নিজস্ব প্রতিবেদন: 'বহিরাগত' লাইনে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ের কৌশল নিল তৃণমূল। শুক্রবার আরও একধাপ এগোলেন ব্রাত্য বসু। তৃণমূল নেতার কথায়, ''ত্রিপুরী কংগ্রেসের পর যা সুভাষ বোসের সঙ্গে যা করা হয়েছিল তারই কি পুনরাবৃত্তি মমতার সঙ্গে হয়নি? মমতাকে সুভাষের মতো লড়াই করতে হয়েছে। আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করতে হয়েছে, তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করতে পশ্চিম ও উত্তর ভারত থেকে লোক পাঠাতে হচ্ছে। আমাদের মাথার উপরে অন্য রাজ্য থেকে মুখ্যমন্ত্রী বসানো হবে? অন্য রাজ্য থেকে রাজনৈতিক নেতা বসানো হবে?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সুভাষচন্দ্র বোস যেভাবে রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন, একইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবি ব্রাত্যবাবুর। তাঁর কথায়,''৩৯ সালে সেই যে সুভাষ বোস হেরে গেলেন, উত্তর ও পশ্চিম ভারতীয়রা চটে গেল। আপনারা ভেবে দেখুন ১৯১৫ সালে গান্ধী এলেন। তার আগে পর্যন্ত স্বাধীনতা আন্দোলনের নিয়ন্ত্রণ ছিল বাঙালির হাতে। ১৯৩৯ সালে হারলেন সুভাষ। নানাভাবে সুভাষ বোসকে কোণঠাসা করা হল। ৪৪ সালে তাইহোকু ঘটল। ভারতের রাজনীতি থেকে চলে যেতে হয়েছিল সুভাষকে। তার হুবহু পুনরাবৃত্তি ঘটল ৫০ বছর পরে। মমতাকে চলে যেতে হল না। যেহেতু মমতাকে উপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়নি। সুভাষ বোস আলাদা দল গঠন করেছিলেন। মমতাকে সুভাষের মতো লড়াই করতে হয়েছে। আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করতে হয়েছে, তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করতে পশ্চিম ও উত্তর ভারত থেকে লোক পাঠানো হচ্ছে। যেভাবে সুভাষ বোসকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের মাথার উপরে অন্য রাজ্য থেকে মুখ্যমন্ত্রী বসানো হবে? অন্য রাজ্য থেকে রাজনৈতিক নেতা বসানো হবে? তাঁরা বলবেন, রবীন্দ্রনাথের জন্ম বোলপুরে। আদিবাসী নেতার গলায় মালা দিয়ে বলবেন এই তো বীরসা মুণ্ডার গলায় মালা দিলাম। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার দিন ভাটপাড়ায় উল্লাস হয়েছিল।''


বহিরাগতরা কি বাংলার নিয়ন্ত্রক হবে, প্রশ্ন ব্রাত্য বসুর। বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণ করে তিনি বলেন,''আপনারা বহিরাগত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করবেন, হাতজোড় করে থাকতে হবে, সেভাবে বাংলার রাজনীতি চলবে। আমাদের জাতির কি এতটা দুর্দশা এসে গেল? যাদের ঠাকুরদা-রা ১১২ বছর জোয়ার বা বাজরার জমিতে হিসেব করছেন, তখন গলায় দড়ি দিচ্ছেন ক্ষুদিরাম। রাইটার্স দখল করতে গিয়ে শহিদ হন বিনয়, বাদল, দীনেশ। তখন তাঁদের পিতামহরা চাষবাসের হিসেব করছেন। বাপ-ঠাকুরদা ব্রিটিশদের জোয়াল কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটাও ইউপি বা গুজরাটের লোক দেখাতে পারেন, যিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন? আন্দামানের সেলে সাভারকর ৫ বার মুচলেকা দিয়েছিলেন। উল্লাস কর দত্ত, বারীন ঘোষরা বছরের পর বছর পচেছেন জেলে। তাঁদের কারও নামে আন্দামানের সেল হয় না। নামকরণ হয় ৫ বার মুচলেকা দেওয়া বিনায়ক দামোদার সাভারকরের নামে। তাঁরা এসে বলছেন বাংলা চালাব। বাঙালিকে চালাব!'' 


মার্কিন মন্ত্রিসভায় বাঙালির অন্তর্ভূক্তির প্রসঙ্গ টেনে মোদী সরকারকে বিঁধেছেন ব্রাত্য বসু। বলেন, ''আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট  জো বাইডেন ক্যাবিনেটে বাঙালিকে রাখছেন। গত ১০ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন বিশ্ব বাংলা। বাংলার মুখ দিয়ে বিশ্বকে দেখা। বিশ্বকে দিয়ে বাংলাকে ভাবা। সংকীর্ণ চিন্তাভাবনা নয়। বরং আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে তুলে ধরা বাঙালিকে। বাঙালিকে তুলে ধরা। বাইডেনের ক্যাবিনেটে বাঙালি মন্ত্রী থাকার মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প। বাইডেন মনে করছেন, গবেষক অরুণ মজুমদার যোগ্য। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ৭ বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকার থাকা সত্ত্বেও বাঙালি মন্ত্রী নেই। গত ৭ বছর ধরে হাফ প্যান্ট পরা মন্ত্রীদের রেখে দিয়েছেন।''


তৃণমূলের 'বহিরাগত' তকমা নিয়ে গতকাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন,''আমাদের সর্বভারতীয় নেতারা বারবার আসবেন। নির্বাচনী প্রস্তুতি দেখে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবেন। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা বাংলার লোকেদের ভরসাই করেন না। ওরা তো বিহার থেকে বুদ্ধিজীবী এনে জেতার চেষ্টা করছে। পিকে কে? তাঁর সঙ্গে বাংলার কী সম্পর্ক? 


 


আরও পড়ুন- বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের ইঙ্গিত বাবুলের! কল্যাণের পাল্টা, ক্ষমতা থাকলে করে দেখাক