নিজস্ব প্রতিবেদন: ভয়াবহ ভাবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে ( মিউকরমাইকোসিস) আক্রান্ত হওয়ার পরও প্রাণে বাঁচলেন  আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা পার্থসারথি দাস। সঙ্গে ছিলেন আড়াই মাসের গর্ভবতী স্ত্রী। দীর্ঘ দৌড়ঝাঁপ করার পর অবশেষে আগামিকাল সুস্থ স্বামীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন স্ত্রী শান্তা রায়।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২৬ এপ্রিল পার্থসারথি করোনায় আক্রান্ত হন। ১১ মে তার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। স্টেরয়েড দেওয়া শুরু হয়। এরপর একদিন হঠাৎই তাঁর মনে হয়, নাকের ওপর দিয়ে কী যেন একটা চলাচল করছে, কিছুক্ষণ পর থেকেই চোখটা বুজে আসত থাকে।  এরপর থেকে চোখের পাতা আর খুলতে পারছিলেন না পার্থসারথি দাস।


 চোখের ডাক্তার দেখান। ডাক্তারের পরামর্শ শিলিগুড়ির দিশান হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর ১৭ মে জানতে পারেন, পার্থসারথি  ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত।  শিলিগুড়িতে সেই সময় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে চিকিৎসা করার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন বি , পসাকোনাজল ইঞ্জেকশন,  লাইপোজোমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন ওষুধ পাওয়া যাচ্ছিল না। খোলা বাজার অথবা হাসপাতালে সে সময় ওষুধের জোগান ছিল না। তখন রোগীকে কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। 


কলকাতার বি আর সিং হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেখানকার ডাক্তাররা রোগীকে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করেন। ২২ মে মেডিক্যাল কলেজে ইএনটি বিভাগের অধীনে ভর্তি হন। 


ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার পর স্বামীর বাঁচার আশা প্রায় ক্ষীণ হয়ে উঠেছিল স্ত্রী সান্তা রায়ের কাছে। তবু হাল ছাড়েননি। মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয় যথাযথ চিকিৎসা। সেই মাসের শেষ দিকেই বাদ দিতে হয় ডান দিকের চোখটাকে। জানা গিয়েছে, হাই ডায়াবেটিসের রোগী পার্থসারথি। করোনাকালে কিডনিতেও সমস্যা দেখা দেয়। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসায় যে কড়া ওষুধ দেওয়া হয় সেটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও অসুস্থ হয়ে পড়েন পার্থসারথি। ডাঃ বিজন অধিকারি ও ডাঃ সুব্রত মুখার্জি  জানিয়েছেন, রোগী অনেক দেরি করে আসছে। সেক্ষেত্রে আমাদের লড়াইটা অনেক কঠিন হয়ে উঠছে। পার্থসারথির চোখ বাদ দিতে হয়। কিন্তু ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কবল থেকে প্রাণে বেঁচে যান। 


পার্থসারথি জানিয়েছেন, আমার নতুন করে জীবন শুরু হল। প্রাণে বেঁচে গেছি। এটাই আমার কাছে অনেক। কাল বাড়ি ফিরছেন পার্থসারথি। জানা গিয়েছে, স্বামীর চিকিৎসা চলাকলীন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শান্তা রায়ের স্ত্রীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তাররা। এমনকি নিজেদের উদ্যোগে  লাইপোজোমাল অ্যাম্ফোটেরিসিন ওষুধটি নিয়ে আসার বন্দোবস্ত করেন ডাক্তাররা।