নিজস্ব প্রতিবেদন: ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলির কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি। ধূমপায়ীদের ফুসফুসের স্বাস্থ্য অন্যান্যদের তুলনায় দুর্বল। তাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি ধূমপায়ীদের— এমন সতর্ক বার্তা বার বার শোনা গিয়েছে একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের গলায়। তবে এ বার উল্টোটাই দাবি করলেন ফ্রান্সের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, Covid-19-এর সংক্রমণ রুখে দিতে পারে নিকোটিন! শুধু তাই নয় এই ভাইরাসকে সম্পূর্ণ রূপে বিনষ্ট করার ক্ষমতাও রয়েছে এই উপাদানে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্যারিসের একটি হাসপাতলে ৩৪৩ জন করোনা আক্রান্ত এবং ১৩৯ জন করোনা উপসর্গ বিশিষ্ট রোগীর ওপর পরীক্ষা করে এই তথ্য জানিয়েছেন ওই গবেষকদল। বিজ্ঞানীদের দাবি, ফ্রান্সে যত জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে ধূমপায়ীদের সংখ্যা অনেকটাই কম। ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষই ধূমপায়ী। সেই পরিসংখ্যানের বিচারে দেশের করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ধূমপায়ীদের সংখ্যা অনেকটাই কম।


এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ইন্টারন্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক জাহির আমৌরা জানান, প্যারিসের ওই হাসপাতলের মোট ৪৮২ জন রোগীর মধ্যে মাত্র ৫ জন ধূমপায়ী। এই সংখ্যাটা দেশের ধূমপায়ীদের তুলনায় বেশ কম!


এর আগে মার্চের শেষে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন (New England Journal of Medicine)-এ প্রকাশিত হয় চিনা বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণাপত্র। ওই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, চিনের ১,০০০ করোনা আক্রান্তের মধ্যে মাত্র ১২.৬ শতাংশই ধূমপায়ী ছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর তথ্য অনুযায়ী, চিনে ২৬ শতাংশ মানুষ ধূমপায়ী। সেই তুলনাই করোনা আক্রান্ত ধূমপায়ীর সংখ্যা অবিশ্বাস্য ভাবে কম! সব মিলিয়ে, করোনা আক্রান্তের তালিকায় ধূমপায়ীদের সংখ্যা সব ক্ষেত্রেই তুলনামূলক ভাবে অনেক কম।


ফ্রান্সের পাস্তুর ইনস্টিটিউটের বিশিষ্ট স্নায়ুবিদ জিন পার্ক চেঙার-এর দাবি, নিকোটিন সেল রিসেপ্টরকে আকৃষ্ট করতে পারে। তাই শরীরে কোনও ভাইরাস প্রবেশ করার পর সেটি সংক্রমিত হওয়ার ক্ষেত্রে নিকোটিন বাধা সৃষ্টি করে। ফ্রান্সের গবেষকরা এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সে দেশের স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। স্বাস্থ্যদপ্তর এই তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে অনুমোদন দিলেই এই গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন তাঁরা।


আরও পড়ুন: ফের উপসর্গ বদলে হাজির করোনাভাইরাস; এবার ভয় বাড়াচ্ছে ত্বকের লালচে র‌্যাশ!


এ বিষয়ে ফ্রান্সের উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিক জেরাম সালমন জানিয়েছেন, গবেষণায় যে তথ্যই সামনে আসুক, নিকোটিনের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি সম্পর্কে ভুলে গেলে চলবে না! যাঁদের ধূমপানের অভ্যাস নেই, তাঁদের উপর চিকিৎসার বিকল্প হিসাবে নিকোটিন ব্যবহার করা কখনওই উচিত নয়। এর ফলে শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং একই সঙ্গে আসক্তির সৃষ্টি হতে পারে, যা কখনওই কাম্য নয়।