`বিক্রি হয়ে যাচ্ছে কিট`, পিপিই ছাড়াই করোনা রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া-আসা করছে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা
নজরদারির কেউ নেই। ফলে কে পরছেন, কে পরছেন না, তা দেখারও কেউ নেই।
তন্ময় প্রামাণিক : অবহেলা? নাকি দুর্নীতি লুকিয়ে আছে? করোনা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও সহকারীদের একটা বড় অংশ পিপিই পড়ছেন না। কিন্তু কেন? অবহেলা নাকি প্রাপ্য পিপিই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে? বাস্তবে ২ রকম অভিযোগই উঠছে। আসল বিষয় যাই হোক না কেন, এঘটনায় আরও বেশি মাত্রায় সংক্রমণ ছাড়ানোর ভয় পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল, এম আর বাঙ্গুর বা কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মত করোনা চিকিৎসার কেন্দ্রগুলোতে করোনা রোগীদের নিয়ে যাওয়া-আসার কাজে যুক্ত ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের চালকদের পিপিই না পরে থাকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, করোনা চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলিতে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত কিংবা শহরতলি ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে যে সমস্ত ১০২ অ্য়াম্বুলেন্সে কোভিড আক্রান্তদের নিয়ে আসা হচ্ছে, সেই সমস্ত গাড়ির চালকদের বেশিরভাগই কিংবা সহকারীদের অনেকেই পিপিই পড়ছেন না।
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই এক-একজন একরকম কথা বলছেন। নানা মুনির নানা মতামত উঠে আসছে। কোনও চালক বলছেন, "আমি যাঁকে এনেছি, আমি তাঁর কাছাকাছি যাইনি। তাঁর সংস্পর্শে আসিনি। সেই কারণেই পিপিই পরিনি। মাস্ক পরেছি।" আরেকটি ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের সহকারী বলেন, "এগুলি পরা এবং খোলা খুব সময়সাপেক্ষ। দ্রুত আমাদের বিভিন্ন রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছতে হচ্ছে। সেই কারণে পরা হয়নি। পরা উচিত। কাল থেকে পরব।"
গাড়ির ভিতরে চালকের আসনে পড়ে রয়েছে সরকারের দেওয়া পিপিই কিট
আরেকটি অ্যাম্বুলেন্সের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, " আমাকে একটি পিপিই দেওয়া হয়েছিল। সেটি প্রথম রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছি। তারপর ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় রোগীর ক্ষেত্রে আর কোনও পিপিই দেওয়া হয়নি। তাই আমিও পরিনি।" ডায়মন্ড হারবার থেকে আসা ১০২ অ্যাম্বুলেন্সের চালক কেদার মণ্ডল বললেন, "আমি তিন থেকে চারবার পড়ে গেছি ওই পিপিই পরে। তাই এখন আর পরি না। পরা বন্ধ করে দিয়েছি।"
অভিযোগ, দিনে দুজন থেকে তিন, এমনকি চারজন পর্যন্ত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা করছে এক-একটি অ্যাম্বুলেন্স। সেক্ষেত্রে প্রতিটি রোগীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আলাদা আলাদা পিপিই দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পিপিই বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নজরদারির কেউ নেই। ফলে কে পরছেন, কে পরছেন না, তা দেখারও কেউ নেই। এদিকে এই বেনিয়মে স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন, শিয়ালদা স্টেশনের জনবহুল চত্বরে কী করে ঘটল 'এঘটনা'! প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিসও