সর্বহারার দলের `আইফোন তত্ত্ব`
মুখে সর্বহারার একনায়কতন্ত্র আর জীবনচর্চায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিলাস-বাসন! সিপিএমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ একবার নয়, হাজার হাজারবার এনেছেন বিরধীরা। লোকমুখে তো একটা সময় এমনও শোনা গিয়েছে, আধ পোড়া বিঁড়ি খাওয়া সিপিএম এখন `ক্লাসিক` ছাড়া সিগারেটি মুখে তোলে না। কথায় কথায় মার্ক্সস, এঙ্গেলস, লেনিন, স্ট্যালিন বলা বেঙ্গল `কমরেড`রা সাতের দশকে যে ধরণের জীবন চর্চার নজির রেখে গিয়েছেন, তা `আদর্শ কমিউনিস্ট` হওয়ার পথ হলেও তা থেকে গিয়েছে কেবল নীতি কথাতেই। দিন বদলের গান গাওয়া `কমরেড`রা বাস্তবে নিজেদেরই বদলে ফেললেন। সাদা জামা আর কাঁধে ঝোলা, এটা এখনও লেফট ফ্যাশন ফ্যান্টাসির অঙ্গ! কিন্তু তার সঙ্গে কব্জিতে দামী ঘড়ি (অ্যাপেল ওয়াচ), পকেটে দামী কলম, নামী মোবাইল ফোন। সবকিছুই চলছিল `ব্যক্তি বড় না, দল বড়`র পার্টিতে। তবে গণ্ডগোল পাকিয়ে দিল ফেসবুকের ব্যবহার। সামনে এল নিয়ে সিপিএমের বিড়ম্বনা।
ওয়েব ডেস্ক: মুখে সর্বহারার একনায়কতন্ত্র আর জীবনচর্চায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিলাস-বাসন! সিপিএমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ একবার নয়, হাজার হাজারবার এনেছেন বিরধীরা। লোকমুখে তো একটা সময় এমনও শোনা গিয়েছে, আধ পোড়া বিঁড়ি খাওয়া সিপিএম এখন 'ক্লাসিক' ছাড়া সিগারেটি মুখে তোলে না। কথায় কথায় মার্ক্সস, এঙ্গেলস, লেনিন, স্ট্যালিন বলা বেঙ্গল 'কমরেড'রা সাতের দশকে যে ধরণের জীবন চর্চার নজির রেখে গিয়েছেন, তা 'আদর্শ কমিউনিস্ট' হওয়ার পথ হলেও তা থেকে গিয়েছে কেবল নীতি কথাতেই। দিন বদলের গান গাওয়া 'কমরেড'রা বাস্তবে নিজেদেরই বদলে ফেললেন। সাদা জামা আর কাঁধে ঝোলা, এটা এখনও লেফট ফ্যাশন ফ্যান্টাসির অঙ্গ! কিন্তু তার সঙ্গে কব্জিতে দামী ঘড়ি (অ্যাপেল ওয়াচ), পকেটে দামী কলম, নামী মোবাইল ফোন। সবকিছুই চলছিল 'ব্যক্তি বড় না, দল বড়'র পার্টিতে। তবে গণ্ডগোল পাকিয়ে দিল ফেসবুকের ব্যবহার। সামনে এল নিয়ে সিপিএমের বিড়ম্বনা।
সম্প্রতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুক (আক্যাউন্ট) বিদ্রুপে ক্ষত বিক্ষত! দামী কলম এবং দামী ঘড়ি ব্যবহার নিয়ে এক বাম সমর্থকের কটাক্ষের মুখে পড়েন তিনি। এরপরই ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বেনজির আচরণে শুরু হয় হৈ হট্টগোল। যিনি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর দামী ঘড়ি ও দামী কলম নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তার বিরুদ্ধে ঋতব্রত'র অসিষ্ণু আচরণে বিরক্ত দলেরই একাংশ।
সিপিএমে এমনিতে দুই ধরণের নেতার ভাগ আছে! এক ধরন তাত্ত্বিক নেতা, যারা এসি ঘরে রণকৌশলের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেন। অন্যদল যারা মাঠঘাটের নেতা। সংখ্যায় মাঠঘাটের নেতাদের কালো মাথার ভিড় বেশি হলেও প্রচারের আলোয় কিন্তু সর্বাদাই সাদা কলারের তাত্ত্বিক নেতারাই অগ্রাধিকার পেয়েছেন। তখনও সিপিএম ক্ষমতায়। চশমা তত্ত্ব নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএমের কলকাতা জেলার তাবড় নেতা মানব মুখার্জি। চশমার ফ্রেমের দাম এত যে, তার গোটা 'অডিট' করিয়ে চিরুনি তল্লাশি করতে বাধ্য হয়েছিল রাজ্য সিপিএম। সে সব পুরনো হলেও, সিপিএমের 'পেটি বুর্জোয়া' তত্ত্ব কিন্তু তাদের পথের কাঁটা হয়েই বিঁধেছে বহুবার।
উদাহরণ এক- সাংসদ তথা সিপিএমের তাবড় প্রাক্তন ছাত্রনেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাত্ত্বিক নেতাদের মধ্যে প্রথম সারিতেই আসবে তাঁর নাম। বাংলা, ইংরাজি, হিন্দিতে যেমন সাবলীল তেমনই সাবলীল ট্যাকনোজিতেও। যেখানে বিমান বসু, বুদ্ধবাবুরার মোবাইল ফোনেও হাতেখড়িও হল না, সেখানে ঋতব্রত বাবু একটা ব্ল্যাকবেরি, একটা আইফোন, একটা অ্যাপেল ট্যাবের মালিক। সঙ্গে দামী কলম পকেটে শোভা বাড়ায় তাঁর। হাতে এসেছে অ্যাপেল ওয়াচ। এখন প্রশ্ন, এসব ব্যবহারে কোনও আপত্তি কারোর নেই, তবে প্রশ্ন এই বিলাস বহুল জীবনের আর্থিক যোগান কোথা থেকে আসছে? রোজগারের সব টাকাই তো যায় সিপিআইএমে, তাহলে অ্যাপেলের ছড়াছড়ি কীভাবে হচ্ছে? এখানেই সিপিএমের মুখে এক্টাই তত্ত্ব যার পোশাকি নাম 'গিফট তত্ত্ব'। সব উপহার!
বিলাসবহুল অ্যাপেলে আরও যে সর্বহারার নেতারা অ্যাডিক্টেড!
সূর্যকান্ত মিশ্র(সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক, পলিটবুরো)। আগে ছিল না, তবে এখন 'গিফট তত্ত্বে' আইফোনের মালিক।
মহম্মদ সেলিম (সাংসদ, পলিটবুরো)। আইফোন, অ্যাপেল ট্যাবের মালিক।
রবীন দেব (রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী)। আইফোন, অ্যাপেল ট্যাব সবই আছে।
সুজন চক্রবর্তী (রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী, রাজ্যের বাম পরিষদীয় নেতা)। আইফোন, অ্যাপেল ট্যাব ব্যবহার করেন সুজন বাবু।
লিস্টে আছেন তাবড় নেতা গৌতম দেব। অ্যাপেল ট্যাবেই লেখাপড়া করেন তিনি। তবে এই লিস্টে আরও একজনকে না রাখলেই নয়। শাসকদলের সব নেতামন্ত্রীদের কাছেই একটা দুটো অ্যাপেল হাতের ময়লার মত মিলবে। প্রথম সারির নেতাদের হাতে ফোনের থেকেও বেশি শোভা পায় দামী ঘড়ি। এনাদের সবার ওপরে 'মমতা সত্য, তাহার ওপরে নাই'। থাকেন টালির বাড়িতে, পরেন হাওয়াই চটি (দাম প্রায়-২৫০০, কোম্পানি-ক্রক্স), হাতে অ্যাপেল ফোন, ছবি তোলেন অ্যাপেল ট্যাবে।