অঞ্জন রায়


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মরণে সভা করতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। কলকাতায় ওই সভায় সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ জানানো হবে জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এর পিছনে বিজেপির সুচতুর রাজনীতি থাকতে পারে বলে মত অনেকের। তাঁদের যুক্তি, লোকসভা ভোটের আগে বাজপেয়ী আবেগকে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। এমতাবস্থায় রাজ্যের শাসক ও অন্যান্য বিরোধীরা তাদের মঞ্চে বাজপেয়ী স্তুতি করলে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ভোটবাক্সে।         


এনডিএ জোটে 'ভীষ্মপিতামহ' নামে খ্যাত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সব দলের সঙ্গেই তাঁর সুসম্পর্ক। আর সে জন্যই সফলভাবে প্রথমবার জোট সরকার চালানোর কৃতিত্বের অধিকারী তিনিই। অটল বিহারী বাজপেয়ী দেখিয়েছিলেন, শরিকদের নিয়েও কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার চালানো সম্ভব। সদা হাস্যমুখ ও সবাইকে নিয়ে চলার গুণেই রাজনীতিতে অজাতশত্রু বাজপেয়ী। তাঁর প্রয়াণের পর বিরোধী শিবিরের সব নেতাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন, অটল বিহারী বাজপেয়ীর অভাব অনুভূত হবে। 


রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অটল বিহারী বাজপেয়ীর সম্পর্ক শরিকি রাজনীতিরও উর্ধ্বে ছিল। মমতাকে অভিভাবকের মতো স্নেহ করতেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। কালীঘাটে তৃণমূল নেত্রীর টালির চালের বাড়িতে এসেছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী। দেশের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছোট ঘর দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন বাজপেয়ী। মমতার মায়ের হাতে খেয়েছিলেন মালপো। একাধিকবার মমতা জানিয়েছেন, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রীর পদ ছেড়েছিলেন। পরে বাজপেয়ীর অনুরোধ ফেলতে পারেননি তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আবদারেই কয়লামন্ত্রকের দায়িত্ব নেন। সেই বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থা অবনতির খবর পেয়েই দিল্লি ছুটে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেছেন, ''সবাইকে নিয়ে চলতে জানতেন বাজপেয়ী। ধর্মনিরপেক্ষ নেতা ছিলেন তিনি''। একইসুর শোনা গিয়েছে প্রবল রাজনৈতিক বিরোধী সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মুখেও।         


বাজপেয়ীকে নিয়ে কলকাতায় স্মরণসভা, আর সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবেন না! তা খানিকটা বেমানান বলেই মত রাজ্য বিজেপির একাংশের। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ''অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মরণসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানাব। অন্য বিরোধীদেরও ডাকা হবে'।      


বিজেপির মঞ্চে মমতার আবির্ভাব হলে, তা নিঃসন্দেহে বর্তমান রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে। মনে রাখা দরকার, রাজ্যে তৃণমূলের বিরোধী হিসেবে প্রবলভাবে উঠে আসছে গেরুয়া শিবির। সেই তাদের মঞ্চে মমতার বাজপেয়ী স্মৃতিচারণা মাইলেজ দেবে বিজেপিকেই। ২০১৯ সালের আগে মমতার স্মৃতিচারণাকে হাতিয়ার করতে পারে তারা, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তবে মমতা বিজেপির অনুষ্ঠানে যাবেন কিনা, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। না যাওয়ার গ্লানি এড়াতে বাজপেয়ীর স্মরণে পৃথক অনুষ্ঠানের পথেও মমতা হাঁটতে পারেন বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। ফলে অটলকে নিয়ে রাজ্যে আরও একপ্রস্ত নাটকের সূচনা হল, তা বলাই যায়। 


আরও পড়ুন- অটলের চিতাভস্মও নিয়েও ভোটের অঙ্ক মোদী-শাহের