নিজস্ব প্রতিবেদন: একটি ভয়ানক মানসিক রোগের নাম সিজোফ্রেনিয়া। আমাদের দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানসিক সমস্যাকে সাধারণত কেউ তেমন গুরুত্ব দিতে চান না। যে কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানসিক রোগের চিকিৎসা শুরু হয় একেবারে শেষ মুহূর্তে। আর তখন পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বর্তমানে গোটা বিশ্বে শুধুমাত্র সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটির বেশি যার বেশীরভাগই মূলত অবহেলার শিকার। সাম্প্রতিক সমিক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ মানুষ সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত। সাধারণ মানুষের গড় আয়ুর তুলনায় সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত রোগীর আয়ু প্রায় ১৫-২০ বছর কমে যায়। অর্থাৎ, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর মৃত্যু সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেকটাই আগে হয়। ২০-৪৫ বছর বয়েসি কিশোর-কিশোরী, পুরুষ-মহিলা, যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই প্রাথমিক লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গেই মনরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সামান্য অবহেলাও মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। তাই জেনে নিন সিজোফ্রেনিয়া রোগের প্রধান লক্ষণগুলি আর শুরুতেই উপযুক্ত চিকিত্সার ব্যবস্থা নিন। সিজোফ্রেনিয়া রোগের প্রধান লক্ষণগুলি মূলত ৩ ভাবে প্রকাশ পায়—


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

• চিন্তার মধ্যে অসংলগ্নতা:—


১) মনে অযথা সন্দেহ: কোনও কারণে সন্দেহ হতেই পারে। কিন্তু এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া মানুষকেও সন্দেহ করতে থাকেন। তারা ভাবতে থাকেন সবাই তাকে নিয়ে মজা করছে, সমালোচনা করছে কিংবা বিশেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।


২) ভুল জিনিসে দৃঢ় বিশ্বাস: সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি অহেতুক এবং অবাস্তব জিনিসকে সত্য ভাবতে থাকেন। যেমন, সবাই তার ক্ষতি করছে, খাবারে বিষ মেশানো রয়েছে, তিনি না বললেও কেউ তার মনের গোপন কথা জেনে যাচ্ছে ইত্যাদি।


• আচরনগত সমস্যা:—


১) হঠাত করেই জোরে হেঁসে ওঠা, আবার কোনও কারণ ছাড়াই কেঁদে ফেলা।


২) হঠাত করেই খুব বেশি রেগে যাওয়া বা উত্তেজিত হয়ে ওঠা।


৩) মানুষের সঙ্গ একেবারেই মিশতে না চাওয়া।


৪) কোনও কারণ ছাড়াই আত্মহত্যার চেষ্টা করা।


৫) কোনও কারণ ছাড়াই এক জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকা।


৬) আগে একেবারেই যা করতেন না, সে ধরনের আচরণ করতে থাকা।


৭) জনসমোক্ষে গায়ের কাপড় খুলে ফেলার চেষ্টা করা।


• অনুভূতি বিষয়ক সমস্যা:—


১)  কেউ তার সঙ্গে কথা না বললেও, মনে হতে পারে কেউ যেন তার সঙ্গেই কথা-বার্তা বলছে। সিজফ্রেনিয়ার রোগীরা এ ভাবেই পশুপাখির ডাকও শুনতে পান।


২) গায়ে পোকামাকড়ের হাঁটার অনুভূতি হয়।


৩) বিশেষ কোনও কিছুর গন্ধ পেতে থাকা, যদিও সেই গন্ধ অন্যেরা কেউই পাচ্ছেন না।


উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলি যদি কারও মধ্যে ৬ মাসের বেশি সময় দেখতে পাওয়া যায় তাহলে তিনি সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ এবং আপনজনের সান্নিধ্যে রোগী অনেক ক্ষেত্রেই সুস্থ হয়ে যান।