সঙ্গে ৮-১০ ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খেতে পারলে রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।


৪) পুষ্টিবিদদের মতে, কমলালেবুর রসের সঙ্গে ডাবের জল মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খেতে পারলে রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।


৫) উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত তেল আর মশলাদার খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। মশলাদার খাবারের বদলে পাতে বেশি করে সবুজ শাক-সবজি রাখতে পারেন। সিদ্ধ বা সামান্য তেলে রান্না করা সবজি শরীরে ক্যালোরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফাইবার সমৃদ্ধ সবুজ সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফোলেট যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।


৬) ওজন কমাতে আর একই সঙ্গে শরীরের শক্তি বাড়াতে ওটসের কোনও বিকল্প নেই! পুষ্টিবিদদের অনেকে তাই সকালে ওটস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ওটসে খুব কম মাত্রায় সোডিয়াম থাকে। তা ছাড়াও এতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার যা রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।


আরও পড়ুন: ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় কাবু, কমে আসছে হাঁটাচলার গতি? জেনে নিন কী করবেন


৭) তরমুজে রয়েছে ভিটামিন এ, লাইকোপিন, পটাসিয়াম এবং ফাইবার যা উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের মতো সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অ্যামিনো অ্যাসিড এল-সিট্রুলিন সমৃদ্ধ তরমুজ শুধু রক্তচাপই নয়, শরীরের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।


সুতরাং, মেনে চলুন এই কয়েকটি সাধারণ নিয়ম, কিছুটা বদলে ফেলুন জীবনযাত্রার ধরন আর সুস্থ থাকুন ওষুধের সাহায্য ছাড়াই। তবে কারও যদি ডায়াবেটিস বা ওই জাতিয় কোনও সমস্যা থাকে তাহলে এগুলি পরখ করে দেখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।