অয়ন ঘোষাল: দমদম নাগেরবাজারের বাগানবাড়ি থেকে এক ব্যক্তির পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় বুধবার। দমদম নাগেরবাজারের নয়াপট্টি এলাকার বাগানবাড়ি থেকে এক ব্যক্তির পচা গলা মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ৭২ বছরের কল্যাণ ভট্টাচাৰ্য এই বাগানবাড়িতে একাই থাকতেন। সল্টলেকে থাকা তার আত্মীয়রা যখন তাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না সেই সময় যখন এই বাড়িতে এসে খোঁজাখুঁজি করেন ঠিক সেই সময় তারা দেখতে পায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া এবং ঘরের ভেতর থেকে পচা দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এরপরই তারা নাগেরবাজার থানায় খবর দেয়। নাগেরবাজার থানার পুলিস ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে দরজা ভেঙে। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। অন্যদিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে পুলিসের পক্ষ থেকে বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল কেন দরজায়? যা নিয়েই রহস্য তৈরি হয়েছে। সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখছে নাগেরবাজার থানার পুলিস এবং মৃত ব্যক্তির আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। অন্যদিকে বাড়ির পোষ্য কুকুর এবং গাড়ি উধাও যা নিয়েই রহস্য তৈরি হয়েছে।


আরও পড়ুন: Jadavpur University: রাত ১০টার পর বন্ধ হবে হস্টেলের গেট, পড়ুয়াদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি যাদবপুর কর্তৃপক্ষের


অন্যদিকে শনিবার সকালেও বাড়ির সদর দরজা খুলে বাজারের ব্যাগ হাতে বেরোতে দেখা যায় ৭২ বছরের কল্যাণ ভট্টাচার্যকে। নিতান্ত  প্রয়োজন ছাড়া তিনি বাড়ি থেকে বেরোতেন না। নিজে অকৃতদার। সেই অর্থে নিজের বলতে কেউ নেই। দূর সম্পর্কের এই খুড়তুতো ভাই থাকেন সল্টলেকে। মাঝে মাঝে ফোন করে যোগাযোগ রাখতেন তিনিই।


এছাড়া বাড়িতেই তেমন একটা কেউ আসতেন না। নাগেরবাজার থানার ১৭৬ নম্বর নয়াপট্টি রোডের এই বাগান বাড়ির দরজা মূলত ভিতর থেকে তালা বন্ধ থাকত।


রবিবার রাত সাড়ে আটটায় হঠাৎ উল্টো দিকের এক চায়ের দোকানে পৌঁছায় ড্রাইভার। সে নিজেকে কল্যাণ বাবুর গাড়ি চালক বলে পরিচয় দেয়। সদর দরজা তালাবন্ধ। ভিতরে অনেকটা জমি পেরিয়ে তবে বাগান বাড়ি। সে দাবি করে কল্যাণ বাবু অসুস্থ। ডাক্তারের কাছে যাবেন বলে তাঁকে ফোন করে ডাকা হয়ছে। অথচ এখানে গেটে ভিতর থেকে তালা। ফোনও পাওয়া যাচ্ছে না। কীভাবে এই বাড়িতে ঢুকবে? আর কোনও পথ আছে? জানতে চায় যুবক।


আরও পড়ুন: Recruitment Scam: মানুষকে বোকা বানানোই কি সিবিআইয়ের কাজ? নিয়োগ মামলায় প্রশ্ন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের


এরপর তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। হঠাৎ সোমবার বিকেলে বরাবর বন্ধ থাকা এই বাগান বাড়ির সদর দরজা হাট করে খোলা থাকতে দেখে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তাদের আরও অবাক করে মঙ্গলবার বিকেলে কে বা কারা সদর দরজায় বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়ে যায়। বাগানের রাস্তায় চাকার দাগ দেখা যায়। অথচ কল্যাণ বাবুর দামী নীল রং-এর গাড়ি ভিতর থেকে কেউ বেরোতে দেখেন নি। পাওয়া যায়নি গাড়ির খোঁজ। মেলেনি বরাবর একাকী এই মানুষটির কোলে থাকা পোষা কুকুরের খোঁজ।


তাই রহস্য বাড়ছে। দেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, দেহের একাধিক অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। সল্টলেকের যে আত্মীয় তাকে ফোন করে না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন, তিনি ছাড়া নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়ার মতো আর কেউ ছিল না বলেই প্রাথমিক ভাবে পুলিসের অনুমান।


ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে বোঝা যাবে এটি স্বাভাবিক মৃত্যু না এর পিছনে কোনও ফাউল প্লে আছে।


বিপুল সম্পত্তির মালিক এই পরিবার। বাবা জিতেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য বর্ধিষ্ণু জমিদার। এই এলাকায় প্রচুর জমি স্কুল কলেজকে দান করে গিয়েছেন। বাগান বাড়ি চার বিঘা জমির ওপর। একসময় এই বাগান বাড়িতে ধুমধাম করে দুর্গাপুজো হতো। ঠিক কী ঘটেছিল? কবে ঘটেছিল? জানতে নাগেরবাজার থানার পুলিস আশেপাশের সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করছে। অপেক্ষা করছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)