অঞ্জন রায়: রামনবমী উত্তর ভারতের। এমন অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই বিজেপিই এবার বাংলার লোকাচারের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে নিচ্ছে। নীলষষ্ঠী দিয়ে শুরু হয়েছিল। এবার করোনা পরিস্থিতিতেও বিপত্তারিণী পুজোকে জনসংযোগে কাজে লাগাল গেরুয়া শিবিরের মহিলা মোর্চা। পুলিস কর্মীদের হাতে বিপত্তারিণীর তাগা বা লাল সুতো পরিয়ে দিলেন অগ্নিমিত্রা পলরা। আর একটা প্রসঙ্গও চলে এল, দু'দিন থানা জ্বালিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।            


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

অবাঙালিদের দল, বড়বাজারের দল- এমন নানা তকমায় ভূষিত হয়েছে বিজেপি।  রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের উত্থানের আভাস মিলেছিল রাম নবমীতেই। বাংলায় প্রথমবার রাস্তায় দেখা গিয়েছিল শয়ে শয়ে 'রামভক্ত'কে। হাতে ধারালো অস্ত্র। তা দেখে অনেকেই বলেছিলেন, এটা 'বাংলার কালচার' নয়। তা খুব একটা প্রভাব পড়েনি। কালে কালে বেড়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। লোকসভা ভোটে ১৮ আসন জেতার পর এবার বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখছে বিজেপি। বড়বাজারের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে হয়ে উঠতে চাইছে বাংলার মাটির দল। নীলষষ্ঠীতেই সেই ইঙ্গিত মিলেছিল। এবার করোনা পরিস্থিতিতেও বিপত্তারিণী পুজোয় বিজেপির কর্মসূচি সেই ইঙ্গিত আরও জোরাল করল। শনিবার পুলিস কর্মীদের হাতে বিপত্তারিণী তাগা বেঁধে দিলেন মহিলা মোর্চার কর্মীরা। নতুন সভানেত্রী অগ্নিমিত্র পলের নেতৃত্বেই হল গোটা কর্মসূচি। কর্তব্যরত পুলিস আধিকারিকরা সানন্দে বাড়িয়ে দিলেন হাত।        


এর পাশাপাশি চলছে নেতৃত্বে বাঙালি মুখের আমদানিও। লোকসভা ভোটের পরই দাবি উঠেছিল, কলকাতায় জেলায় আনা হোক বাঙালি মুখ। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি  সভাপতি থেকে সরলেন দীনেশ পাণ্ডে মোহন রাও। উত্তর কলকাতার সভাপতি হলেন শিবাজি সিংহ রায়। তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতা মাস পাঁচেক আগে বিজেপিতে যোগদান করেন। সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন দক্ষিণ কলকাতার সভাপতি। বার্তাটা স্পষ্ট, আধো বাংলা, হিন্দি মিশ্রিত বাংলা বলা নেতাকে শীর্ষে রাখা যাবে না। বাঙালি মুখই থাকবেন সামনের সারিতে।                                        


নীলষষ্ঠী, বিপত্তারিণী, মনসাপুজো বাংলার উত্সবে সামিল হওয়া, বা বাঙালি মুখকে দায়িত্ব দেওয়া- বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একেবারে রাজনীতির নিয়ম মেনে ধীরে ধীরে বাঙালি 'আপন দল' হয়ে উঠতে চাইছে পদ্মশিবির। গতবছরই তো বাংলায় এসে তৃণমূলের 'বাংলাবিরোধী' অভিযোগের পাল্টা দিয়েছিলেন অমিত শাহ। বলেছিলেন, বিজেপি কীভাবে বাংলাবিরোধী হয়? জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতাই তো কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির মতো দলে হঠাত্ করে কোনও সিদ্ধান্ত হয় না। ভবিষ্যত ভেবে সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ করা হয়। সুতরাং আগামিদিনেও বিজেপিকে আরও বাঙালিয়ানায় মিশে যেতে দেখা যাওয়াটাই স্বাভাবিক। 


আরও পড়ুন- বেঙ্গালুরুতে ৫ জুলাই থেকে প্রতি রবিবার Full Lockdown, বাড়ল রাত্রি-কার্ফু