বিদ্যাসাগর, রামমোহনের সঙ্গে একাসনে `সমাজ সংস্কারক` মোদী!
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, দলের তরফে এধরনের কোনও প্রচার করা হচ্ছে না। সবটাই দলের সাধারণ কর্মী ও সাধারণ মানুষদের কাজ। তবে যাঁরাই একাজ করেছেন, তাঁদেরকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।
অঞ্জন রায়
রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী! একি, হোঁচট খেলেন? সামনে ২০১৯-এর লোকসভা ভোট, তারপর ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনী যুদ্ধ জয়ের লক্ষ্যে এবার বাঙালির ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে জনসংযোগের অভিনব কৌশল গেরুয়া শিবিরের। তিন তালাক প্রথা রদ ইস্যুতে বিদ্যাসাগর, রামমোহনের সঙ্গে এক সারিতে 'সমাজ সংস্কারক' হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে সেই পোস্টার।
কী রয়েছে সেই পোস্টারে?
পোস্টারের উপরিভাগে পাশাপাশি রয়েছে বিদ্যাসাগর ও রামমোহনের ছবি। বিদ্যাসাগরের ছবির নীচে লেখা, 'বিধবা বিবাহ চালু করেছিলেন।' একইরকমভাবে রামমোহনের ছবির নীচে লেখা, 'সতীদাহ প্রথা বন্ধ করেছিলেন।' এর নীচেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর একটি ছবি। ছবির পাশে লেখা, 'তিন তালাক প্রথা তুলে দিলেন।'
সুপ্রিম কোর্টে তাত্ক্ষণিক তিন তালাকের বিরোধিতা করে মোদী সরকার। দেশের শীর্ষ আদালত তাত্ক্ষণিক তিন তালাককে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়ার পরই আইন পাশ করে তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই লোকসভায় পাশ হয়ে গেছে তাত্ক্ষণিক তিন তালাক বিল। আর এরপরই তিন তালাক নিয়ে মোদীর সাফল্য তুলে ধরতে কোমর বেঁধে নেমেছে গেরুয়া শিবির।
একদিকে হিন্দুত্বের ভাবাবেগ, অন্যদিকে মুসলিম মহিলাদের জন্য সংস্কারমূলক পদক্ষেপ এই দুইকে হাতিয়ার করেই বাংলায় জনমত গড়ে তুলতে চাইছে বিজেপি। তিন তালাক বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে উত্তরপ্রদেশে মুসলিম মহিলাদের ভোট ঝুলিতে পুরেছে বিজেপি। এবার বাংলাতেও সেই কৌশলই কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।
আরও পড়ুন, তিন তালাক বিল ত্রুটিপূর্ণ, মহিলাদের বিপদ আরও বাড়বে : মমতা
যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, দলের তরফে এধরনের কোনও প্রচার করা হচ্ছে না। সবটাই দলের সাধারণ কর্মী ও সাধারণ মানুষদের কাজ। তবে যাঁরাই একাজ করেছেন, তাঁদেরকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।