সুদীপ দে: গোটা বিশ্বের লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। ভারতেও করোনা আক্রান্ত এই মুহূর্তে ২৮ হাজার ৪৬ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৮০৪৬ জন মানুষ। করোনার কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। করোনা থেকে মুক্তির এখনই কোনও উপায় দেখছেন না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর প্রধান টেডরোজ অ্যাডানম ঘিব্রিইয়েসাস। সম্প্রতি WHO-এর প্রধান জানান, এখনই লকডাউন ছেড়ে বেরোনো কোনও দেশের পক্ষেই উচিত নয়। কারণ, বিপদ এখনও কাটেনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এ দিকে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর রক্ত রস বা প্লাজমাকে কাজে লাগিয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তদের সারিয়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিশ্বের একাধিক দেশের অসংখ্য চিকিৎসক, গবেষক। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্লাজমা থেরাপি বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু করোনার চিকিৎসায় এই প্লাজমা থেরাপির উপর এখনই নির্ভরশীল হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO। WHO বলছে, এখনই এ বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাবে না।


WHO জানাচ্ছে, চিকিৎসায় সেরে ওঠা মানেই শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে, এমন প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনও মেলেনি। তাই করোনার চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপির উপর এখনই নির্ভরশীল হওয়া যাচ্ছে না।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর এই মতামতের সমর্থনে মোহালির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ-এর অধ্যাপক, ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডঃ ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোনও ব্যক্তি একবার করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলে তিনি আর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন না, তা একেবারেই নয়। বরং উল্টোটাই হয়েছে। আর্জেন্টিনা, ইতালি এমনকি মহারাষ্ট্রেও একই ব্যক্তির দু’বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে।”



ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৪ দিন বা ২০ দিন নয়, মানব দেহে করোনাভাইরাস ৩৭ দিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। সম্প্রতি ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় এমনই প্রমাণ পেয়েছেন। ফলে এই সময়ের মধ্যে কোনও ব্যক্তি একবার সেরে ওঠার পর কোনও রকম অসতর্কতায় বা দুর্বল শরীরের কারণে ফের করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন।”


তাহলে এই পরিস্থিতিতে প্লাজমা থেরাপি কি ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে?


ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তা হয়তো নয়। কারণ, রক্ত রস বা প্লাজমা সংগ্রহের আগে তা ভাল করে একাধিক বার পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হয়। তাই রক্ত রস বা প্লাজমা থেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। তবে করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি সেরে ওঠার পরও সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। কারণ, কোনও ব্যক্তির এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী ৩৭ দিন পর্যন্ত সংক্রমণের ভয় থেকেই যায়।”


আরও পড়ুন: কোন তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ রূপে বিনষ্ট হয় করোনাভাইরাস? জানালেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞ


এই প্রসঙ্গে ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ল্যানসেট’ (Lancet medical journal) নামের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রের উল্লেখ করে জানান, করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশের পর প্রথম ২০ দিন পর্যন্ত অত্যন্ত সক্রিয় থাকে। ২০ দিনের পর তা ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে। তবে ৩৭ দিন পর্যন্ত সংক্রমণের ভয় থেকেই যায়।