বেলেঘাটা অপহরণকাণ্ডের পর্দাফাঁস, দুধের শিশুকে খুন করে সেপ্টিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় মা
কেন করলেন নিজের সন্তানকে খুন? সন্ধ্যা জৈন একবার বলছেন স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক। আরেকবার বলছেন মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন
নিজস্ব প্রতিবেদন : কোনও অপহরণ নয়, নিজের সন্তানকে খুন করে গুম করে দিয়েছিল খোদ মা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেলেঘাটা অপহরণকাণ্ডের পর্দাফাঁস করল কলকাতা পুলিস।
রবিবার বেলঘাটায় তাঁর শিশুকে অপহরণ করার অভিযোগ করেন সন্ধ্যা জৈন নামে এক মহিলা। অভিযোগ করা হয়েছিল, বেলেঘাটার মালহার অ্যাপার্টমেন্টের দোতলায় উঠে কলিং বেল বাজিয়ে তাঁকে মারধর করে দু-মাসের কন্যা সন্তানকে তুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সন্ধা জৈন পুলিসকে জানান, দুপুরে হঠাৎই কলিং বেল বাজে, দরজা খুলতেই ঘরে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। সেইসময় ছাদে জামা কাপড় মেলতে গিয়েছিলেন আয়া। অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবক কলিং বেল বাজিয়ে বলে, ছাদের চাবি চাইছে আয়া। একথা শুনেই দরজা খোলেন শিশুর মা সন্ধ্যা জৈন। আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না সেই সময়ে। ওষুধের দোকানে গিয়েছিলেন। সেই ফাঁকেই আবাসনে ঢুকেছিল ওই দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুন-দেশে এই প্রথম, প্রজাতন্ত্র দিবসে কেরলের সব মসজিদে উড়ল তেরঙ্গা
ওই অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নামে বেলেঘাটা থানার পুলিস। সন্ধ্যা জৈনের বয়ানে অসংগতি মেলায় তাকে টানা জেরা করা হয়। তা পরেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। শিশুটির মৃতদেহ মেলে আবাসনের পেছনে একটি সেপ্টিক ট্যাঙ্কে। জেরায় জানা যায় গলা টিপে ২ মাসের সন্তানকে খুন করেছে সন্ধ্যা। পুলিস তাকে গ্রেফতার করে জেরা করছে। জেরা করা হচ্ছে সন্ধ্যার স্বামীকেও।
কেন এই খুন তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। পুলিশকে যে বয়ান দিয়ে স্কেচ আঁকিয়েছিলেন সন্ধ্যাদেবী তাতে এখন পরিষ্কার যে সেই স্কেচ ছিল কল্পনাপ্রসূত। আশপাশের ২০টি সিসিটিভি ফুটেজ দেখেও সন্ধ্যাদেবীর বলা সময় অর্থাৎ সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কোনো সাদা প্যান্ট পরা যুবককে ওই আবাসনের আশপাশেও দেখা যায়নি। এতেই পুলিশ এর সন্দেহ দৃঢ় হয় যে সন্ধ্যাদেবী মিথ্যে বলছেন। ঘটনার সময়ে আয়া ছাদে ছিলেন। শশুর ঘরে ঢুকলে অপহরণ এর গল্প ফাঁদেন। আগে থেকেই পরিকল্পনা করে খুন বলে অনুমান করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন-'বিজেপিকে জেতান; শাহিনবাগের মতো ঘটনা হতে দেব না'
কেন করলেন নিজের সন্তানকে খুন? সন্ধ্যা জৈন একবার বলছেন স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক। আরেকবার বলছেন মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। ঠিক আসলে কী তা জানতে টানা জেরা চলেছে। এনিয়ে মনোবিজ্ঞানীদের সাহায্য নেবে পুলিশ।