মৌমিতা চক্রবর্তী 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

৩৪ বছর রাজ্যের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিল সিপিএম। বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে থেকে মায়  স্বামী-স্ত্রীর বিবাদে নিষ্পত্তিতেও এগিয়ে যেতেন কমরেডরা। কিন্তু, ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ক্ষমতা হারানোর পর ধীরে ধীরে শুরু হয় সিপিএমের রক্তক্ষরণ। আর ২০১৪ সালের পর হাতছাড়া হতে শুরু করে বিরোধী পরিসরও। সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে ২০ আসনে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আলিমুদ্দিন। কিন্তু ২০ আসনের বুথে এজেন্ট পাচ্ছে না সিপিএম। ব্রিগেডের ভিড় ও একনিষ্ঠ কর্মীর মধ্যে তফাতটাই চিন্তার ভাঁজ ফেলছে নেতৃত্বের।  


রাজ্যপাট গেছে নয় নয় করে আট বছর হতে চলল। অনেক চেষ্টা করেও ঘাসফুল ভোট বাগানের একটি কুঁড়িও উপড়ে ফেলতে পারেনি  সিপিএম। প্রতিটি ভোটেই নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্লোগান তুলেছে আলিমুদ্দিন। কিন্তু ভোটের ফলে বারবারই হাতে থেকে যাচ্ছে পেনসিল।তৃণমূল তো ছিলই, গোঁদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। দলে দলে কর্মীরা বিজেপিমুখী হয়েছেন জেলায় জেলায়। এই আবহে গত মাসের ব্রিগেড, বা বলা ভাল ব্রিগেডের ভিড় দেখে অনেকটাই আশ্বস্ত করেছে নেতৃত্বকে। কিন্তু পোড় খাওয়া আলিমুদ্দিনের কর্তাদের দুশ্চিন্তা এতটুকুও কমেনি বলে সূত্রের খবর। উল্টে ফের হতাশার ছবি এখন থেকেই দেখতে পাচ্ছেন নেতৃত্ব। 



সূত্রের খবর, হাজার হাজার বুথে এবারও, পোলিং এজেন্টই দিতে পারবে না দল। একটা সময়ে বুথ থেকে রাজ্য- পোক্ত সংগঠনই ছিল সিপিএমের গর্ব। সেই গর্বই এবার দুমড়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে বুথে কীভাবে এজেন্ট থাকবে, তার চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে আলিমুদ্দিনের নেতাদের। কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রাজ্যে ৭৮ হাজারের বেশি বুথ। প্রতিটি বুথে অন্তত দুজন করে এজেন্ট বসালেও দেড় লক্ষ লোকের  দরকার। কিন্তু মরা বাজারে দেড় লক্ষ লোক আসবে কোথা থেকে। সূত্রের খবর, সমস্যার সমাধানে পাশের বুথ বা এলাকার কোনও বুথ থেকে এজেন্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতৃত্ব। আলিমুদ্দিনের আশঙ্কা, ৩০% বুথেও পোলিং এজেন্ট দিতে পারবে না দল।


আরও পড়ুন- গেরুয়া চোলা গায়ে নিলেই মিলবে কেন্দ্রীয় প্রহরী!


২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে অধিকাংশ বুথেই পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি সিপিএম। সেই ঘটনারই পুনারাবৃত্তি হতে চলেছে এবার। সিপিএম নেতা রবিন দেবের কথায়, ''সংশ্লিষ্ট বুথের লোক হলে চেনাজানা থাকে। এককালে মানুষের পাশে থাকতেন আমাদের বুথ কর্মীরা। এটাই আমাদের সম্পদ ছিল''।   


আরও পড়ুন- পাকিস্তানে ৬০ ঘণ্টায় কীভাবে নির্যাতন? হাসপাতালে ফাঁস করলেন অভিনন্দন


সভা-সমাবেশে লোক ভরানো ও ভোট করানোর মধ্যে ফারাক রয়েছে, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে। এরাজ্যে পোক্ত সংগঠন না হলে ম্যাত বের করা যায় না। সেটা অনুধাবন করে রাজ্যে ১০০ শতাংশ বুথে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। যদিও এব্যাপারে দিলীপ ঘোষদেরও তেমন অগ্রগতি নেই। কিন্তু বিজেপির অ্যাডভান্টেজ সাম্প্রতিক মেরুকরণ ও জাতীয়বাদের রাজনীতিতে বিজেপির দিকে হাওয়া পশ্চিমবঙ্গে। সেই হাওয়াতেই সিপিএম কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন গেরুয়া শিবির। দলীয় কর্মীদের ধরে রাখতে এখনও পর্যন্ত সফল হননি আলিমুদ্দিন। ফলে দিনে দিনে কমছে সংগঠনের বহর।