বঙ্গব্রিগেডের নিশানায় কারাট লবি, `দিল্লি থেকে রিমোর্ট কন্ট্রোলে রাজ্য কমিটি চালানো যাবে না`
জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মানুষকে অপমান করেছে পলিটব্যুরো। আলিমুদ্দিনে ঝাঁঝাল আক্রমণ মইনুল হাসানের। রবিবার বঙ্গ ব্রিগেডের বেনজির আক্রমণের মুখে পড়ল কারাট শিবির। পার্টি লাইন নিয়ে বিতর্ক কাটাতে তিরিশে অক্টোবর থেকে দোসরা নভেম্বর রাজ্য কমিটির প্লেনাম ডাকা হয়েছে। টানা জোট বিতর্কে ক্ষুব্ধ সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর সাফ কথা, অনন্তকাল এই বিতর্ক চলতে পারে না।
ব্যুরো: জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মানুষকে অপমান করেছে পলিটব্যুরো। আলিমুদ্দিনে ঝাঁঝাল আক্রমণ মইনুল হাসানের। রবিবার বঙ্গ ব্রিগেডের বেনজির আক্রমণের মুখে পড়ল কারাট শিবির। পার্টি লাইন নিয়ে বিতর্ক কাটাতে তিরিশে অক্টোবর থেকে দোসরা নভেম্বর রাজ্য কমিটির প্লেনাম ডাকা হয়েছে। টানা জোট বিতর্কে ক্ষুব্ধ সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর সাফ কথা, অনন্তকাল এই বিতর্ক চলতে পারে না।
শনিবার রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠকে একপ্রস্থ যুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। রবিবার রাজ্য কমিটিতে তারই অ্যাকশন রিপ্লে। বঙ্গব্রিগেডের নিশানায় কারাট লবি। রাজ্য কমিটির ৩০ জন বক্তা রবিবার বক্তব্য রাখেন, ২৭ জন নেতাই জোটের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন। দীপক সরকার, আনিসুর রহমান ও অমল হালদার ছিলেন জোটের বিপক্ষে।
জোটের সমর্থনে মইনুল হাসান, সোমনাথ ভট্টাচার্য ও শমীক লাহিড়ির বক্তব্য ছিল চাঁচাছোলা। দিল্লি থেকে রিমোর্ট কন্ট্রোলে রাজ্য কমিটি চালানো যাবে না। কেন্দ্রীয় নেতাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের নেতারা। বিভিন্ন নেতা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যা বলেছেন তার নির্যাস অতি আক্রমণাত্মক। তাঁরা বলেন, দিল্লির নেতারাই একসময় লবির জোরে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেননি। লবির জোরেই সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতাকে দল থেকে তাড়ানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দল যতদিন ক্ষমতায় ছিল ততদিন জাতীয় স্তরে প্রাসঙ্গিকতা ছিল। ৬২ জন সাংসদ নিয়েও জাতীয় রাজনীতিতে কেন দাগ কাটতে পারেনি সিপিএম?
গোটা দেশে পার্টির বিস্তার কেন হচ্ছে না তা কেন খতিয়ে দেখছেন না দিল্লির নেতারা? প্রথম UPA থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা এখনও দিল্লি দিতে পারেনি।
কংগ্রেস নির্ভরতা কমানোর পক্ষে সওয়াল করেন নেপালদেব ভট্টাচার্য। তবে জোটের প্রয়োজনীয়তাও উড়িয়ে দেননি তিনি। নেপালদেব ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনের পরে হঠাত্ করে জোট ভাঙার নির্দেশ দেওয়া যায় না। পার্টি লাইনে যদি ভুল থাকে বলে মনে হয়, তাহলে তো রাজ্য কমিটিতাই তুলে দেওয়া উচিত।
তাপস সিনহা বলেন, পলিটব্যুরো নিরোর মতো আলোচনা করেছে। জীবেশ সরকার বলেন, পলিটব্যুরোর নেতারা প্লেটোর মতো তাত্ত্বিকতায় মজে রয়েছে। শমীক লাহিড়ি বলেন, আকাশে থেকে রাজনীতি করে লাভ নেই। জোট করে ভুল হয়েছে বললে এখন মানুষ কী ভাববে?
কারাট লবিকে সরাসরি নিশানাও করেন কোনও নেতা। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সম্পাদক প্রকাশ্যেই ঝগড়ায় জড়িয়েছেন। কেরালায় অন্তর্দ্বন্দ্বের সময় কেন মুখ বুজে বসে ছিল পলিটব্যুরো?পশ্চিমবঙ্গে প্রাণ হাতে করে রাজনীতি করতে হয় , জোট নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মানুষকেই অপমান করেছেন পলিটব্যুরোর নেতারা। সবশেষে বক্তব্য রাখেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পার্টি জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিল, এই বাস্তব তথ্য মানতে হবে। আমরা জনপ্রিয় কর্মসূচি নিতে পারিনি। সাধারণ মানুষের উপযোগী স্লোগান আমাদের দিতে হবে। সন্ত্রাস রয়েছে। তার মধ্যেই কাজ করতে হবে। বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
ইয়েচুরি মনে করেন পার্টি লাইন নিয়ে এত জটিলতার কোনও প্রয়োজন নেই। বিতর্ক মেটাতে মধ্যপন্থার নীতিই নিয়েছেন তিনি। স্থির হয়েছে কংগ্রেসের সঙ্গে ভোটে নয়, আপাতত পথেই সমঝোতা গড়বে সিপিএম।