খোঁজ মিলল নতুন করোনাভাইরাসের; আগের চেয়েও ১০ গুণ বেশি ভয়ঙ্কর ও সংক্রামক! দাবি বিজ্ঞানীদের
যত দিন যাচ্ছে, ততই ভোল পাল্টে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস! এ ভাবে দ্রুত চরিত্র বদলে সমস্যা বাড়বে টিকা তৈরির ক্ষেত্রেও, যা নতুন করে ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২ কোটি ১৮ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এই ভাইরাসে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৯৫ জনের। ভারতেও করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হচ্ছে। প্রতিদিনই ৫৫-৬০ হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ আরও ১০ গুণ বাড়িয়ে দিলেন মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানীরা। কারণ, তাঁরা সন্ধান দিয়েছেন নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের যা বর্তমানে যে ক’টি রয়েছে তার চেয়ে অন্তত ১০ গুণ বেশি সংক্রামক ও ভয়ঙ্কর!
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সেখানকার এক ভারতীয় রেস্তরাঁ কর্ণধারের সংস্পর্শে এসে ৪৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। এই ৪৫ জনের মধ্যে ৩ জনের শরীরে নতুন চরিত্রের করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব লক্ষ্য করেছেন মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানীরা।
এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য অধিকর্তা নূর হিশাম আবদুল্লাহ জানান, করোনাভাইরাসের চরিত্রে এমন কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা যে প্রতিষেধকের আবিষ্কার বা তার প্রভাব এই পরিবর্তিত প্রকৃতির ভাইরাসের উপর কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা নতুন চরিত্রের এই করোনাভাইরাসের নাম দিয়েছেন D614G। তাঁদের দাবি, ভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইন বর্তমানে যে ক’ রকমের করোনাভাইরাসের অস্তিত্বের সন্ধান মিলেছে, তার চেয়ে অন্তত ১০ গুণ বেশি সংক্রামক ও ভয়ঙ্কর!
রবিবার মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য অধিকর্তা তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “সাধারণ মানুষকে এখন আরও সতর্ক হতে হবে। না হলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে সমস্ত লড়াই ব্যর্থ হয়ে যাবে।” রবিবারই মালয়েশিয়ায় নতুন করে ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন করে মালয়েশিয়ায় করোনা সংক্রমিতের সন্ধান মেলায় উদ্বিগ্ন সে দেশের স্বাস্থ্যকর্তারা।
আরও পড়ুন: বছরে দেশে ক্যান্সারে মৃত্যু ৮ লক্ষ, সংখ্যাটা আরও বাড়িয়ে তুলবে করোনা! মত বিশেষজ্ঞের
করোনাভাইরাসের দ্রুত চরিত্র বদল নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরাও। WHO-এর বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ভাবে ভাইরাসের দ্রুত চরিত্র বদলের প্রভাব পড়বে করোনা টিকার কার্যকারিতার উপর। সম্প্রতি লন্ডনের কিংস কলেজের একদল গবেষক রোগীদের থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ছয় রকমের করোনাভাইরাসের অস্তিত্বের সন্ধান দিয়েছেন। গবেষকদের দাবি, ছয় রকমের করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলিও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। ফলে যত দিন যাচ্ছে, ততই ভোল পাল্টে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের এ ভাবে দ্রুত চরিত্র বদলে সমস্যা বাড়বে টিকা তৈরির ক্ষেত্রেও, যা নতুন করে ভাবাচ্ছে বিজ্ঞানীদের।
তবে এ নিয়ে ভয় পাওয়ার তেমন কোনও কারণ নেই বলেই মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Maryland) সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ ফাহিম ইউনুস (Faheem Younus)। তিনি জানান, করোনাভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইন যেটিকে মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানীরা D614G নাম দিয়েছেন, সেটি বিগত কয়েক মাস ধরে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ঘোরা ফেরা করছে। করোনাভাইরাসের এই নতুন স্ট্রেইনকে আগের চেয়েও ১০ গুণ বেশি ভয়ঙ্কর ও সংক্রামক ভাবার মতো কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বা ভিত্তি নেই।