বন্ধ্যাত্বের বাধা পেরিয়ে মাতৃত্বের স্বাদ পেতে ভরসা সারোগেসি
কাঁদের সারোগেসির সাহায্য নিতে হয়? কখন প্রয়োজন সারোগেট মায়ের? আসুন জেনে নিন এ বিষয়ে কী বলছেন বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডঃ সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুদীপ দে: একজন মহিলা হয়েও সন্তানের জন্ম না দিতে পারাটা খুবই যন্ত্রণার। এমন অনেক দম্পতি বা মহিলা আছেন যাঁরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করেও কোনও সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি। তখন প্রয়োজন পড়ে আইভিএফ পদ্ধতির। তাহলে কাঁদের সারোগেসির সাহায্য নিতে হয়? কখন প্রয়োজন সারোগেট মায়ের? আসুন জেনে নিন এ বিষয়ে কী বলছেন বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডঃ সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিভিন্ন কারণে অনেক মহিলাই মা হতে পারেন না। যেমন, জন্মগত ভাবে শরীরে জরায়ুর (uterus) অনুপস্থিতি বা অকেজ জরায়ু, কোনও কারণে জরায়ুর বাদ পড়লে, ফাইব্রয়েড বা কোনও শারীরিক অক্ষমতার কারণে স্বাভাবিক ভাবে গর্ভধারণ করা সম্ভব হয় না। ডঃ সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এ ক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হল সারোগেসি।
কখন প্রয়োজন হয় সারোগেট মায়ের? কাঁদের সারোগেসির সাহায্য নিতে হয়?
ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সারোগেসি কিন্তু কোনও ভাবেই আইভিএফ পদ্ধতি ছাড়া সম্ভব নয়। আইভিএফ পদ্ধতিতে শুক্রাশয় থেকে সংগৃহিত সবচেয়ে ভাল শুক্রানু ডিম্বাশয়ের মধ্যে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। আর এ ভাবেই শুক্রানু-ডিম্বানুর মিলনে কোনও মহিলা গর্ভধারণ করেন বা সৃষ্টি হয় ভ্রুণের। কিন্তু যে ক্ষেত্রে কোনও মহিলা জরায়ুর অনুপস্থিতি, অকেজ জরায়ু ফাইব্রয়েড বা কোনও শারীরিক অক্ষমতার কারণে গর্ভধারণে অপারগ হলে সে ক্ষেত্রে একমাত্র উপায় হল সারোগেসি। অর্থাৎ, প্রয়োজন হয় সারোগেট মায়ের যাঁর গর্ভে টেস্ট টিউবে শুক্রানু-ডিম্বানুর মিলনে কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্টি হওয়া ভ্রুণকে স্থাপন করা হয়। ওই ভ্রুণ তখন বেড়ে ওঠে সারোগেট মায়ের গর্ভেই। একেই বলে সারোগেসি।
কাঁরা সারোগেট মা হতে পারেন?
ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বা অনাত্মীয়, ইচ্ছুক যে কেউ সারোগেট মা হতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে কতগুলি বিষয় দেখে নেওয়া হয়। ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যিনি সারোগেট মা হতে ইচ্ছুক, তাঁর পূর্বে সন্তান ধারণের বা সন্তান জন্ম দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। এ ছাড়াও, সারোগেট মা হতে ইচ্ছুক মহিলার জরায়ু পুনরায় সন্তান ধারণে সক্ষম কিনা তা-ও দেখে নেওয়া হয়। সারোগেট মা হতে ইচ্ছুক মহিলার বয়স ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হলেই ভাল। সর্বপরি সারোগেট মা হতে ইচ্ছুক মহিলা সম্পূর্ণ সুস্থ কিনা তা নিশ্চিত করে নেওয়া হয়। এই চারটি বিষয় দেখে চিকিত্সকরা ইচ্ছুক মহিলাকে সারোগেট মা হওয়ার অনুমতি দেন।
আরও পড়ুন: শুক্রানুর সংখ্যা শূন্য? তা সত্ত্বেও ‘ডোনার’ ছাড়াই বাবা হওয়া সম্ভব!
ডঃ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত, ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়াও অন্য যে কোনও মহিলা যদি সারোগেট মা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে গর্ভধারণের সংখ্যা বাড়বে এবং অনেকই উপকৃত হবেন। হাজার হাজার মহিলাকে বন্ধ্যাত্বের বাধা পেরিয়ে মাতৃত্বের স্বাদ পাইয়ে দিতে তাই এখন ভরসা সারোগেসি।