প্রসূতিকে ফেরানোর শাস্তি, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে কর্তব্যরত চিকিতসকদের বিরুদ্ধে
এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ চক্রবর্তি বলেন, এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। শুনে আমি মর্মাহত
নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনার ‘ভয়’ দেখিয়ে প্রসূতিকে ফেরানোর তোলপাড় এনআরএস মোডিক্যাল কলেজ। হাসপাতাল ফেরারোর পর বাধ্য হয়ে ঘরেই সন্তানের জন্ম দেন ওই প্রসূতি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় কর্তব্যরত চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখার্জি।
আরও পড়ুন-লকডাউনের মধ্যেই হামলা জঙ্গিদের, সোপরে শহিদ ৩ আধাসেনা
এনিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, "এমন ঘটনার কথা শুনলাম। অভিযোগ পেয়েছি। আমি প্রসূতি বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। কারা আজকে সন্ধ্যায় দায়িত্বে ছিলেন তাদের নামের তালিকা চেয়েছি। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনভাবে কোন রোগীকে কোন প্রসূতি মাকে ফেরানো যায় না।"
কী হয়েছিল আসলে? ওই প্রসূতি জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা হাতজোড় করে দ্রুত ভর্তি করার অনুরোধ জানান জুনিয়র ডাক্তারদের। প্রথমে বলা হলো, এখানে ভর্তি হবে না। আপনারা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর ভর্তি তো দূরের কথা, গাইনি ইমারজেন্সিতে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের কেউ কেউ সাদা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন, "এখানে লিখে সই করে দিন আপনাদের রোগী এবং তার যে সন্তান জন্মাবে তাদের করোনা হলে হাসপাতাল দায়ি নয়।"
তিনি আরও জানান, এখানেই শেষ নয়। তাঁরা আরও বললেন, "বাচ্চা জন্মানোর পর ১৪ দিন কেউ আপনার আসতে পারবেন না। তার মুখও দেখতে পারবেন না। একইসঙ্গে আমরা এই রোগীকে আইসোলেশন রেখে দেবো। কারণ আপনারা হাওড়া থেকে এসেছেন। ওই আইসোলেশনে কিন্তু কোন চিকিৎসা হয় না, মাথায় রাখবেন। "এভাবেই চলতে থাকে হুমকি।’
এনিয়ে রোগী কল্য়াণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তুনু সেন বলেন, অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না। যার ওই সময় গাইনি বিভাগে দায়িত্ব ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে এদের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে দরবার করা হবে। প্রসঙ্গত, গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। সূত্রের খবর ওই সময় গাইনি বিভাগের দায়িত্ব থাকা ইউনিট ৬ কে তিন মাসের জন্য সাসপেন্ড করাও হতে পারে।
আরও পড়ুন-রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত ২৩, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২: মুখ্যসচিব
অন্যদিকে, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ চক্রবর্তি বলেন, এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। শুনে আমি মর্মাহত। তবে যেসব জুনিয়র ডাক্তাররা কাজ করছেন তারাই আমাদের ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা। এদের অনেক চাপের মধ্যে রয়েছেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও এদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এদের কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন।