জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: যুগান্তকারী। এ ছাড়া আর কোনও শব্দই এখানে প্রযোজ্য  হতে পারে না। কেননা, ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় এক বিরল ঘটনা ঘটে গিয়েছে। বেরিয়ে গিয়েছে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ওষুধ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদনও পেয়েছে ওষুধটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক শাখা সম্প্রতি টাইপ-১ ডায়াবেটিস মোকাবিলায় একটি ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। যেসব রোগী টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে তাঁদের এই ওষুধ দেওয়া হলে তাঁরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেরি করে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন তাঁরা এই ঘটনাকে ‘গেম চেঞ্জিং’ বলে উল্লেখ করেছেন।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তাহলে, আগে জেনে নেওয়া যাক টাইপ-১ ডায়াবেটিস কী?


ডায়াবেটিসের প্রধানত দুটি ধরনের। টাইপ-১ ডায়াবেটিস ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস। টাইপ-১ ডায়াবেটিস মূলত শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতার উপর আঘাত করে এবং ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলি ধ্বংস করে দেয়। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরেও যথেষ্ট পরিমাণ ইনসুলিনের উৎপাদন হয় না কিংবা দেহকোষ ইনসুলিনের প্রতি সাড়া দেয় না। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের চেয়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি। ওজন কমানো, শরীরচর্চা-সহ লাইফস্টাইল সংক্রান্ত জরুরি কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা গেলেও টাইপ-১ জেনেটিক রোগে পরিণত হয়। এখনও পর্যন্ত এটি প্রতিরোধ করার মতো কোনো উপায় আবিষ্কৃত হয়নি। টাইপ-১ ডায়াবেটিস শনাক্ত হতে দেরি হলে শরীরের উপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। এতে  শরীরের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


আরও পড়ুন: Common Diabetes Myths: ডায়াবেটিস হলেই 'সুগার' হয়েছে বলা হয় কেন? রোগটির সঙ্গে কী কী মিথ জড়িত...


বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮৭ লাখ মানুষ টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা, যাকে আমরা ইমিউন সিস্টেম বলি, যে ব্যহস্থা সাধারণত ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে তা তার এই আচরণ বদলে ভুল করে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী গুরুত্বপূর্ণ কোষগুলিকে আক্রমণ করে বসে! আর তার জেরেই যত বিপত্তি!


কোন ওষুধটি যুগান্তকারী বলে বিবেচিত হচ্ছে? 


ওষুধটির নাম টেপলিজুমাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে টেপলিজুমাব এক ‘নতুন যুগে’র সূচনা করেছে। ওষুধটি সংশ্লিষ্ট রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হলে তা তাঁর শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার আচরণ ক্রমশ স্বাভাবিক করে তোলে। তখন আর এটি ভুল করে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন নিঃসরণকারী কোষগুলিকে আক্রমণ করে বসে না!


টেপলিজুমাব ওষুধের কাজটা ঠিক কী?


২০১৯ সালে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন এমন কিছু মানুষকে পরীক্ষামূলকভাবে টেপলিজুমাব ওষুধ দিয়ে দেখা গিয়েছে, তাঁরা যে সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় ছিলেন, তার চেয়ে অন্তত দুই বছরের কিছু বেশি সময় পরে তাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিলম্বের বিষয়টিই খুব তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে কমবয়সীদের জন্য। কারণ, ওই বাড়তি পাওয়া সময়টুকুতে তাদের ইনসুলিন নিতে হবে না কিংবা নিয়মিত রক্তের শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করাতেও হবে না। গবেষকেরা বলছেন, এই ওষুধ গ্রহণকারী ব্যক্তিদের রক্তের শর্করার মাত্রা তুলনামূলকভাবে আরও বেশি বছর স্বাস্থ্যকর অবস্থায় থাকে। শুধু তা–ই নয়, তাঁরা আরও বেশি দিন রক্তে উচ্চ শর্করাজনিত বিভিন্ন জটিলতায় যেমন কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়া বা চোখের অসুখে আক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।


শরীরে ইনসুলিনের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরে শক্তি জোগাতে রক্তের শর্করাকে ব্যবহার করে। বর্তমানে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় তাই রক্তের শর্করা পরীক্ষা এবং ইনসুলিন নেওয়াকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)