`বাবা-মায়ের কেনা বা তৈরি করা বাড়িতে ছেলের কোনও আইনি অধিকার নেই!`
বুড়ো বাবা-মা মানেই যেন বোঝা। নিজের বাড়ি। নিজের ছাদ। তবুও থাকতে হবে ছেলের বৌমার দয়ায়। ঘরে ঘরে এটাই যেন দস্তুর। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমারও শেষ নেই। এবার আদালতই বলছে, ছেলের এসব মাতব্বরির দিন শেষ। বাড়ি বাবা-মায়ের। তাই সেখানে থাকতে হবে তাঁদের দয়াতেই। নিজের অধিকারের জন্য দরজায়-দরজায় কড়া নাড়াটাই এখন বৃদ্ধা ওয়েন্ডি মনকের রোজ নামচা। অবসরপ্রাপ্ত CTC -কর্মী ওয়েন্ডি দুঃস্বপ্নেও কখনও ভাবেননি এমন হবে তাঁর বার্ধক্য।
ওয়েব ডেস্ক : বুড়ো বাবা-মা মানেই যেন বোঝা। নিজের বাড়ি। নিজের ছাদ। তবুও থাকতে হবে ছেলের বৌমার দয়ায়। ঘরে ঘরে এটাই যেন দস্তুর। এ নিয়ে মামলা-মোকদ্দমারও শেষ নেই। এবার আদালতই বলছে, ছেলের এসব মাতব্বরির দিন শেষ। বাড়ি বাবা-মায়ের। তাই সেখানে থাকতে হবে তাঁদের দয়াতেই। নিজের অধিকারের জন্য দরজায়-দরজায় কড়া নাড়াটাই এখন বৃদ্ধা ওয়েন্ডি মনকের রোজ নামচা। অবসরপ্রাপ্ত CTC -কর্মী ওয়েন্ডি দুঃস্বপ্নেও কখনও ভাবেননি এমন হবে তাঁর বার্ধক্য।
ওয়েন্ডির কাহিনী
ইলিয়ট রোডে বাড়ি ছিল ওয়েন্ডি মনকের। ব্যবসায়ী স্বামী আগেই মারা যান। ৩ ছেলেও আলাদাই থাকত। সমস্যার শুরু কয়েক বছর আগে। ছোট ছেলের বিয়ের পর। ফ্ল্যাট কেনার জন্য ছোট ছেলের দাবি মেনে তাঁকে ১০ লাখ টাকা দেন ওয়েন্ডি। তবে নতুন ফ্ল্যাটের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ পায়নি ছোট ছেলে। ফের একবার মায়ের দ্বারস্থ হন তিনি। স্নেহের বশে ইলিয়ট রোডের বাড়ি বেচে ৩০ লাখ টাকা ছেলেকে দিয়ে দেন ওয়েন্ডি। ঠাঁই হয় ছেলের পিকনিক গার্ডেনের নতুন ফ্ল্যাটে। যে ফ্ল্যাট আদতে তাঁর টাকাতেই কেনা।
আরও পড়ুন- নোট বাতিল : আগামিকাল বেতনের টাকা তুলতে পারবেন তো?
তবে নতুন ফ্ল্যাটে ২ মাসের বেশি থাকা হয়নি ওয়েন্ডির। অথচ, নিজের খরচের জন্য মাসের শুরুতেই ছেলের হাতে ৮ হাজার টাকা তুলে দিতেন। কোথায় মাকে মাথায় তুলে রাখবে ছেলে, তা না উল্টে, ওয়েন্ডির কপালে জুটত শুধুই গঞ্জনা। শেষেতো খাবারও বন্ধ করে দেয় তারা। বাড়ি ছাড়া হতে হয় বৃদ্ধাকে।
এর পরেই আইনের দ্বারস্থ হন ওয়েন্ডি মনক। নিম্ন আদালত নির্দেশ দেয়, মাকে খোরপোশ দিতে হবে। সে খোরপোশের টাকাও ওয়েন্ডি হাতে পাননি কোনও দিন। আসলে ফ্ল্যাট কেনার টাকা পেয়ে যাওয়ার পর মায়ের দিকে আর ফিরে তাকায়নি ছেলে। এখন বস্তি এলাকায় কোনও মতে একটা ঘর ভাড়া করে থাকেন ওয়েন্ডি। তবে মায়ের মন ...ওয়েন্ডি বলছেন ছেলে একবার ক্ষমা চাইলেই তাঁর হবে। আর কিছু চাই না।
শুধু ওয়েন্ডি নয়...এমন অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন আমাদের চারপাশে। জীবনের শেষ লগ্নে নিজের বাড়িতেই যারা আশ্রিত। তবে আদালত বলছে ছেলের এই বেয়াদপি আর চলবে না। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের পাশে আদালত। দিল্লি হাইকোর্ট একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেছে, বাবা-মায়ের নিজেদের কেনা বা তৈরি করা বাড়িতে ছেলের কোনও আইনি অধিকার নেই। বাবা-মা যদি চান দয়া করে ছেলেকে বাড়িতে থাকতে দিতে পারেন। তা সে ছেলে বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত।
বাবা-মা বনাম ছেলে-বৌমার একটি মামলায় রায় দিতে গিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি প্রতিভা রানি বলেন, কতদিন ছেলেকে বাড়িতে থাকতে দেবেন সেটাও বাবা-মায়ের সিদ্ধান্ত। আদালত বলেছে, যতদিন সুসম্পর্ক রয়েছে ততদিন বাবা-মা তাঁদের বাড়িতে ছেলেকে থাকতে দিতে পারেন। তার মানে এই নয় যে সারা জীবন বাবা-মাকে ছেলের বোঝা বইতে হবে। দিল্লি হাইকোর্টের এই রায় গ্রাহ্য হবে দেশর অন্য হাইকোর্টগুলিতেও। গ্রাহ্য হবে দেশ দুড়ে নিম্ন আদালতগুলিতেও।