সকালে সিসিউতে, বিকেলে `উধাও`, খোঁজ নিতেই জানা গেল ভয়ঙ্কর পরিণতি করোনা রোগীর
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে রোগীর পরিবার। ছেলে সুজিত বলেন, `সোমবার বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত
তন্ময় প্রামাণিক: সিসিউতে আছেন করোনা রোগী। সকালে খোদ চিকিত্সক পরিবারকে এমনটাই জানান। বিকেলে পাল্টে গেল ছবিটা। হেল্পলাইনে ফোন করলে, বলা হয় গত এক সপ্তাহে কৃষ্ণ দাস সূত্রধর নামে কোনও রোগীই সিসিউতে নেই! ফের ভুতুড়ে কাণ্ডের সাক্ষী রইল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
কৃষ্ণদাস সূত্রধর নামে ওই রোগী গত একমাস ধরে ভর্তি কলকাতা মেডিকেল কলেজে। করোনা আক্রান্ত। হাসপাতালের চার তলার ৩০৪ নম্বর বেড তাঁর। গত সোমবার পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে দিব্যি কথা বলেছেন কৃষ্ণদাস। কিন্তু তারপর থেকেই তাঁর আর খোঁজ মিলছে না। মঙ্গলবার, চিকিত্সকের সঙ্গে কথা বললে বলেন, সেরিব্রাল অ্যাটাক হওয়ায় তাঁকে সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। কোমায় তবে স্থিতিশীল রয়েছেন বলে চিকিত্সকরা জানান।
পরিবারের অভিযোগ, পরে হেল্পলাইনে ফোন করলে হাসপাতাল তরফে বলা হয়, সিসিউতে গত এক সপ্তাহ ধরে এই নামে কোনও রোগীই ভর্তি হয়নি। শুরু হয় খোঁজ। বৃহস্পতিবার হেল্পলাইন নম্বরের প্রতিনিধিদের চাপাচাপি করতে তাঁরা জানান আজই মারা গিয়েছেন কৃষ্ণদাস সূত্রধর। তবে, পরিবারের দাবি কিছু একটা লুকাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃত্যু হয়েছে গত সোমবারই। রোগীর স্ত্রী দুর্গা সূত্রধর বলেন, "আমার স্বামী ফোনে অভিযোগ করতেন ঠিক করে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। হার্ট ব্লক থাকায় প্রতিদিন ওষুধ খেত। কিন্তু সেটাও ভাল করে দেওয়া হচ্ছিল না।"
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে রোগীর পরিবার। ছেলে সুজিত বলেন, "সোমবার বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত। বারংবার আমাদের ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। মিথ্যাচার করা হয়েছে। গোটা বিষয়টা নিয়ে তদন্ত হলে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।" সুজিতের আরও দাবি, সোমবার রোগীর কোনো রকম চৈতন্য নে সে কিভাবে বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যায়? বলা হলো সিসিইউ'তে রেখে দেওয়া হয়েছে। অথচ আজকে জানা গেল,৩০৪ নম্বর বেডেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন- নির্মীয়মান বহুতল থেকেই নির্মাণকর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, এলাকায় চাঞ্চল্য
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি তাদের কাছে জানা নেই। পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ জমা দিলে তদন্ত করে অবশ্যই দেখা হবে। উল্লেখ্য মাস খানেক আগে এই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই করোনা রোগীকে সাত দিন ধরে বাঁচিয়ে রাখে হেল্পলাইন নম্বর। ফোন করলেই বলা হয়, রোগী সুস্থ আছে। পরে পরিবারের সদস্য গিয়ে জানতে পারেন, এক সপ্তাহ আগেই মৃত্যু হয়েছে করোনা রোগীর। সে দিনও নিরুত্তর ছিল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।