তন্ময় প্রামাণিক 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এক হাতে প্লাস্টার। অন্য হাত দিয়ে স্ট্রেচার টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। ওই স্ট্রেচারে শুয়ে পা ভাঙা এক রোগী। বুধবার এমন অকল্পনীয় ছবিই দেখা গেল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে!


ডান হাত ভেঙে চার টুকরো হয়ে গিয়েছে। বাম হাত দিয়ে স্ট্রেচারের উপরে তুললেন পা ভেঙে যাওয়া ৬৫ বছরের বৃদ্ধকে। দু'জনেরই অস্ত্রোপচার দরকার। অথচ করোনা পরীক্ষা না করলে ওটিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই চিকিৎসকের নির্দেশমতো সকাল থেকে তাঁরা করোনা পরীক্ষার অপেক্ষা করছিলেন। হাত-পা ভাঙা দুই রোগী-স্ট্রেচারেই নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এগিয়ে আসেননি হাসপাতালের কোনও কর্মী। ওদিকে, আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষার সময় পার হয়ে যাচ্ছে। বুধবার পরীক্ষা না হলে ফের অপেক্ষা করতে হবে। পিছিয়ে যাবে অস্ত্রোপচার। 


সোনারপুরের বাসিন্দা কুনাল হালদার শত অনুরোধেও ব্যবস্থা করতে পারেননি। অগত্যা নিজেই ডেভিড হেয়ার ব্লকে থেকে একটি স্ট্রেচার টেনে আনেন। সেই স্ট্রেচারে তোলেন তার পাশে ভর্তি থাকা পা ভেঙে যাওয়া হাওড়ার বাসিন্দা ৬৫ বছরের গুলজার মল্লিককে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ চত্বর দেখল, ডান হাতে প্লাস্টার থাকা অবস্থায় একজন রোগী বা হাত দিয়ে স্ট্রেচার টানতে টানতে যাচ্ছেন সুপার স্পেশালিটি ব্লকের দিকে।



কুনাল হালদার বলেন,"আজই দুপুর দেড়টার মধ্যে পরীক্ষা করতে হবে। না গেলে আর হতো না। আমার ডান হাত চার টুকরো হয়ে আছে। ওটি করার ডেট দেওয়া হয়েছে। করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট না পেলে অস্ত্রোপচার হবে না। একই অবস্থা এই বৃদ্ধ মানুষটির। বারে বারে ডেকেছি। কেউই রাজি হননি। বাধ্য হয়েই নিজেই এলাম। আমাকেও বাঁচতে হবে, ওকেও। আর উপায় ছিল না।" 


৬৫ বছরের গুলজার বললেন,''এই ছেলেটি আমার কাছে সাক্ষাৎ ঈশ্বরের রূপ। ওই আমাকে বলল, আপনি স্ট্রেচারে উঠুন। সাহায্য করল। ভাঙা পা নিয়ে আমি তো নড়তেও পারিনা। ওই-ই বলল, আমি টেনে নিয়ে যাব।" শেষপর্যন্ত পরীক্ষা করাতে পেরেছেন তাঁরা। গোটা ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার আগে পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। 


আরও পড়ুন- কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২ লক্ষ ছেলেমেয়েকে বাইক কিনতে সহজে ঋণ, ঘোষণা মমতার