'নমস্কার আমি অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনার রায় অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগত।' দীর্ঘ বিরতির পর ফিরে এসেছিলেন বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলের সান্ধ্য বিতর্কানুষ্ঠানের 'ভগীরথ'। বিভিন্ন ইস্যুতে শাসক-বিরোধী কাউকে রেয়াত করেননি। বিঁধেছেন অস্বস্তিকর প্রশ্নবাণে। বারবার বলতেন,'আমি প্রশ্ন করি আপনাদের হয়ে'। সেই অননুকরণীয়, সোচ্চার কণ্ঠস্বর আর শোনা যাবে না। কোভিড কেড়ে নিল Zee ২৪ ঘণ্টার এডিটর অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 


প্রেসিডেন্সিতে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট। জীবনে অনেক কিছুই করতে পারতেন। তবে পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নিয়েছিলেন অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। কেরিয়ার শুরু হয় আনন্দবাজার পত্রিকায়। সেখানে এক দশকের বেশি থাকার পর টেলিভিশনে পা রাখেন অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। 'ই টিভি'তে শুরু হয় সেই যাত্রা। তার পর 'আকাশ বাংলা' হয়ে '২৪ ঘণ্টা'য়। তখন সবে আধ ঘণ্টার বুলেটিন ছেড়ে গুটি গুটি করে পা মেলতে শুরু করেছে ২৪ ঘণ্টার বাংলা সংবাদ চ্যানেল। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আগেই বিপ্লব করেছিল Zee News। বাংলায় শুরু করল '২৪ ঘণ্টা'। সান্ধ্য বিতর্কে মানুষের কথা, অভাব-অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীদের সোজাসুজি প্রশ্ন- অনুষ্ঠানের নাম 'আপনার রায়'। কালক্রমে 'আপনার রায়' ও ২৪ ঘণ্টার তৎকালীন ইনপুট এডিটর অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে উঠলেন সমার্থক। টেলিভিশন সাংবাদিকতা কেমন হওয়া উচিত, তার দিশা দেখালেন। সহকর্মীরা জানান,'শুরুর দিন থেকে অঞ্জন'দা সবাইকে পরিবারের মতো আগলে রাখতেন। ভুল হলে বকতেন। আবার অনাবিল হাসিও লেগে থাকত মুখে।'                    


২৪ ঘণ্টা ছাড়ার পর অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দেন আনন্দবাজার ডিজিটালে। সেখান থেকে গত ডিসেম্বরেই ফিরে আসেন Zee ২৪ ঘণ্টায়। তাঁর নেতৃত্বেই চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে নতুন রূপে হাজির হয় চ্যানেল। নতুন করে শুরু হয় 'আপনার রায় WITH অঞ্জন'। বাংলা খবরের চ্যানেলের জন্মলগ্নের দিনের মতো ফেসবুক, টুইটারের ফোর জি জমানাতেও আক্ষরিকঅর্থে সুপারহিট বিতর্কানুষ্ঠান।


দীর্ঘ ৩৩ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের ইতি ঘটল রবিবার। রাত ৯.২৫ মিনিটে প্রয়াত Zee ২৪ ঘণ্টার এডিটর। গত ১৪ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ভর্তি হয়েছিলেন বেসরকারি হাসপাতালে। ফুসফুসের সংক্রমণের জেরে অবনতি হয় তাঁর স্বাস্থ্যের। শেষরক্ষা হল না। সমাপ্তি হল একটা যুগের। 'আপনার রায়' নিয়ে আর ফিরবেন না অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।