নিজস্ব প্রতিবেদন: স্বামীর অনুপস্থিতিতে একাধিক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন স্ত্রী। কখনও পরিচিত, কখনও বা অপরিচিত পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হচ্ছেন স্ত্রী। ঘোর কাটতেই আবার এই সব সম্পর্কের কথা স্বামীর কাছে কুবুল করছেন ওই যুবতী। সম্প্রতি এমনই একটি কেশ এসএসকেএমের ‘ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি’ চিকিৎসকদের হাতে আসে। ‘ইনস্টিটিউট অব সাইকায়াট্রি’-র অধিকর্তা প্রদীপ সাহা বাংলার একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, ওই যুবতী ‘নিমফোম্যানিয়াক ডিজিজ উইথ সাইকোটিক ডাইমেনশন’-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, মাস খানেকের চিকিত্সায় আপাতত সুস্থ ওই যুবতী।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কী এই নিমফোম্যানিয়া? নিমফোম্যানিয়া হল অতিরিক্ত বা অস্বাভাবিক কামাসক্তি। মহিলাদের ক্ষেত্রে এটির নাম নিমফোম্যানিয়া আর পুরুষদের ক্ষেত্রে এ রোগের নাম স্যাটেরিয়াসিস। অস্বাভাবিক মাত্রায় শারীরিক চাহিদা পূরণের জন্য নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসে আক্রান্তরা একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কখনও একের পর এক সম্পর্কে, কখনও আবার একই সঙ্গে একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা।



অনেক সময় এই শারীরিক চাহিদা বা তাকে পূরণের সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন রকমের মাদকও সেবন করেন তাঁরা। অতিরিক্ত বা অস্বাভাবিক এই কামাসক্তি সমাজের কাছে ‘ব্যভিচার’ বা ‘চারিত্রিক দোষ’ বলে বিবেচিত হলেও মনস্তত্ত্ববিদ বা মনরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এটি একটি মানসিক ব্যধি, নাম নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিস।


মার্কিন মনরোগ বিশেষজ্ঞ টিমোথি জে লেগ-এর একটি গবেষণাপত্রের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকার প্রায় ৩ কোটি মানুষ নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসে আক্রান্ত। কোনও ব্যক্তি নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসে আক্রান্ত হলে তা কী ভাবে সনাক্ত করা যাবে, সে বিষয়ে আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশন (American Psychological Association)-এর গবেষকরা এখনও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। কেন এই রোগ মানুষের মনে বাসা বাঁধে আর অস্বাভাবিক বা বিকৃত যৌন আসক্তি তৈরি করে সে সম্পর্কেও তেমন কোনও কারণ নির্দিষ্ট করতে পারেননি তাঁরা।



নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসের লক্ষণ:


১) নিয়মিত ঘন ঘন হস্তমৈথুন,


২) একাধিক যৌন সম্পর্ক, একাধিক যৌনসঙ্গী বা শুধুমাত্র যৌন বাসনা চরিতার্থ করতে সামায়িক ভাবে কোনও সম্পর্কে জড়ানো,


৩) পর্নোগ্রাফির প্রতি অস্বাভাবিক আসক্তি,


৪) অসুরক্ষিত এবং উদ্দাম যৌনজীবনের প্রতি অস্বাভাবিক আকর্ষণ,


৫) সাইবার সেক্স, ফোন সেক্স বা ভিডিয়ো কনফারেন্সে যৌনতায় লিপ্ত হওয়া,


৬) অশ্লীলভাবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে অনাবৃত করার ইচ্ছা,


৭) অন্যকে অনাবৃত অবস্থায় দেখার বা যৌনতায় লিপ্ত হতে দেখার ইচ্ছা ইত্যাদি।


এর সঙ্গেই বেশির ভাগ সময় অপরাধবোধ কাজ করে। তাছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তি বেশির ভাগ সময় উদ্বিগ্ন, অন্যমনস্ক বা অবসাদগ্রস্ত থাকেন।


নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসের চিকিত্সা:


ধ্যান বা যোগাভ্যাস আর নানা রকম ওষুধপত্রের মাধ্যমে এই রোগের চিকিত্সা করা হয়ে থাকে। তবে ওষুধপত্র ছাড়াও ‘রেসিডেন্সিয়াল ট্রিটমেন্ট প্রোগ্রাম’, ‘কগনিটিভ বিহেভিয়েরাল থেরাপি’ কাজে লাগিয়েও নিমফোম্যানিয়া বা স্যাটেরিয়াসিসের চিকিত্সা করেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা।