নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজ্যে এই প্রথম করোনার বলি। আজ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল দমদমের সংক্রমিত প্রৌঢ়র। ২১ মার্চ খোঁজ মেলেছিল ব্যক্তির। এরপর আরও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ওই ব্যক্তি। নমুনার পর পরীক্ষার পর প্রৌঢ়ের শরীরে মিলেছিল করোনাভাইরাসের উপস্থিতি। ১৩ মার্চ থেকে জ্বর-সর্দি-কাশিসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় দমদমের বাসিন্দা ৫৭ বছরের প্রৌঢ়ের। সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ১৬ মার্চ তাঁকে ভর্তি করা হয়। এসএসকেএম ও নাইসেডে নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস মেলে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে তিনি মারা যান। গতকাল থেকেই ফুসফুস কাজ করছিল না তাঁর। একম সাপোর্টে রেখে দেওয়া হয়েছিল এই ব্যক্তিকে। ১৯ মার্চ থেকেই সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। গতকাল থেকে অবস্থার হতে থাকে। সকাল থেকেই পরপর মাল্টি অর্গান ফেল করতে শুরু করে। সকাল থেকেই দ্রুত অবনতির বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনের জানিয়ে রেখেছিলেন ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করলও কোনওভাবেই কোনও সাড়া মেলেনি। সোমবার দুপুর ৩টে ৩৫ মিনিটে মৃত্যু হয় দমদমের নভেল করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির। 


সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের এই আইসোলেশন কেবিনের চিকিৎসক-নার্স ওয়ার্ডবয় থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী সকলকে আলাদাভাবে রেখে দেওয়া হয়েছে তাদের কী করনীয় তাও জানতে চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের কাছে।উল্লেখ্য, ওই প্রৌঢ়ের পরিজন ও পরিচিতদের মধ্যেও করোনার আশঙ্কায় কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি। বাকি যারা যারা এদের সংস্পর্ষে এসেছিলেন তাঁজেরকেও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়এছে। সূত্রের খবর, তিনি কয়েক সপ্তাহ আগে বিলাসপুরে গিয়েছিলে। চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান সেখান থেকেই সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন প্রৌঢ়। এই নিয়ে ভারতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮। 


আরও পড়ুন: কাল থেকে লকডাউন গোটা রাজ্য, জেনে নিন লকডাউন আসলে কী


করোনায় মৃত রোগীর যেন দ্রুত সৎকার হয় তার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যক্তির মৃত্যুর পর নবান্নে সর্বদলীয় বৈঠক চলাকালীন এই মৃত্যুর খবর পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৎক্ষণাৎ পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মাকে নির্দেশ দেন, যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন, তাঁর মৃতদেহ থেকে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই যেন গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় সেদিকেও নজরের নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। 


বলার অপেক্ষা রাখে না পরিস্থিতি ভয়াবহ হচ্ছে ক্রমশ। স্টেজ থ্রির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ভারত। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন প্রবীনরা। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বয়স্কদের শরীরে রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা কম হওয়ায় যেকোনও সংক্রমণের ভয়াবহতাও বেশি তাঁদের ক্ষেত্রে। তবে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, সুতরাং গোষ্ঠীসংক্রমণ ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।


গতকাল কার্ফু মহড়ার পর করোনা রুখতে  গোটা রাজ্য জুড়ে লকডাউন আজ বিকেল থেকেই। বিকেল ৫টা থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত লকডাউন। এই সময়ের মধ্যে রাজ্যে কোনও গণপরিবহণ চলবে না। বন্ধ থাকবে  সব দোকান, অফিস, কল কারখানা, গোডাউন।রবিবারই  বিজ্ঞপ্তি জারি করে  সবাইকে বাড়িতে থাকার আর্জি জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। তবে খাদ্য ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বহনকারী গাড়িগুলিকেও ছাড় দেওয়া হবে। সকাল থেকেই লক ডাউনের কথা মাথায় রেখে বাজারে মানুষের ভিড়।  যদিও স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সবজি, ফল, মাছ-মাংস, দুধ, পাউরুটিও পাওয়া যাবে লকডাউন চলাকালীনও।