নিজস্ব প্রতিবেদন: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও নাগরিকপঞ্জি নিয়ে জোরকদমে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি ও  সঙ্ঘ পরিবার। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে দেশভাগ, দেশভাগ-পরবর্তী যন্ত্রণা ও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিরোধীদের 'হিন্দুবিরোধী' আখ্যা দিয়েছে তারা। সে কথা মাথায় রেখে রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে সিএএ ক্লাসে চিদম্বরম পইপই করে বললেন,''গেরুয়া শিবিরের ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না।'' কিন্তু দলের প্রবীণ নেতাই হিন্দুদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। দৃশ্যতই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন চিদম্বরম। সামাল দেন রাজ্যের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় নেতা গৌরব গগৈ। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দেশভাগের যন্ত্রণা ভোগ করেছে বাংলা। তার আগে দেখেছে জাতিসংঘর্ষও। এর পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ নিয়েও রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। এমন একটা স্পর্শকাতর রাজ্যে NRC ও CAA-র সমর্থন ও বিরোধিতার ফল কী হতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুরোটাই ধোঁয়াশা। বিজেপি প্রচার করছে, সিএএ ও এনআরসি-র বিরোধিতা করে আদতে বাঙালি হিন্দুদের আরও একবার ঘরবাড়ি ছাড়ার পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে বিরোধীরা। বাংলাদেশ থেকে মার খেয়ে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্বদানেও ওদের আপত্তি। বাংলার একটা বিরাট অংশের মানুষ ওপার বাংলার। ফলে বিরোধীদেরও ভেবেচিন্তে রণনীতি সাজাতে হচ্ছে। একবার 'হিন্দুবিরোধী' তকমা সেঁটে গেলে মেরুকরণের ভরা বাজারে ভরাডুবি নিশ্চিত। সেই রণনীতিই বাতলে দিতে কলকাতায় এসেছিলেন পি চিদম্বরম। কংগ্রেস নেতাদের ক্লাসও নিলেন। কিন্তু ওই ক্লাসে 'ছাত্রে'র প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে গলদঘর্ম হলেন খোদ 'মাস্টার মশাই'।                              
             
সূত্রের খবর, প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দেবপ্রসাদ রায় ওরফে মিঠু দা প্রশ্ন করেন, হিন্দুদের অবস্থা নিয়ে কী ভাবনা? কেন হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে? এর পাশাপাশি ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁর মতে,  বিষয়গুলি নিয়ে অস্বচ্ছতা কাটানো উচিত নেতৃত্বের। স্বাভাবিকভাবে বিব্রত বোধ করেন চিদম্বরম। বলেন,'' বর্তমান বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। বিজেপির ফাঁদে পা দেব না।'' চিদম্বরমের সুরে সুর মিলিয়ে গৌরব গগৈ বলেন,''আগে কী হয়েছে, সেটা প্রতিপাদ্য বিষয় নয়। বরং মানুষের কাছে বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে হবে।।         


গতকাল, শুক্রবার দিল্লিতে NPR নিয়ে বৈঠক এড়িয়ে নিজের এনআরসি বিরোধিতার অবস্থান আরও পোক্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে হাজির থেকেছে কেরল-সহ সমস্ত অবিজেপি রাজ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার তার প্রচারে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে তুলবেন। তা অনুমান করে চিদম্বরম বলেছেন,''বিরোধীরা এনপিআর বৈঠকে গিয়ে নিজেদের মত তুলে ধরেছেন। তা সরকারিভাবে নথিভূক্তও হয়েছে। কিন্তু মমতা যাননি। বিজেপিকে চটাতে চান না তিনি। মাঠে-ময়দানে চেঁচামেচি করার চেয়ে সরকারিভাবে নিজের বিরোধিতা নথিভূক্ত করার সুযোগ ছেড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।''


লক্ষ্যণীয়ভাবে এদিন কংগ্রেসের অফিসে যাননি লোকসভায় দলনেতা অধীর চৌধুরী, দীপা দাশমুন্সিরা।


আরও পড়ুন- একুশের আগে শাসকের কলজেয় আঘাত করতে শোভনের মান ভাঙানোর উদ্যোগ বিজেপির