শতবর্ষেও `হাত-হাতুড়ি` নিয়ে লাইন ঠিক করে উঠতে পারল না সিপিএম
কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েই, বার বার পার্টি ভাগ। অথচ, পার্টির জন্মশতবর্ষে সেই কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই চলার কথা বলছে সিপিএম।
নিজস্ব প্রতিবেদন: স্বাধীনতা আন্দোলনে কংগ্রেসি রাজনীতির বিরোধিতা করেই পার্টির জন্ম। কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক কি হবে? এ প্রশ্নেই পার্টিভাগ। আর আজ সেই কমিউনিস্ট পার্টির জন্মশতবর্ষ পালনেই সিপিএমের মুখে হাত ধরার কথা। কিন্তু, তাও পুরোপুরি ঝেড়ে কাশা যাচ্ছে কই! শতবর্ষ পার করেও যে কাটানো যায়নি ধন্দ।
তাসখন্দে না কানপুরে? ১৯২০ না ১৯২৫? ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম-মুহূর্ত নিয়ে কমিউনিস্টদের মধ্যেই বিতর্ক আছে। সিপিআই না মানলেও সিপিএম মনে করে তাসখন্দেই ১৯২০ সালে পার্টির জন্ম। সেইমতো বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিনের উদ্যোগে নেতাজি ইন্ডোরে পালিত হল পার্টির জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠান। কিন্তু, একশো বছরেও কাটল না ধন্দ। জন্মলগ্নে কংগ্রেসি রাজনীতির বিরুদ্ধেই পার্টিনীতির অভিমুখ। গান্ধীজির অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে লেনিনকে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের চিঠি। কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েই, বার বার পার্টি ভাগ। অথচ, পার্টির জন্মশতবর্ষে সেই কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই চলার কথা বলছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, বৃহত্তর মঞ্চ চাই আমরা। যে আসবেন স্বাগত।
লোকসভা ভোটের আগেও, বামফ্রন্টের শরিকদের মুখে, কংগ্রেস সম্পর্কে ছুত্মার্গের কথা শোনা গিয়েছে। বিজেপির বিপুল জয়ের পর রাজ্যে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়ে আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের গলায় এখন হাত ধরার বার্তা। আলিমুদ্দিনের রাস্তায় হেঁটে সম্প্রতি বিধানভবনে গিয়ে চা-ও তো খেয়ে এসেছেন নেতারা।
কেন্দ্রে বিজেপি, রাজ্যে তৃণমূল। বাস্তব বুঝে আলিমুদ্দিন আগেই হাত ধরার কথা বলে দেয়। শুরুতে আপত্তি থাকলেও, শরিকরাও এখন সেই পথেই। কিন্তু, সিপিএম নিজে? অস্তিত্বের লড়াইয়ে কংগ্রেসকে চাই। কিন্তু, গত বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতার পরও তা বলতে হচ্ছে ঠারেঠোরে। রাজনৈতিক মহল বলছে, কী হবে হাত-হাতুড়ির সম্পর্ক? শত বছরেও ঠিক হল না পার্টি লাইন!
আরও পড়ুন- 'ওরে আমার কাঁচা' মন্ত্রে সিপিএমের রাজ্য সংগঠনে ব্যাপক রদবদল, সরলেন পক্ককেশীরা