Dengue Death: মর্মান্তিক! কোভিডের ধাক্কা জিতলেও, ডেঙ্গিতে মৃত্যু বেলেঘাটা আইডির সহকারী সুপারের
গুরুতর অসুস্থ তিনি ছিলেন না। কিন্তু আচমকা প্লেটলেট নামতে শুরু করে। পেটের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষরণ। তারপরই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট।
মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: মর্মান্তিক! ডেঙ্গির বলি এবার খোদ স্বাস্থ্যকর্তা। ডেঙ্গিতে মৃত্য়ু বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সহকারী সুপার অনির্বাণ হাজরার। হাওড়া বাসিন্দা ছিলেন সহকারী সুপার অনির্বাণ হাজরা। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার পর বেলেঘাটা আইডিতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। ৫ দিন আগে ভর্তি হন তিনি। বৃহস্পতিবার আচমকাই হু হু করে নামতে থাকে তাঁর প্লেটলেট। সঙ্গে সঙ্গেই ৬ ইউনিট প্লেটলেট দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। গ্যাস্ট্রোইনটেসটিনাল রক্তক্ষরণের জেরে শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রথমদিকে অর্নিবাণ হাজরার শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। যদিও তাঁর প্লেটেলেট কাউন্টে কিছু সমস্যা ছিল। সঙ্গে জ্বরও ছিল। তবে গুরুতর অসুস্থ তিনি ছিলেন না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই আচমকা পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। প্লেটলেট হু হু করে নামতে থাকে। পেটের মধ্যে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। এরপরই আজ সকালে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় অনির্বাণ হাজরার। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে ভেন্টিলেশনে নিয়ে গিয়ে শেষ চেষ্টা করেন আইডি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বছর চল্লিশের অনির্বাণ হাজরা। কোভিডের সময়ও খুব অসুস্থ হয়েছিলেন সহকারী সুপার অনির্বাণবাবু। কিন্তু সেবার যুদ্ধ জয় করে ফিরে এসেছিলেন হাসিমুখে। কিন্তু এবার আর শেষরক্ষা হল না।
প্রসঙ্গত, ডেঙ্গি নিয়ে ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে রাজ্যে। পুজোর পর থেকেই আরও যেন বাড়বাড়ন্ত। উদ্বেগের বিষয়, এবার দেখা যাচ্ছে, গোটা রাজ্যের দ্বিগুণ পজিটিভিটি রেট কলকাতায়! রাজ্যের সাপ্তাহিক ডেঙ্গি রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য! কত পজিটিভিটি রেট রাজ্যে? রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে সেই পরিসংখ্যান ১২.৭ শতাংশ। অর্থাৎ ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে আসা প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১২ জনেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। আর কলকাতায় সেই সংখ্যা কত? শহরে ডেঙ্গির পজিটিভিটি রেট হল ২৪.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, কলকাতায় ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে আসা ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ২৫ জনই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত।
আরও পড়ুন, Dilip Ghosh: 'মেয়র হওয়ার পর থেকেই ডেঙ্গু বাড়ছে', ফিরহাদকে তোপ দিলীপের
তবে শুধু কলকাতাতেই নয়, পজিটিভিটি রেটে রাজ্যের গড়ের উপরে রয়েছে জলপাইগুড়ি (২৪.৫%), হুগলী (২০.৮%), কালিম্পং (১৯.৫%), আলিপুরদুয়ার (১৭.৭%), মালদা (১৭.৫%), হাওড়া (১৪.৭%) এবং উত্তর দিনাজপুর (১৪%)। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের যে অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ৫৭ জন। অন্যদিকে, গত এক সপ্তাহে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৯৬ জন। স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বিগত বছরগুলির মোট আক্রান্তের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে চলতি বছরের ডেঙ্গি আক্রান্তের রেকর্ড।